মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১

টাটা গ্রুপের কর্ণধার রতন টাটা আর নেই

সুজন হাসান | প্রকাশিত: ১০ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৫৪

সংগ্রহীত

ভারতের শিল্পজগতের নক্ষত্র টাটা গ্রুপের কর্ণধার রতন টাটা মারা গেছেন। বুধবার (৯ অক্টোবর) রাতে মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।

দেশটির গণমাধ্যমগুলো বলছে, কয়েকদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন বর্ষীয়ান এই শিল্পপতি। গত সোমবার (৭ অক্টোবর) সকালে হঠাৎ খবর ছড়ায় রতন টাটা হাসপাতালে ভর্তি। কিন্তু এর কিছু পরে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে জানান, সেটা ভুল খবর। তিনি ঠিক আছেন। কিন্তু বুধবার আবার ভারতীয় একাধিক সংবাদমাধ্যম দাবি করে, রতন টাটা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে।

গত সোমবার (৭ অক্টোবর) সকালে হঠাৎ খবর ছড়ায় রতন টাটা হাসপাতালে ভর্তি। কিন্তু এর কিছু পরে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে জানান, সেটা ভুল খবর। তিনি ঠিক আছেন। কিন্তু বুধবার আবার ভারতীয় একাধিক সংবাদ মাধ্যম দাবি করে, রতন টাটা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে।

এর আগে জানা গিয়েছিল, হেলথ চেকআপের জন্য হাসপাতালে গিয়েছিলেন রতন টাটা। কিন্তু বুধবার বিকেলে ভারতীয় একাধিক সংবাদমাধ্যম দাবি করে, রতন টাটা শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। প্রাথমিকভাবে শোনা গিয়েছিল, হঠাৎ রক্তচাপ নেমে যাওয়ায় কারণে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রতন টাটার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন তিনি। এজন্য নিয়মিত চেকআপেও থাকতে হতো তাকে।

১৯৩৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর মুম্বাইয়ে জন্ম রতন টাটার। বাবা নভল টাটার জন্ম গুজরাটেরর সুরতে। রতন টাটা ১৯৯১ সালে শিল্পপ্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান হন এবং ২০১২ সাল পর্যন্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। ১০০ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের এই প্রতিষ্ঠানের ইস্পাত থেকে সফটওয়্যার পর্যন্ত নানা ধরনের ব্যবসা রয়েছে। ১০০ বছরের বেশি সময় আগে তার প্রপিতামহ এই শিল্পপ্রতিষ্ঠান শুরু করেছিলেন।

রতন টাটা ১৯৯৬ সালে টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি টাটা টেলিসার্ভিসেস প্রতিষ্ঠা করেন এবং ২০০৪ সালে তার নেতৃত্বে আইটি কোম্পানি টাটা কনসালট্যান্সি সার্ভিসেসকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। ২০০৪ সালে টাটা গ্রুপ আইকনিক ব্রিটিশ গাড়ির ব্র্যান্ড জাগুয়ার এবং ল্যান্ড রোভার অধিগ্রহণ করে। ২০০৯ সালে রতন টাটা মধ্যবিত্তের নাগালে বিশ্বের সবচেয়ে সস্তা গাড়ি তৈরির প্রতিশ্রুতি পূরণ করেন। মাত্র ১ লাখ রুপির টাটা ন্যানো বাজারে আনেন তিনি।

শেষের দিকে কোম্পানির দৈনন্দিন কার্যক্রম থেকে সরে এলেও টাটার দাতব্য ট্রাস্টের প্রধান ছিলেন। পরে সাইরাস মিস্ত্রি টাটা সন্সের চেয়ারম্যান হিসেবে রতন টাটার স্থলাভিষিক্ত হন। কিন্তু পরে কোম্পানির পরিচালনা তাকে বরখাস্ত করে। ২০২২ সালে তিনি গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান। এ নিয়ে টাটা গ্রুপের সঙ্গে সাইরাসের তিক্ততা অমীমাংসিতই রয়ে গেছে। 

পদত্যাগ করার পর টাটা সন্স, টাটা ইন্ডাস্ট্রিজ, টাটা মোটরস, টাটা স্টিল এবং টাটা কেমিক্যালসের চেয়ারম্যান ইমেরিটাস হন রতন টাটা। অবসর নেয়ার অনেক পরে রতন টাটা সোশ্যাল মিডিয়াতে জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে আবির্ভূত হন। ৩৬০ ওয়ান ওয়েলথ হুরুন ইন্ডিয়া রিচ লিস্ট ২০২৩ অনুযায়ী, এক্সে ১৩ মিলিয়নেরও বেশি ফলোয়ার এবং ইনস্টাগ্রামে ১০ মিলিয়নের বেশি অনুসারী নিয়ে ভারতে ‘সবচেয়ে বেশি অনুসরণ করা উদ্যোক্তা’ হিসেবে খ্যাতি পেয়েছেন রতন টাটা।

২০০০ সালে ‘পদ্মভূষণ’ সম্মান পান রতন টাটা। ২০০৮ সালে পান ‘পদ্ম বিভূষণ সম্মান’। মহারাষ্ট্র, আসাম সরকারও তাকে সম্মান প্রদান করে। ইউনিভার্সিটি অব কেমব্রিজ, লন্ডন স্কুল অব ইকনমিক্স, আইআইটি বম্বে, ইয়েল ইউনিভার্সিটি, রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ, রাজা তৃতীয় চার্লসের থেকেও বিশেষভাবে সম্মানিত হন।

রতন টাটার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্টে তিনি বলেন, ‘রতন টাটা একজন মহান ব্যক্তি ছিলেন। ভারতের বিভিন্ন সেক্টরে অবদানের জন্য তিনি অমর হয়ে থাকবেন। রতন টাটার মৃত্যুতে ভারতের শিল্প মহলেও গভীর শোক নেমে এসেছে।’




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top