পবিত্র হজ আজ, ‘লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখর আরাফাত ময়দান
Nasir Uddin | প্রকাশিত: ৫ জুন ২০২৫, ১১:১৪

পবিত্র হজ পালিত হবে আজ। লাখো কণ্ঠে আরাফাতের ময়দানে আজ ধ্বনিত হবে ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা-শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক।’ অর্থাত্ ‘আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই, সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার।’
এ বছর হিজরি ১৪৪৬ সনের হজ পালিত হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করবেন সারা বিশ্ব থেকে জড়ো হওয়া লাখো মুসলমান। হাদিসের ভাষ্য মতে, আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করাই হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা। হাজিরা আজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফায় অবস্থান করবেন। সন্ধ্যায় রওয়ানা হবেন মুজদালিফার উদ্দেশ্যে। সেখানে রাত যাপন করবেন এবং সেখান থেকে শয়তানকে পাথর মারার জন্য পাথর সংগ্রহ করবেন।
গতকাল বুধবার মিনায় অবস্থান করেন হজযাত্রীরা। সেলাইবিহীন দুই টুকরা সাদা কাপড় পরে হজের নিয়ত করে তাঁরা মক্কা থেকে মিনায় আসেন। মিনায় নিজ নিজ তাঁবুর মধ্যে নামাজ আদায়সহ অন্যান্য ইবাদত করেছেন। আজ ফজরের নামাজ পড়েই তাঁরা চলে আসেন আরাফাতের ময়দানে।
লাখো কণ্ঠে আরাফাতের ময়দানে ধ্বনিত হচ্ছে ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক। ’ অর্থাৎ আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই, সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার।
হজযাত্রীরা আরাফার ময়দানে মসজিদে নামিরা থেকে প্রদত্ত হজের খুতবা শুনবেন। সেখানে তারা জোহর ও আসর একসঙ্গে পড়বেন। এরপর সূর্যাস্ত পর্যন্ত দোয়া-মোনাজাতে মগ্ন থাকবেন। সূর্যাস্তের পর সবাই আরাফাত থেকে ৯ কিলোমিটার দূরত্বে মুজদালিফার উদ্দেশে রওনা দেবেন। সেখানে একসঙ্গে মাগরিব ও এশার নামাজ পড়ে রাত্রিযাপন করবেন। শয়তানকে পাথর মারার জন্য মুজদালিফা থেকে তারা পাথর সংগ্রহ করবেন।
পরদিন রোববার (১০ জিলহজ) মিনায় জামারায় (জামারা হল হজের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ—এটি মিনায় অবস্থিত তিনটি নির্দিষ্ট পাথরের স্তম্ভ, যেগুলোকে প্রতীক হিসেবে ধরা হয় শয়তানের। হজের সময় হাজিরা এ তিনটি জামারায় ছোট ছোট পাথর নিক্ষেপ করেন, যা শয়তানকে প্রতীকীভাবে প্রত্যাখ্যান করার অংশ হিসেবে পালন করা হয়।
এরপর কোরবানি করে মাথা ন্যাড়া করবেন হাজিরা। তখন ইহরামের কাপড় বদলে স্বাভাবিক পোশাক পরে মিনা থেকে মক্কায় গিয়ে পবিত্র কাবা শরিফ সাতবার তাওয়াফ করবেন। কাবার সামনের দুই পাহাড় সাফা ও মারওয়ায় সাঈ (সাতবার দৌড়ানো) করবেন। সেখান থেকে অনেকে আবার মিনার তাঁবুতে ফিরে যাবেন, অনেকে মক্কার বিভিন্ন হোটেলে থাকবেন। তবে যেখানেই হাজিরা থাকুন না কেন সেখান থেকে তারা দুই দিন বা তিন দিনের (১১ থেকে ১২ বা ১৩ জিলহজ) মধ্যে পর্যায়ক্রমে বাকি দুই শয়তানকে (মধ্যম ও ছোট) সাতটি করে পাথর নিক্ষেপ করবেন। এরপর মক্কায় বিদায়ি তাওয়াফ করে হজের সব কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন।
সৌদি কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত প্রায় ১৫ লাখ হজযাত্রী বিদেশ থেকে হজ পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। পবিত্র হজ মহান আল্লাহর একটি বিশেষ বিধান। হজ ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি। আর্থিক ও শারীরিকভাবে সামর্থ্যবান সব মুসলমান পুরুষ ও নারীর ওপর হজ ফরজ।
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।