শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

পুলিৎজার পেল এপি, নিউইয়র্ক টাইমস

রাজিউর রাহমান | প্রকাশিত: ৯ মে ২০২৩, ১৯:২৬

ছবি: সংগৃহীত

মূলকথা:

সাংবাদিকতার ‘নোবেল’ পেল এপি, নিউইউর্ক টাইমস

কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির একটি বোর্ড প্রতিবছর পুরস্কার ঘোষণা করে

ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ নিয়ে খবর প্রকাশ করে এবছর পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছে বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)। আর এই যুদ্ধ নিয়ে খবরাখবর তুলে ধরায় পুরস্কৃত করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসকেও। সোমবার (৮মে) পুলিৎজার পুরস্কার পাওয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম ঘোষণা করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পর্যায়ে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পুলিৎজার পুরস্কার সাংবাদিকতার ‘নোবেল’ হিসেবে খ্যাত। ১৯১৭ সাল থেকে এ পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। সাংবাদিকতা ছাড়াও সাহিত্য, সংগীত, নাটকে বিশেষ অবদানের জন্য এ পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির একটি বোর্ড প্রতিবছর পুরস্কার ঘোষণা করে।

পুলিৎজারে সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার হিসেবে ধরা হয় পাবলিক সার্ভিস (জনসেবা) অ্যাওয়ার্ডকে। এ বছর এই অ্যাওয়ার্ড নিজেদের দখলে রেখেছে এপি। এছাড়া ব্রেকিং নিউজ ফটোগ্রাফি বিভাগে পুরস্কারও পেয়েছে তারা। অপরদিকে ইন্টারন্যাশনাল রিপোর্টিং (আন্তর্জাতিক বিষয়ে প্রতিবেদন) বিভাগে সেরা হয়েছে নিউইয়র্ক টাইমস।

পাবলিক সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড পাওয়া এপির সাংবাদিকরা হলেন- মিসতিসলাভ চেরনভ, ইভজেনি মালোলেতকা, ভাসিলিসা স্তেপানেঙ্কো ও লরি হিনান্ট। গত বছর ইউক্রেনের মরিপোল শহরে রাশিয়ার হামলার সময় সেখানে অবস্থান করছিলেন তারা। হামলায় শহরটিতে বেসামরিক লোকজনের নিহত হওয়ার তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন এই চার সাংবাদিক।

যুক্তরাষ্ট্রে গর্ভপাত নিয়ে ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশ করায় এবার ন্যাশনাল রিপোর্টিং (জাতীয় বিষয়ে প্রতিবেদন) বিভাগে পুরস্কার পেয়েছেন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদক ক্যারোলিন কিচেনার। সংবাদমাধ্যমটির হয়ে ফিচার রাইটিং বিভাগে পুরস্কার পেয়েছেন এলি স্যাসলো। বর্তমানে তিনি নিউইয়র্ক টাইমসে কাজ করছেন।

লোকাল রিপোর্টিং (স্থানীয় বিষয়ে প্রতিবেদন) ও কমেন্টারি (মতামত)—দুটি বিভাগে পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছে আলাবামা অঙ্গরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এএল ডটকম। সংবাদমাধ্যম লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসও দুটি পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছে। একটি ব্রেকিং নিউজ বিভাগে, অপরটি ফিচার ফটোগ্রাফি বিভাগে। আর ইনভেস্টিগেটিভ রিপোর্টিং (অনুসন্ধানী প্রতিবেদন) বিভাগে পুরস্কারজয়ী হয়েছে সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।

এদিকে ইন্টারন্যাশনাল রিপোর্টিং বিভাগ ছাড়াও এবার ইলাস্ট্রেটেড রিপোর্টিং অ্যান্ড কমেন্টারি বিভাগে পুরস্কার পেয়েছে নিউইয়র্ক টাইমস। এ নিয়ে পুলিৎজারের ইতিহাসে মোট ১৩৭টি পুরস্কার পেল সংবাদমাধ্যমটি।

এ ছাড়া ‘আত্মজীবনীমূলক বই’ ক্যাটাগরিতে জি-ম্যান বইয়ের জন্য পুলিৎজার দেওয়া হয়েছে ব্রেভারলি গেগ। অন্যদিকে ননফিকশন ক্যাটাগরিতে ‘জর্জ ফ্লয়েড: ওয়ান ম্যানস লাইফ অ্যান্ড স্ট্রাগল ফর রেসিক্যাল জাস্টিস’ বইয়ের জন্য পুরস্কার জিতেছেন রবার্ট স্যামুয়েলস ও তোলিউস ওলোরোনিপা। 

নাটক ক্যাটাগরিতে সানাজ তোসির ‘ইংলিশ’ পুরস্কার জিতেছে। এ ছাড়া ইতিহাস ক্যাটাগরিতে কোয়ি ফ্রিডমের ‘ডমিনিউন: এ সাগা অব হোয়াইট রেসিসটেন্ট টু ফেডারেল পাওয়ার’ বইয়ের জন্য পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। 

এদিকে ফিকশন ক্যাটাগরিতে বারবারা কিংস্লোভার ‘ডেমন কপারহেড’ বইয়ের জন্য এবং হার্নান দিয়াজ ‘ট্রাস্ট’ বইয়ের জন্য পুলিৎজার পুরস্কার জিতেছেন। 

পুরস্কার ঘোষণার আগে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদক ইভান গের্শকোভিচের প্রসঙ্গে কথা বলেন পুলিৎজার বোর্ডের কো-চেয়ার নেইল ব্রাউন। গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ তুলে যুক্তরাষ্ট্রের এই সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করেছে রাশিয়া। নেইল ব্রাউন বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থার মতো পুলিৎজার পুরস্কার বোর্ডও অবিলম্বে ইভানের মুক্তি চাইছে। অনেকের মতো তিনিও নিজের কাজটিই করছিলেন।’

এরআগে, ১৯ শতাব্দীতে হাঙ্গেরীয় বংশোদ্ভূত জোসেফ পুলিৎজার মার্কিন সাংবাদিকতাকে ভিন্ন পর্যায়ে নিয়ে যান। ১৯১১ সালে মারা যাওয়ার আগে তার উইলে তিনি কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিভাগ চালুর জন্য অর্থ রেখে যান এবং এই পুরষ্কারের প্রবর্তন করেন।

শুরুতে সাংবাদিকতায় ৪, সাহিত্যে ৪, শিক্ষা খাতে ১ ও বৃত্তি হিসেবে ৫টি পুরস্কার দেওয়া হলেও বর্তমানে ১৫টি বিভাগে এ পুরষ্কার দেওয়া হয়। এর মধ্যে আছে গণমাধ্যম রিপোর্টিং, লেখালেখি ও ছবি তোলা। বই, নাটক ও সংগীতের জন্য আরও ৭ পুরস্কার দেওয়া হয়।

সাধারণত শীর্ষস্থানীয় মার্কিন গণমাধ্যমের জ্যেষ্ঠ সম্পাদক ও শিক্ষাবিদরা মনোনয়ন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত থাকেন এবং বিজয়ীদের নির্বাচন করেন।

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top