সাংবাদিক নির্মল সেনের ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
গোপালগঞ্জ থেকে | প্রকাশিত: ৮ জানুয়ারী ২০২১, ১৯:৫৮
বিশিষ্ট সাংবাদিক, কলামিস্ট, লেখক, রাজনীতিক, মুক্তিযোদ্ধা নির্মল সেনের ৮ম মৃত্যু বার্ষিকী আজ। ২০১৩ সালের ৮ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ৮৩ বছর বয়সে রাজধানী ঢাকার ল্যাব এইড হাসপাতালে তিনি পরলোক গমন করেন।
নির্মল সেনের ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী পালন উপলক্ষে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় নির্মল সেন স্কুল এ্যান্ড মহিলা কলেজের উদ্যোগে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ শুক্রবার (০৮ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় নির্মল সেন স্কুল এ্যান্ড মহিলা কলেজ চত্ত্বরে নির্মল সেনের ভাতিজা ও সাংবাদিক রতন সেন কংকনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্মরণ সভায় প্রফেসর গৌরঙ্গ লাল চৌধুরী, প্রফেসর কার্তিক চন্দ্র বিশ্বাস, পিঞ্জুরী ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক দেবতোষ দে, ছাত্র নেতা রাশেদ চৌধুরী, সাংবাদিক মিজানুর রহমান বুল, সাংবাদিক গৌরঙ্গ দাস বক্তব্য রাখেন। এসময় বক্তারা নির্মল সেনের জীবন দর্শন তুলে ধরে।
সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতা জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, বিশিষ্ট সাংবাদিক, কলামিস্ট, বাম রাজনীতির পুরোধা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক নির্মল সেন ১৯৩০ সালের ৩ আগস্ট গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার দিঘীরপাড় গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত হিন্দু পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তার বাবার নাম সুরেন্দ্রনাথ সেন গুপ্ত ও মাতার নাম লাবণ্য প্রভা সেন গুপ্ত। পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে নির্মল সেন ছিলেন পঞ্চম।
নির্মল সেনের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ”ভারত ছাড়ো” আন্দোলনের মাধ্যমে স্কুল জীবন থেকে। কলেজ জীবনে তিনি অনুশীলন সমিতির সক্রিয় সদস্য ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি আরএসপিতে যোগ দেন। দীর্ঘ দিন তিনি শ্রমিক কৃষক সমাজবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। রাজনীতি করতে গিয়ে নির্মল সেনকে জীবনের অনেকটা সময় জেলে কাটাতে হয়েছে।
নির্মল সেন দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় সাংবাদিকতার মধ্যে দিয়ে সাংবাদিকতার জীবন শুরু করেন ১৯৫৯ সালে। তার পর দৈনিক আজাদ, দৈনিক পাকিস্তান, দৈনিক বাংলা পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেন। তিনি বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন।
লেখক হিসেবেও নির্মল সেনের যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। তার লেখা পূর্ব পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ, মানুষ সমাজ রাষ্ট্র, বার্লিন থেকে মস্কো, মা জন্মভূমি, স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই ও আমার জবানবন্দি উল্লেখযোগ্য।
২০০৩ সালে তার ব্রেন স্ট্রোক হয়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এসময় আওয়ামী লীগসহ ১১ দল সাড়ে চার লাখ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া সরকারে থাকা অবস্থায় পাঁচ লাখ ও বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন তার চিকিৎসার জন্য অর্থ সহায়তা দেয়। ওই টাকা দিয়ে তাকে সিঙ্গাপুর মাউন্ট এলিজাবেথ থ্রি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
কিন্তু ৫৯ দিন চিকিৎসার পর টাকা না থাকায় চিকিৎসা শেষ না করেই তাকে দেশে ফিরে আসতে হয়। সাহসী এ সাংবাদিক রোগাক্রান্ত হয়ে দীর্ঘ দিন যাবৎ বিনা চিকিৎসায় ভুগেছেন। অর্থ সংকটে তার চিকিৎসাও প্রায় বন্ধ ছিল। ২০১৩ সালের ৮ জানুয়ারি তিনি রাজধানী ঢাকার ল্যাব-এইড হাসপাতালে ৮৩ বছর বয়সে পরলোক গমন করেন।
নির্মল সেনের ভাতিজা সাংবাদিক রতন সেন কংকন জানান, নির্মল সেনের ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী পালন উপলক্ষে নির্মল সেন স্কুল এ্যান্ড মহিলা কলেজ পৃথকভাবে স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। এতে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ অংশ গ্রহণ করেন।
এনএফ৭১/জেএস/২০২১
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।