ভিসা পাসপোর্ট ছাড়া কুয়েতগামী বিমানে ওঠা সেই শিশু এখন শিকলবন্দি, নিরাপত্তা কর্মীদের কী হলো?

ভিসা পাসপোর্ট ছাড়া বিমানে উঠে আলোচনা আসা শিশু জোনায়েদ মোল্লা বাড়ি ফিরেই বাঁধা পড়েছে শিকলে। এর আগেও কাউকে কোন কিছু না বলে চলে যাওয়ায় ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখা হতো। ৪ দিন আগে দাদিকে মাদরাসার যাওয়ার ওয়াদা করে বাইর হয়ে ঢাকায় গিয়ে নিরাপত্তা কর্মীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে উঠে পড়ে বিমানে। 

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের পারইহাটি গ্রামের সবজি ব্যবসায়ী ইমরান মোল্লার প্রথম পক্ষের ছেলে জুনায়েদ মোল্লা। বেশ কয়েক বছর আগে তার মা অন্যত্র চলে যাওয়ার পর সৎমায়ের কাছে বড় হতে থাকে জুনায়েদ। ভর্তি করে দেওয়া হয় উপজেলার উজানী হাফিজিয়া মাদরাসায়। তবে বিভিন্ন সময় বাড়ির কাউকে না বলে বাইরে চলে যায় জুনায়েদ। তবে এবার ঘটিয়েছে আবাক কাণ্ড। যা নিয়ে সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

এক সপ্তাহ আগে জুনায়েদ মোল্লা তালাবদ্ধ ঘর থেকে বের হয়েই প্রথমে ইজিবাইকে করে মুকসুদপুর থেকে বাসে উঠে চলে যায় ঢাকার সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ডে। সেখান থেকে বসুন্ধরা হয়ে সোমবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যায়। পরে ওপরে উঠতে গেলে বাধা পেয়ে অন্য পাশ দিয়ে ঘুরে সিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠে জোনায়েদ।

বিমানবন্দরের ৯টি গেটের নিরাপত্তাকর্মীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে  অন্যান্য যাত্রীদের সঙ্গে সোজা উঠে পড়ে কুয়েতগামী কুয়েত এয়ারওয়েজের (কেইউ-২৮৪) রাত ৩টা ১০ মিনিটের একটি ফ্লাইটে। প্রায় ১ ঘণ্টার মতো বিমানের সিটে বসে থাকার পর জুনায়েদ ভেতরে করিডোরে হাঁটাচলা করছিল।

এ সময় কেবিন ক্রু জুনায়েদকে  সিটে বসার পরামর্শ দেন। তখন সে একটি সিটে বসে পড়ে। একপর্যায়ে জুনায়েদ যেই সিটে বসেছিল পাশের সিটের যাত্রী তাকে তার বাবা-মায়ের কাছে গিয়ে বসতে বলে। কিন্তু সে তার বাবা-মায়ের বিষয়ে কোনো কিছু বলতে পারেনি। এর আগেও বাড়ির কাউকে কিছু না বলে ঢাকা, মংলা, ফরিদপুর, রাজবাড়ীসহ বিভিন্নস্থানে জুনায়েদ চলে যায় বলে জানায় তার পরিবার।

বিমানবন্দর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক মিয়া জানান, শিশুটি থানা হেফাজতে ছিল। তার অভিভাবককে খবর দেওয়া হয়। পরবর্তীতে মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টার দিকে শিশুটির চাচা ইউসুফ মোল্লার নিকট তাকে হস্তান্তর করা হয়।

জোনায়েদের বাবা ইমরান মোল্লা বলেন, ১৮ মাস বয়সে অভাব-অনাটনের কারণে জোনায়েদের মা ওকে ফেলে গিয়ে অন্যত্র বিয়ে করে। পরে তিনি আবার বিয়ে করেন। জোনায়েত ছাড়াও তার আরও এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। ওর সৎ মা অন্য ছেলে-মেয়ের মতো করে ওকে ভালবাসে। কিন্তু ছেলেটি সুযোগ পেলেই পালিয়ে যায়।