ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতির পর যুক্তরাষ্ট্রে ফের চালু হলো টিকটক
রাজীব রায়হান | প্রকাশিত: ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:৫৪
বন্ধের একদিন পরেই ফের যুক্তরাষ্ট্রে চালু হয়েছে জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ টিকটক। সোমবার (২০ জানুয়ারি) বিবিসি ও বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। এর আগে গতকাল রোববার যুক্তরাষ্ট্রে আইনি বাধ্যবাধকতায় নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে বন্ধ হয় টিকটক। তবে একদিন পরেই দেশটিতে ১৭ কোটি ব্যবহারকারীর এই অ্যাপ চালু হয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অঙ্গীকার করেন যে সোমবার (২০ জানুয়ারি) ক্ষমতা গ্রহণের পরেই তিনি টিকটক পুনর্বহালে নির্বাহী আদেশে সই করবেন। এমনটি বলার পরেই যুক্তরাষ্ট্রে আজ থেকে টিকটক চালু হয়েছে।
রয়টার্স বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক চালু হওয়ার পর ব্যবহারকারীরা একটি বার্তা দেখতে পাচ্ছেন। সেখানে লেখা রয়েছে, ধন্যবাদ ট্রাম্প। এ ছাড়া এক বিবৃতিতে টিকটক যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানিয়েছে।
এদিকে ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে আজ উপস্থিত থাকবেন টিকটকের প্রধান নির্বাহী শৌ চিউ। যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের ১৭ কোটিরও বেশি গ্রাহক রয়েছে। কিন্তু অ্যাপটির চীন-ভিত্তিক মালিকানা প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছেন বাইডেনের আইনপ্রণেতারা। মার্কিন প্রশাসনের আশঙ্কা, টিকটকের মাধ্যমে চীন সরকার মার্কিন জনগণের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি করতে পারে।
জো বাইডেনের করা আইনটিতে বলা হয়, চীনা মূল কোম্পানি বাইটড্যান্স টিকটকে তাদের অংশীদারত্ব ছয় মাসের মধ্যে কোনো আমেরিকান কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দেবে, নয়ত যুক্তরাষ্ট্রে এই অ্যাপ নিষিদ্ধ করা হবে।
টিকটক ওই আইন আটকাতে ৭ মে আদালতে যায়, তাদের আবেদনে বলা হয়, এ ধরনের আইন বাকস্বাধীনতার অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনীর সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
এরপর ২ অগাস্ট যুক্তরাষ্ট্র সরকার টিকটকের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে। সেখানে অভিযোগ করা হয়, চীনা এই সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানি অবৈধভাবে শিশুদের তথ্য সংগ্রহ করছে এবং অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলার চেষ্টা করলে তাতে সাড়া দিচ্ছে না।
৬ ডিসেম্বর ফেডারেল আপিল আদালত টিকটকের মামলা খারিজ করে দেয়। ফলে ২০২৫ সালের ১৯ জানুয়ারির মধ্যে বাইটড্যান্সের শেয়ার বিক্রি না করলে টিকটক বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি আরো জোরালো হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ২৭ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টকে তার শপথ না হওয়া পর্যন্ত টিকটক নিষিদ্ধের আইনটি পেছানোর অনুরোধ করেন। তার আইনজীবী বলেন, প্রেসিডেন্ট ‘রাজনৈতিক উপায়ে’ এ সমস্যা সমাধানের একটি সুযোগ চান।
এর মধ্যে নিষেধাজ্ঞা এড়াতে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে টিকটক। টিকটক এবং কন্টেন্ট নির্মাতাদের আইনজীবীরা শুনানিতে বলেন, টিকটকের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হলে যুক্তরাষ্ট্রে এ প্ল্যাটফর্মের ১৭ কোটির বেশি ব্যবহারকারীর বাকস্বাধীনতা লঙ্ঘিত হবে।
কিন্তু শুক্রবার দেওয়া রায়ে সুপ্রিম কোর্ট বাইডেনের করা আইনকে সমর্থন দিলে যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক বন্ধ হয়ে যাওয়া অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যায়। বিষয়টি সমাধানের পথ খুঁজতে ট্রাম্পের বক্তব্যের পর তাকে ধন্যবাদ জানান টিকটকের প্রধান নির্বাহী শো জি চিউ। সোমবার ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে তিনি থাকবেন বলেও আশা করা হচ্ছে।
বিষয়: টিকটক চালু যুক্তরাষ্ট্র
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।