প্রতিরোধের ক্ষমতা ফুরিয়ে আসছে ইসরায়েলের

Nasir Uddin | প্রকাশিত: ১৮ জুন ২০২৫, ১৬:১৫

ফাইল ছবি

ইসরায়েলের আকাশে গত কয়েক রাত ধরেই একই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি দেখা যাচ্ছে। ইরানের এক ঝাঁক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে আসছে। আর ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সেগুলো ঠেকাতে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ছে। ইরানের বেশির ভাগ ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকানো গেলেও সবসময় পারা যাচ্ছে না।

তিন-স্তর বিশিষ্ট আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করে ইসরায়েল। তবে ইরানের সাম্প্রতিক হামলা এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সবচেয়ে উন্নত স্তরগুলোকেও কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। কিন্তু এভাবে আর কতদিন ইসরায়েল সুরক্ষিত থাকতে পারবে তা নিয়ে দেখা দিয়েছে প্রশ্ন। কারণ, ইরানের টানা হামলা ঠেকাতে গিয়ে ফুরিয়ে আসছে তাদের অ্যারো মিসাইলের মজুত।

এক মার্কিন কর্মকর্তার বরাতে মিডল ইস্ট আই (এমইই) জানিয়েছে, ইসরায়েলকে পুনরায় সরবরাহে যুক্তরাষ্ট্র কাজ করলেও এসব অস্ত্রের মজুদ ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কিছু অংশে আশঙ্কা রয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ইরানে সরাসরি হামলা চালালে, তার পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের ওপর ইরান আরও বড় হামলা চালাতে পারে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বব্যাপী মজুদ থাকা ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী অস্ত্র 'ভয়ানক মাত্রায়' কমে যেতে পারে বলে ওই কর্মকর্তা মন্তব্য করেন।

বুধবার (১৮ জুন) ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা ও রয়টার্স।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানায়, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিহতের কাজে ব্যবহৃত অ্যারো মিসাইলের মজুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে, ইরান থেকে ধেয়ে আসা দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকানোর সক্ষমতাও কমে আসছে ইসরায়েলের।

অবশ্য নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র এ সম্পর্কে বেশ কয়েক মাস আগে থেকেই অবগত। সে অনুযায়ী ওয়াশিংটন ইসরায়েলি স্থল, নৌ ও বিমানবাহিনীর প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বেশ কয়েকবার বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে।

তাছাড়া, ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেবল অ্যারো সিস্টেমের ওপরই নির্ভরশীল নয়। আয়রন ডোম এবং ডেভিডস স্লিং নামে আরও দুটি শক্তিশালী স্তর রয়েছে এ ব্যবস্থায়। তবে, ছয়দিন ধরে ইরানের বিশাল ক্ষেপণাস্ত্রের বহর ঠেকাতে গিয়ে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ক্ষয় হয়েছে এ দুই স্তরেরও।

ট্রাম্প প্রশাসনের সাবেক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা ড্যান ক্যালডওয়েল এক্স-এ লিখেছেন, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধে ব্যবহৃত ইন্টারসেপ্টরগুলো অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং বড় পরিমাণে উৎপাদন করা কঠিন।

তিনি আরও বলেন, ধরে নিচ্ছি, ইসরায়েলের কাছে অ্যারো ও ডেভিড’স স্লিংয়ের জন্য স্টানার ক্ষেপণাস্ত্রের পর্যাপ্ত মজুদ ছিল। কিন্তু হুতিদের বিরুদ্ধে এবং গত বছর ইরানের হামলায় এর অনেকটাই ব্যয় হয়ে গেছে। ফলে, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রকে শীঘ্রই তাদের ইন্টারসেপ্টর ব্যবহারে সীমিত করতে হতে পারে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর প্রেস অফিস জানিয়েছে, গত ১৩ জুন থেকে ইরান ইসরায়েলের ওপর অন্তত ৩৭০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top