ইসরায়েলকে সতর্ক করলেন বাইডেন
গাজায় ইসরাইলের দখলদারিত্ব হবে বড় ভুল
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১৬ অক্টোবর ২০২৩, ১৫:০১
ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে শিগগিরই স্থল হামলা চালানো হবে- এমন খবরের প্রেক্ষিতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে সতর্ক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেন, গাজায় ইসরায়েলের দখলদারিত্ব হবে ‘বড় ভুল’। সিবিএস নিউজ প্রেগ্রাম, ৬০ মিনিটের স্কট পেলের সঙ্গে সাক্ষাতকারে এসব কথা বলেন তিনি।
গাজায় ‘সম্পূর্ণ অবরোধ’-এর বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বাইডেন বলেন, তিনি আত্মবিশ্বাসী যে ইসরায়েল যুদ্ধের নিয়মের মধ্যে থেকে কাজ করবে এবং গাজায় নিরপরাধদের জন্য ওষুধ, খাবার এবং পানির সরবরাহ থাকা উচিত। সাক্ষাৎকারটি সিবিএস নিউজ স্থানীয় সময় শুক্রবার নিয়েছিল এবং রবিবার তা প্রচারিত হয়েছিল।
এই মুহূর্তে তিনি গাজায় ইসরায়েলি দখলদারি সমর্থন করবেন কি না জানতে চাইলে বাইডেন বলেন, আমি মনে করি, এটি একটি বড় ভুল হবে। দেখুন, গাজায় যা ঘটেছে আমার দৃষ্টিতে তা হলো হামাসের চরম ভুল। যা ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না। এবং আমি মনে করি... ইসরায়েলের জন্য গাজা দখল করাটা ভুল হবে। গাজায় ইসরায়েলি দখলদারির বিরুদ্ধে এটি এখন পর্যন্ত বাইডেনের সবচেয়ে সর্বজনীন সতর্কবার্তা।
বাইডেন আরো বলেন, তিনি গাজায় একটি মানবিক করিডর চালু করার বিষয় সমর্থন করেন। যা মানুষকে অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ড থেকে বের হওয়ার সুযোগ করে দেবে, পাশাপাশি গাজায় খাদ্য, পানিসহ মানবিক সহায়তা বিতরণের সুযোগ মিলবে। তিনি বিশ্বাস করেন হামাসকে সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করতে হবে এবং একটি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ থাকা দরকার। একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র হওয়া দরকার।
এখন যুদ্ধবিরতি হওয়া উচিত কি না জানতে চাইলে বাইডেন হামাসের বিরুদ্ধে আরো পদক্ষেপ গ্রহণের প্রতি সমর্থন জানান। এছাড়া বাইডেন হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাতে ইরান ও হেজবুল্লাহ যেন যুক্ত না হয়- সে বিষয়ে সতর্ক করেছেন। সেই সঙ্গে হামাসের কাছে জিম্মি মার্কিন নাগরিকদের উদ্ধারের জন্য ‘সবকিছু’ করার কথা জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) জানিয়েছে, বাইডেন আগামী দিনগুলোতে ইসরায়েল সফরের কথা ভাবছেন। দেশটির প্রশাসনের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, তবে সফরের কিছুই চূড়ান্ত হয়নি। সম্ভাব্য সফর নিয়ে অভ্যন্তরীণ আলোচনা প্রকাশ্যে আনা যাবে না।
গত শনিবার (৭ অক্টোবর) ইসরায়েলে হাজারো রকেট ছোড়ার পাশাপাশি সীমান্ত পেরিয়ে হামলা চালায় গাজার স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এতে ১ হাজার ৪০০ ইরসায়েলি নিহত হন। প্রতিশোধ নিতে ওইদিন থেকে গাজায় বিমান হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েলি বাহিনী। ক্রমাগত বোমা হামলায় প্রায় প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে আড়াই হাজার ফিলিস্তিনি। ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে নিখোঁজ হাজারো মানুষ।
হামাস-ইসরাইলের সংঘাতের পর থেকেই ইসরাইলকে সমর্থন জানিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির সহায়তায় রোববার সেখানে দ্বিতীয় বিমানবাহী রণতরীও পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
এর আগে, সংঘাত শুরুর পরপরই গত সপ্তাহে মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড এবং এর সঙ্গে থাকা অন্য যুদ্ধজাহাজগুলোকে পূর্ব ভূমধ্যসাগরে পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র। এসব যুদ্ধজাহাজ এরই মধ্যে ওই অঞ্চলে অবস্থান করছে এবং এর সঙ্গে এবার নতুন করে আরেক মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস আইজেনহাওয়ার এবং এর অধিভুক্ত যুদ্ধজাহাজগুলো সেখানে যোগ দেবে।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।