গাজা দখল করে সেখানকার মালিক হবে যুক্তরাষ্ট্র: ট্রাম্প

Nasir Uddin | প্রকাশিত: ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১৫:৩৯

ছবি: এএফপি

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ড দখল করার ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র গাজা উপত্যকা দখল করবে এবং সেখানকার মালিক হবে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই ঘোষণা দেন। প্রয়োজনে গাজা উপত্যকায় মার্কিন সেনা পাঠানোর কথাও বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্ট।

রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র গাজা উপত্যকা দখল করবে এবং সেখানকার মালিকানা নেবে “একই লোক” গাজার পুনর্নির্মাণ এবং জমি দখলের দায়িত্বে থাকা উচিত নয়।

পৃথক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা আনাদোলু বলছে, গাজার বাইরে ফিলিস্তিনিদের স্থায়ী পুনর্বাসনের ইঙ্গিত দেওয়ার পরপরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট মঙ্গলবার জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র গাজা উপত্যকা দখল করবে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রকে তিনি এ ভূখণ্ডের ‘দীর্ঘমেয়াদী মালিক’ হিসেবে দেখেন।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র গাজা উপত্যকা দখল করবে এবং আমরা এটি নিয়ে কাজও করবো।

ট্রাম্প বলেন, আমরা গাজার মালিক হবো এবং সেখানকার সমস্ত বিপজ্জনক অবিস্ফোরিত বোমা এবং অন্যান্য অস্ত্র নির্মূল করব, ভূখণ্ডটি সমতল করব এবং ধ্বংস হওয়া বিল্ডিংগুলো থেকেও আমরা মুক্তি পাবো, এগুলোকে সমতল করব এবং সেখানে এমন অর্থনৈতিক উন্নয়ন করবো, যা ওই এলাকার মানুষের জন্য প্রচুর চাকরি এবং আবাসন সৃষ্টি করবে।

যুক্তরাষ্ট্র গাজা উপত্যকায় সেনা পাঠাবে কি না জানতে চাইলে তিনি জবাব দেন, যদি প্রয়োজন হয়, আমরা তা করব।

তিনি বলেন, আমরা সেই অংশটি দখল করতে যাচ্ছি। আমরা এটির উন্নয়ন করতে যাচ্ছি, হাজার হাজার কর্মসংস্থান তৈরি করতে যাচ্ছি, এবং এটি এমন কিছু হবে যা সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য খুব গর্বিত হতে পারে।

ট্রাম্প আরও বলেছেন, তিনি গাজা উপত্যকায় “দীর্ঘমেয়াদী মালিক” হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রকে দেখেন। মার্কিন রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্ট বলেন, আমি অনেক মাস ধরে এটি খুব ঘনিষ্ঠভাবে অধ্যয়ন করেছি এবং আমি একে প্রতিটি ভিন্ন কোণ থেকে ভেবে দেখেছি। এটি খুব, খুব বিপজ্জনক জায়গা এবং এটি কেবল আরও খারাপ হতে চলেছে।

আমি মনে করি, এই ধারণাটি অসাধারণ হয়েছে এবং আমি নেতৃত্বের সর্বোচ্চ স্তর থেকেই এই কথা বলছি এবং যদি যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা ও শান্তি আনতে সাহায্য করতে পারে, আমরা তা করব।

এর অর্থ তিনি ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানকে সমর্থন করেন না কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, এর অর্থ দুই-রাষ্ট্র বা এক-রাষ্ট্র বা অন্য কোনো রাষ্ট্র সম্পর্কে কিছু নয়। এর মানে হল আমরা চাই।

ফিলিস্তিনিরা চলে গেলে গাজায় কারা বাস করবে এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প জবাব দেন, বিশ্বের মানুষ। আমি মনে করি আপনি এটিকে একটি আন্তর্জাতিক, অবিশ্বাস্য জায়গায় পরিণত করবেন। আমি মনে করি গাজা স্ট্রিপের সম্ভাবনা অবিশ্বাস্য।

আমি মনে করি সমগ্র বিশ্ব, সারা বিশ্বের প্রতিনিধিরা সেখানে থাকবেন এবং তারা সেখানে বাস করবেন….ফিলিস্তিনিরা সেখানে বাস করবে। অনেক মানুষ সেখানে বাস করবে।

ট্রাম্প আরও বলেন, গাজা উপত্যকা ‘রিভেরা অব দ্য মিডল ইস্ট’ হয়ে উঠবে। তিনি বলেন, “আমাদের কাছে এমন কিছু করার সুযোগ রয়েছে যা অসাধারণ হতে পারে।

অন্যদিকে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু মার্কিন প্রেসিডেন্টকে উদ্দেশ করে বলেন, আমরা যেমনটা আলোচনা করেছি, মিস্টার প্রেসিডেন্ট, আমাদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে এবং আমাদের অঞ্চলে শান্তি আনতে আমাদের কাজ শেষ করতে হবে। ইসরায়েলকে নিশ্চিত করতে হবে যে, গাজা আর কখনও ইসরায়েলের জন্য হুমকি হয়ে উঠবে না।




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top