প্যান্ট খুলে ধর্ম নিশ্চিত হয়ে পাশবিক নির্যাতন,মুসলিম ব্যবসায়ীর মৃত্যু
আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮:১৬
ভারতের বিহার রাজ্যের নাওয়াদা জেলায় উগ্র হিন্দুত্ববাদী জনতার হামলায় গুরুতর আহত ৪০ বছর বয়সী মোহাম্মদ আথার হুসেন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। গত শুক্রবার গভীর রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে তাঁকে লক্ষ্য করে নির্মমভাবে মারধর করা হয়েছিল বলে অভিযোগ।
মৃত্যুর আগে দেওয়া এক বর্ণনায় আথার হুসেন হামলার ভয়াবহতার কথা তুলে ধরেন। তিনি জানান, ৪ থেকে ৫ জন লোক তাঁকে জোরপূর্বক থামিয়ে পকেট তল্লাশি করে এবং একটি ঘরে টেনে নিয়ে যায়। সেখানে তাঁর ধর্মীয় পরিচয় নিশ্চিত করার পর তাঁকে লোহার রড ও লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। হামলাকারীরা তাঁর আঙুল ভেঙে দেয়, বুকের ওপর উঠে মাড়িয়ে দেয় এবং পেট্রল ঢেলে তাঁকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করে।
একটি ভিডিও বার্তায় আথার বলেন, হামলাকারীরা প্লাস ব্যবহার করে তাঁর পা, আঙুল ও কান থেঁতলে দেয় এবং ইট দিয়েও আঘাত করে। তিনি আরও জানান, মুসলিম কি না তা নিশ্চিত করতে তাঁকে জোর করে কাপড় খুলতে বাধ্য করা হয় এবং পরে তালাবদ্ধ করে নির্যাতন চালানো হয়।
আথার হুসেন প্রায় ২০ বছর ধরে নাওয়াদার রোহ ও আশপাশের এলাকায় কাপড় বিক্রি করতেন। তিনি ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। মৃত্যুর আগে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “আমিই আমার পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি; আমার পরিবারের দেখভাল করার আর কেউ নেই।”
এ ঘটনায় তাঁর স্ত্রী শবনম পারভীন ১০ জন নামীয় অভিযুক্ত এবং ১৫ জন অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ এ পর্যন্ত চারজন সন্দেহভাজন—সনু কুমার, রঞ্জন কুমার, শচীন কুমার ও শ্রী কুমারকে গ্রেপ্তার করেছে। অন্যদের ধরতে অভিযান চলছে।
রোহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রঞ্জন কুমার জানান, হামলার পরপরই এফআইআর দায়ের করা হয় এবং ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।
এই ঘটনাটি নাওয়াদায় ক্রমবর্ধমান জনতার সহিংসতার একটি উদ্বেগজনক চিত্র তুলে ধরেছে। ২০২৩ সালেই এলাকাটিতে একাধিক সহিংস ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ফেব্রুয়ারিতে দু’জন যুবককে পিটিয়ে হত্যা এবং আগস্টে জাদুবিদ্যার অভিযোগে এক বয়স্ক দম্পতির ওপর হামলার ঘটনা উল্লেখযোগ্য।
সূত্র: দ্য অবজারভার পোস্ট
এনএফ৭১/ওতু
বিষয়:

পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।