সৈয়দপুরে জমি নিয়ে সংঘর্ষে সাবেক সেনা সদস্য খুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১, ০০:৫০
নীলফামারীর সৈয়দপুরে জমি নিয়ে সংঘর্ষে আপন ভাই, ভাতিজা ও ভাগিনার হাতে প্রাণ গেছে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্টের।
মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ভোর রাতে উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের কদমতলী এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছে। ঘাতকরা স্বপরিবারে পলাতক।
স্থানীয়রা জানায়, ওই গ্রামের মৃত. আশরাফ উদ্দিন প্রামানিকের ছেলে সাবেক সেনা সদস্য ইদ্রিস উদ্দিন প্রামানিক (৬২) পৈত্রিকসূত্রে প্রাপ্ত জমির সাথেই বাড়ি করার জন্য ৫ বছর আগে ইউনুস কন্ট্রাক্টরের কাছ থেকে ৫ শতক জমি ক্রয় করেন। উক্ত জমিতে বাড়ি করতে গেলে তারই বড় ভাই খায়রুল ইসলাম লাল্টু দাবি করেন যে তিনি ওই জমি আগেই কিনেছেন মৃত. কছিম উদ্দিনের ছেলে আবুল কালাম আজাদের কাছ থেকে। একারনে তিনি বাড়ি করতে বাধা দেন এবং জমির দখল ছেড়ে দেয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৬ ডিসেম্বর উভয় পক্ষের মধ্যে বাক বিতন্ডার এক পর্যায়ে খায়েরুল ও তার ছেলে মাসুদ রানা ও মাছুম এবং ভাগিনা আবুল কালাম আজাদ অতর্কিতভাবে হামলা করে ইদ্রিস আলীর উপর। এসময় তাদের হাতে থাকা বাঁশ দিয়ে সজোরে আঘাত করলে ইদ্রিস উদ্দিনের বাম চোখ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এতে তিনি মাটিতে পড়ে গেলে সবাই মিলে এলোপাথারী ইটের টুকরা দিয়ে আঘাত করে তার পুরো শরীর থেতলে দেয়।
পরে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসক জানান, রোগীর অবস্থা ভালো না, চোখে আঘাত পাওয়ার কারণে তার মস্তিস্কের সবগুলো রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এজন্য ব্লাড সার্কুলেশন বাধাগ্রস্থ হওয়ায় ব্রেণ ড্যামেজ হয়ে গেছে। ১৮ দিন চিকিৎসার পর বাড়িতে নিয়ে আসা হয় এবং মাঝে মাঝে হাসপাতালে গিয়ে চেকআপ করানো হলেও তার অবস্থার উন্নতি হয়নি। এরই মাঝে ওইদিন দিবাগত রাত সাড়ে ৩ টার দিকে তিনি মারা যান। পূর্বের সেই হামলার ঘটনায় নীলফামারী জেলা জজ আদালতে ৪ জনকে আসামী করে মামলা করা হয়েছে। এতে আসামীরা হলেন খায়রুল প্রামানিক, তার ছেলে মাসুদ ও মাছুম এবং ভাগিনা আবুল কালাম আজাদ।
নিহত ইদ্রিস আলীর ছোট ছেলে মোঃ সোহেল রানা বলেন, খায়রুল ও তার পরিবারর সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে আমাদের জমি জবর দখল করতে চায়। এতে বাধা হয়ে দাঁড়ানোর কারণেই তারা আমার বাবাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হামলা করে গুরুত্বরভাবে আহত করে। তাদের আঘাতের কারণেই আমার বাবা সেই দিন থেকে অত্যন্ত অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং আজ মৃত্যুর মুখে পতিত হলেন। আমরাও এখন নিরাপত্তাহীনতার মাধ্যে আছি।
সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল হাসনাত খান জানান, অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যের পরিবারের দাবি পূর্বে মারামারির ঘটনায় তিনি চোখে ও শরীরে আঘাত পাওয়ার কারণে অসুস্থাবস্থায় মারা গেছেন। তাই লাশ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। যাতে আঘাতের কারণেই মৃত্যু হয়েছে না বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি মারা গেছেন তা নিশ্চিত হওয়া যাবে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নিব।
এনএফ৭১/আরএইচ/২০২১
বিষয়: সৈয়দপুর সংঘর্ষে সাবেক সেনা
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।