বাংলাদেশে সুগম হলো টিকা পাওয়ার পথ
অক্সফোর্ডের টিকায় ভারতের অনুমোদন
নিউজ ডেস্ক | প্রকাশিত: ২ জানুয়ারী ২০২১, ০৫:১২
পরীক্ষামূলক প্রয়োগের পর ভারত সরকার অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার তৈরি করোনার ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত ছাড়পত্র দিয়েছে।
শুক্রবার (১ জানুয়ারি) নতুন বছরের প্রথম দিনেই করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে এ সুখবর ভারতের জন্য তো বটেই, বাংলাদেশের জন্যও আশার সঞ্চার করছে। কেননা, এর ফলে চলতি মাসের মধ্যেই বাংলাদেশের টিকা পাওয়ার পথ আরও সুগম হলো।
কোভিশিল্ড নামে অক্সফোর্ডের এই টিকা তৈরির ভারতীয় সহযোগী প্রতিষ্ঠান সিরাম ইন্সটিটিউটের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি রয়েছে। সে অনুযায়ী বাংলাদেশকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তিন কোটি ডোজ টিকা দেবে তারা। এই দুটো দেশে একই সময়ে টিকা দেয়ার বিষয়ে সেরাম ইন্সটিটিউটের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের একটি সমঝোতাও হয়েছে।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আবদুল মান্নান ভারতে টিকা অনুমোদন পাওয়ার পর সাংবাদিকদের জানান, এখন বাংলাদেশে টিকা প্রয়োগের জন্য আলাদা করে আর অনুমোদনের প্রয়োজন হবে না। চলতি মাসের শেষ দিকে বাংলাদেশ টিকা পেতে পারে।
টাইমস অব ইন্ডিয়া শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানায়, ভারতের ড্রাগস নিয়ন্ত্রণ জেনারেল থেকে চূড়ান্ত ছাড়পত্র পাওয়ার পর এ মাস থেকেই টিকাদান কর্মসূচি শুরু হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার থেকে ভারতের সব রাজ্যে টিকাদান কর্মসূচির অংশ হিসেবে পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিন কার্যক্রম শুরু হবে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মধ্যমগ্রাম ও দত্তাবাদের উচ্চ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এবং আমডাঙার গ্রামীণ হাসপাতালে বহু প্রতীক্ষিত করোনা ভ্যাকসিনের ড্রাই রান হবে। প্রাথমিকভাবে ২৫ জনের ওপর এই টিকা প্রয়োগ করা হবে। সকাল ৯টা থেকেই শুরু হয়ে যাবে ড্রাই রানের কাজ।
যাদের প্রথমে টিকা দেয়া হবে, সেই চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ভ্যাকসিন সেন্টারে নিয়ে এসে দেখে নেয়া হবে সবকিছু ঠিক আছে কি না।
এদিকে জার্মান বার্তা সংস্থা ডয়েচে ভেলে জানায়, স্বাস্থ্যকর্মীদের পর টিকা দেয়া হবে, পুলিশ, পুরসভার কর্মী সহ করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পুরোভাগে থাকা সবাইকে। সেই সঙ্গে বয়স্ক নাগরিক এবং যারা শ্বাসকষ্ট, ডায়াবেটিস সহ বিভিন্ন গুরুতর রোগে ভুগছেন, তারা করোনার টিকা পাবেন। এরপর অন্যদের পালা আসবে।
সেরামের হাতে এখনই সাত কোটির মতো ভ্যাকসিন রয়েছে। দুইটি ডোজে ভ্যাকসিন নিতে হবে। তাই এখনই সাড়ে তিন কোটি মানুষকে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন দেয়ার জায়গায় ভারত আছে। মার্চের মধ্যে আরো তিন কোটি ভ্যাকসিন তাদের কাছে এসে যাবে। ফলে চিকিৎসক, চিকিৎসাকর্মী ও করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পুরোভাগে থাকা মানুষরা ততদিনে ভ্যাকসিন পেয়ে যাবেন।
বাংলাদেশে এই টিকার ক্লিনিক্যাল কোনো পরীক্ষা হয়নি। ফলে এখনই কী সেটা বাংলাদেশের মানুষের শরীরে প্রয়োগ করা সম্ভব কিনা সে প্রসঙ্গে বিজ্ঞানীরা বলছেন, যুক্তরাজ্যে কোনো টিকার অনুমোদন দেয়া হলে বাংলাদেশে তার আলাদা কোনো পরীক্ষার প্রয়োজন হয় না। অক্সফোর্ডের টিকাটি যেহেতু যুক্তরাজ্য ও এরপর ভারতে অনুমোদন পেল সেই হিসেবে বাংলাদেশেও এই টিকাটি দেয়া সম্ভব।
করোনাভাইরাস সংক্রান্ত সরকারের পরামর্শক কমিটির প্রধান মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ এর আগে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ কর্তৃপক্ষ যদি কোনো টিকার অনুমোদন দিয়ে থাকে তাহলে বাংলাদেশে তার জন্য আলাদা করে কোনো অনুমোদনের প্রয়োজন হয় না। সে অনুযায়ী ফাইজার-বায়োঅ্যানটেকের টিকাও বাংলাদেশে দেয়া যেতে পারে। একইভাবে যুক্তরাজ্য, জার্মানিসহ ইউরোপের সাতটি দেশের কোনো একটিতে টিকা অনুমোদন পেলে সেই টিকাটিও বাংলাদেশে দেয়া যায়।
এনএফ/কেবিএ/২০২০
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।