যুদ্ধবিরতির মধ্যেই ৩ বিলিয়ন ডলারের মার্কিন অস্ত্র পাচ্ছে ইসরায়েল

Nasir Uddin | প্রকাশিত: ১ মার্চ ২০২৫, ১০:৫৭

ছবি: এএফপি

দীর্ঘ ১৫ মাস যুদ্ধের পর গাজায় ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চলছে। চলমান যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে প্রতিবেশী দেশ মিশরে আলোচনা শুরু হয়েছে। এর মধ্যেই ইসরায়েলের কাছে প্রায় তিন বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। এসব সরঞ্জামের মধ্যে আছে বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ, বুলডোজার এবং অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম। ইসরায়েল অতীতে ঘনবসতিপূর্ণ গাজায় ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে এসব অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বুলডোজার ব্যবহার করেছে।

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও গতকাল শুক্রবার এই অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা নিরাপত্তা সহযোগিতা সংস্থা জানিয়েছে, ইসরায়েলের কাছে ২ দশমিক শূন্য ৪ বিলিয়ন ডলারের বোমার খোল ও ওয়ারহেড, ৬৭৫ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলারের অন্যান্য বোমার খোল ও নির্দেশনা কিট এবং ২৯৫ মিলিয়ন ডলারের বুলডোজার ও সংশ্লিষ্ট সরঞ্জাম সরবরাহ করা হবে।

প্রতিরক্ষা নিরাপত্তা সহযোগিতা সংস্থা আরও জানিয়েছে, রুবিও জরুরি পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে ইসরায়েলকে এই সামরিক সরঞ্জাম দ্রুত সরবরাহ করা প্রয়োজন। এ কারণে কংগ্রেসের অনুমোদনের যে সাধারণত প্রয়োজন হয়, তা শিথিল করা হয়েছে।

সংস্থাটি বলেছে, ‘যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের নিরাপত্তার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং ইসরায়েলকে একটি শক্তিশালী ও প্রস্তুত আত্মরক্ষা সক্ষমতা বজায় রাখতে সহায়তা করা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মতে, তিনটি পৃথক বিক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য কংগ্রেসে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে একটি ২.০৪ বিলিয়ন ডলারের এমকে ৮৪, বিএলইউ-১১৭ ভারি বোমা এবং ৪ হাজার আই-২০০০ পেনিট্রেটর ওয়ারহেড। এগুলো আগামী বছর সরবরাহ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

দ্বিতীয়টি ৬৭৫.৭ মিলিয়ন ডলারে ২০১ এমকে ৮৩,১০০০ পাউন্ড বোমা, ৪,৭৯৯ ব্লু ১১০এ/বি ১,০০০ পাউন্ড বোমা এবং ৫ হাজার জেডিএএম নির্দেশিকা কিট। এটি ২০২৮ সালে দেওয়া হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

তৃতীয়টির আনুমানিক মূল্য ২৯৫ মিলিয়ন ডলার। এরমধ্যে ডি৯ ক্যাটারপিলার বুলডোজার এবং সংশ্লিষ্ট সরঞ্জাম। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী যে বুলডোজার ব্যবহার করে, তার সরবরাহ ২০২৭ সালে শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এই অস্ত্র বিক্রির সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করে বলছে, এটি মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত আরও তীব্র করবে এবং বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা বাড়াবে। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের কিছু সদস্য এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশও এই অস্ত্র বিক্রির বিরোধিতা করছে।

মোট কথা, যুক্তরাষ্ট্রের এই অস্ত্র বিক্রি ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে এবং মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতি ও যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top