জাতিসংঘে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বীরত্বগাথা তুলে ধরবেন ড. ইউনূস

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪:২৬

ছবি: সংগৃহীত

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনের মূল পর্ব শুরু হচ্ছে মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর)। এবারের প্রতিপাদ্য- টেকসই উন্নয়ন, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য মর্যাদাপূর্ণ ও শান্তিময় বিশ্ব গড়ে তোলা। এবারের অধিবেশনে টেকসই উন্নয়ন, দ্বন্দ্ব নিরসন ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহায়তা করার মতো বিষয়গুলো প্রাধান্য পাবে। এছাড়া অধিবেশনে গুরুত্ব পেতে পারে গাজা-মধ্যপ্রাচ্য ইস্যু। আলোচনা হতে পারে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়েও।

এবারের আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোতে নীতিগত পরিবর্তনের আভাস দেখছেন বিশ্লেষকরা। আলোচনার টেবিলে থাকবে জীবাশ্ম জ্বালানি ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয়।

যুক্তরাষ্ট্রের উইলসন সেন্টারের গ্লোবাল ইউরোপ প্রোগ্রাম পরিচালক রবিন কুইনভিল জানান, অধিবেশনে এবার অনেক জরুরি বিষয় রয়েছে, যার ওপর আলোচনা হতে পারে। যেমন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এটিই অধিবেশনের মুখ্য আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে উঠবে। বিশ্বনেতারা এই বিষয়ে এবার নীতিগত পরিবর্তন আনতে পারেন। যা মোড় ঘুড়িয়ে দিতে পারে।

জীবাশ্ম জ্বালানি ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বৈশ্বিক সংকট নিয়েও আলোচনা হতে পারে অধিবেশনে। এছাড়া অধিবেশনের মূল পর্বে ভাষণ দেবেন বাংলাদেশের অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শেষ হবে ২৮ সেপ্টেম্বর। সমকাল

এদিকে, অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে বক্তৃতা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। সেখানে তিনি দেশে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষাপট এবং ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের বীরত্বগাথা তুলে ধরে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর রাষ্ট্র মেরামতের জন্য অন্তর্র্বতী সরকার গৃহীত সংস্কার কার্যক্রম বিশ্ববাসীর সামনে উপস্থাপন করবেন।

ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেন। নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার প্রস্তাব দেয়া হলে তিনি তা গ্রহণ করেন। ৮ আগস্ট তিনি দায়িত্ব নেন। ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকারপ্রধান হিসেবে এবারই প্রথমবারের মতো বিদেশ সফরে যাচ্ছেন।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বাসসকে বলেন, ‘এবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রধান উপদেষ্টা যে বক্তব্য দেবেন, সেখানে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার ৫ আগস্টের অভ্যুত্থানের বীরত্বগাথা তুলে ধরা হবে। ছাত্ররা প্রাণের বিনিময়ে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে কীভাবে সফল অভ্যুত্থান ঘটিয়েছে এবং মানুষের মধ্যে নতুন স্বপ্নের বীজ বপন করেছে, প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে তার প্রতিফলন থাকবে।’

এছাড়া বাংলাদেশের দ্বিতীয় বিজয়ের নতুন যাত্রায় গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও সুশাসন এবং অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে অন্তর্র্বতী সরকার নির্বাচন ব্যবস্থাসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে যেসব সংস্কার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে ড. ইউনূসের বক্তব্যে সেসব তুলে ধরা হবে বলে জানান শফিকুল আলম।

শেখ হাসিনার একনায়কতান্ত্রিক শাসনের অবসানের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের দর্শন বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করবেন অধ্যাপক ইউনূস। নিজেদের গর্বিত ও মর্যাদাশীল দেশের জনগণ হিসেবে বিশ্ব পরিমণ্ডলে বাংলাদেশ কীভাবে নিজেদের তুলে ধরবে, সেটিই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জানাবেন প্রধান উপদেষ্টা।

শফিকুল আলম জানান, ভবিষ্যতের বাংলাদেশ নিয়ে দেশের ছাত্র-জনতার আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা উল্লেখ করে তিনি ভূরাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত হতে উদাত্তভাবে আহ্বান জানাবেন। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে বেশ কয়েকটি দেশের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সৌজন্য সাক্ষাতের কথা রয়েছে। এছাড়া তিনি আরো কিছু সাইডইভেন্টেও অংশ নেবেন। বণিক বার্তা



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top