যেকোনো উপায়ে গ্রিনল্যান্ড 'দখল' করবে যুক্তরাষ্ট্র: ট্রাম্প
Nasir Uddin | প্রকাশিত: ৫ মার্চ ২০২৫, ১৪:২৯

যেকোনও উপায়ে গ্রিনল্যান্ড দখলে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৪ মার্চ) মার্কিন কংগ্রেসের একটি যৌথ অধিবেশনে তিনি এ ঘোষণা দেন। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলু।
কংগ্রেসে যৌথ অধিবেশনের ওই ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা, এমনকি আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য আমাদের গ্রিনল্যান্ড প্রয়োজন। তাই আমরা এটি দখলের জন্য জড়িত সকলের সঙ্গে কাজ করছি। বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য আমাদের এটি সত্যিই প্রয়োজন। আমি মনে করি, আমরা এটি কোনও না কোনোভাবে পেতে যাচ্ছি। আমরা এটি অর্জন করতে যাচ্ছি।
এ সময় ট্রাম্প গ্রিনল্যান্ডের জনগণের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, আমরা আপনাদের ভবিষ্যত নির্ধারণের অধিকারকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করি। আপনারা যদি চান, আমরা আপনাকে যুক্তরাষ্ট্রে স্বাগত জানাই। আমরা আপনাদের ধনী বানিয়ে দিব।
উল্লেখ্য, ১৯৭৯ সাল থেকে ডেনমার্কের একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গ্রিনল্যান্ড। আর্কটিক এবং আটলান্টিক মহাসাগরের মধ্যে অবস্থিত বিশ্বের বৃহত্তম এ দ্বীপটি খনিজ সম্পদে ভরপুর এবং কৌশলগতভাবে আর্কটিকের মধ্যে অবস্থিত। গ্রিনল্যান্ডের খনিজ সম্পদের বেশির ভাগই অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এই দ্বীপের প্রতি বিভিন্ন দেশের আগ্রহের অন্যতম কারণ হল এখানকার খনিজ সম্পদ।
মাইনিং কোম্পানি আমারক মিনারেলস-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এলদুর ওলাফসন জানিয়েছেন, আগামী কয়েক দশকে উন্নত দেশগুলোতে যে পরিমাণ খনিজ সম্পদের প্রয়োজন হবে, তা একাই জোগান দিতে পারবে এই দ্বীপ। এখানে রয়েছে অনেক উঁচু উঁচু পাহাড়। অনেকগুলোই দুর্গম। পাহাড়গুলোতে প্রচুর পরিমাণে স্বর্ণ সঞ্চিত রয়েছে। এছাড়া তামা, নিকেল এবং অন্য ধাতুর আকরিকও রয়েছে। বিভিন্ন সংস্থা সেখানে স্বর্ণ এবং অন্য বিরল মূল্যবান ধাতুর খোঁজ চালাচ্ছে।
তবে এই দ্বীপের অধিকাংশ অঞ্চলেই খনিজ সম্পদের খোঁজ এখনও শুরু হয়নি। আধা স্বায়ত্বশাসিত এই দ্বীপটি ডেনমার্কের অংশ হলেও খনিজ এবং প্রাকৃতিক সম্পদগুলোর দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন গ্রিনল্যান্ড কর্তৃপক্ষই।
বিরল খনিজ ধাতুর সম্ভারের দিক থেকে এই দ্বীপটি বিশ্বে অষ্টম স্থানে রয়েছে। মোবাইল, ব্যাটারি, বৈদ্যুতিক মোটর তৈরির কাজে এগুলো ব্যবহার হয়। লিথিয়াম, কোবাল্ট প্রচুর পরিমাণে মজুত রয়েছে এখানে। এছাড়া খনিজ তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের সম্ভারও রয়েছে। তবে নতুন করে কোনও খনন বর্তমানে নিষিদ্ধ রয়েছে গ্রিনল্যান্ডে। দ্বীপ সংলগ্ন গভীর সমুদ্রেও খনন নিষিদ্ধ। গোটা গ্রিনল্যান্ডে বর্তমানে মাত্র দু’টি সক্রিয় খনি রয়েছে।
গ্রিনল্যান্ডে আপাতত একশ’টি সংস্থাকে খনিজ সম্পদ খোঁজার ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। বিদেশি সংস্থাগুলোর মধ্যে বেশির ভাগই ব্রিটেন, কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়ার। আমেরিকার রয়েছে মাত্র একটি সংস্থা। সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদন অনুসারে, এক খনি সংস্থাকে আমেরিকা অনুরোধ করেছে তাদের উত্তোলন করা ধাতু চীনের কাছে বিক্রি না-করার জন্য।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।