চলছে ভয়াবহ জ্বালানি সংকট

পাকিস্তানে রাত ৮টার মধ্যে মার্কেট বন্ধের ঘোষণা

রাজিউর রাহমান | প্রকাশিত: ৭ জুন ২০২৩, ২২:৪৮

ছবি: সংগৃহীত

ভয়াবহ জ্বালানি সংকট চলছে পাকিস্তানে। রাত ৮টার মধ্যে সকল মার্কেট ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান সরকার। দেশটিতে যে ভয়াবহ জ্বালানি সংকট চলছে, তা কিছুটা সামাল দিতেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

ডনের খবরে জানানো হয়েছে, জ্বালানি সংকটের সমাধান করতে আরও কিছু পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে পাক সরকার। এরমধ্যে আছে, আগামী বাজেটে জ্বালানি নীতিতে আমূল পরিবর্তন। এর উদ্দেশ্য হবে, বিদেশি জ্বালানির ওপর থেকে নির্ভরতা কমিয়ে আনা।

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ একাধিক বৈঠকে বসেন কর্মকর্তাদের সঙ্গে। এরপরই তিনি নতুন এই পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন।

ন্যাশনাল ইকোনমিক কাউন্সিলের সঙ্গে বৈঠকের পর পাকিস্তানের পরিকল্পনামন্ত্রী আহসান ইকবাল সাংবাদিকদের বলেন যে, আগামী ১লা জুলাই থেকে নতুন এই নিয়ম চালু হবে। তিনি বলেন, আজ জ্বালানি সংরক্ষণের জন্য বেশ কিছুর পদক্ষেপের সুপারিশ করা হয়েছে।

এরমধ্যে আছে, রাত ৮ টার মধ্যে দোকান এবং বাণিজ্যিক কেন্দ্রগুলি বন্ধ করা, এলইডি লাইট ব্যবহারে উৎসাহিত করা, গিজারগুলির বিদ্যুৎ চাহিদা কমিয়ে আনতে এর উন্নয়ন নিশ্চিত করা। এতে করে পাকিস্তান বছরে এক বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত সাশ্রয় করতে পারবে।

যদিও ব্যবসায়ীরা এমন পদক্ষেপের সমালোচনা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাদের দাবি, রাত ৮টা হচ্ছে তাদের ব্যবসার সেরা সময়। এই সময় যদি মার্কেট বন্ধ করে দেয়া হয় তাহলে তারা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

অল পাকিস্তান আঞ্জুমান-ই-তাজিরানের সভাপতি আজমল বালোচ এক বিবৃতিতে বলেছেন, চলতি মৌসুমে আমরা রাত ৮টার মধ্যে আমাদের দোকানপাট বন্ধ করব না। সরকার অতীতে এই ধরনের অনেক প্রচেষ্টা করেছে কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে।

তবে পাকিস্তান সরকার বলছে জ্বালানি সাশ্রয় করা ছাড়া এই সংকট সমাধানের আর কোনো উপায় নেই। সৌদি আরব তেলের উৎপাদন এক মিলিয়ন ব্যারেল কমিয়ে দিয়েছে। ফলে তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ১০০ ডলারে উন্নীত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি করেছে। তাই তেলের ওপরে এভাবে নির্ভর করতে থাকলে পাকিস্তানের অর্থনীতি ঝুঁকিতে থেকে যাবে।

২২ কোটি জনসংখ্যা অধ্যুষিত দেশটিকে কয়েক বছর ধরেই অর্থনীতি স্থিতিশীল রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ২০১৯ সালে তারা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের কাছ থেকে ৬০০ কোটি ডলার বেইলআউট পেয়েছিল; গত বছরের অগাস্টে তারা সংস্থাটির কাছ থেকে আরও ১১০ কোটি ডলার নিয়েছে।

দেশটির সরকার সরকার আইএফএফের কাছ থেকে বেইলআউটের আরও ১১০ কোটি ডলার ছাড় করাতে দরকষাকষি চালিয়ে যাচ্ছে।

গত বছরের ভয়াবহ বন্যাও পাতিস্তানের অর্থনীতিকে বড় ধরনের ধাক্কা দিয়েছে। প্রলম্বিত ওই বন্যায় দেশটির ক্ষয়ক্ষতি আনুমানিক ৪ হাজার কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে বলে অক্টোবরে বলেছিল বিশ্ব ব্যাংক।

 

 

 

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top