কোলেস্টেরল, রক্তচাপ কমাতে যেসব খাবার উপকারী
নিশি রহমান | প্রকাশিত: ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, ০২:২৮
একটা বয়সের পর যেকোনো মানুষের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায় কোলেস্টেরল। রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। বুঝে-শুনে খেলেও প্রতিদিনের খাদ্যতালিকা থেকে কোলেস্টেরল একেবারে বাদ দেওয়া কঠিন। এর পাশাপাশি যদি কারও পারিবারিকভাবে কোলেস্টেরল হওয়ার প্রবণতা থাকে, তাহলে তো ভীষণ মুশকিল। তবে আপনার দৈনন্দিন ডায়েট ভালো স্বাস্থ্যের লক্ষ্য পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাহলে আর দেরি না করে চলুন জেনে নেই কোলেস্টেরল কমাতে সহায়ক খাবারগুলো সম্পর্কে____
রসুন: রসুনের গুণাগুণ অনেকেরই জানা। রসুনে আছে অ্যামাইনো অ্যাসিড, ভিটামিন, খনিজ ও অর্গানোসালফার যৌগ। এই যৌগ ঔষধি গুণ হিসেবে কাজ করে। বেশ কয়েকটি বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, শরীরে বাজে কোলেস্টেরল কমাতে কার্যকর রসুন। এটি রক্তচাপ কমানোর ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর রসুন দৈনিক অর্ধেক বা এক কোয়া করে খেলে কোলস্টেরলের মাত্রা ৯ শতাংশ কমতে দেখা যায়।
মেথি: মেথিকে মসলা, খাবার, পথ্য- তিনটিই বলা চলে। স্বাদে তিতা । এতে রয়েছে রক্তের চিনির মাত্রা কমানোর বিস্ময়কর শক্তি ও তারুণ্য ধরে রাখার বিস্ময়কর এক ক্ষমতা। যারা নিয়মিত মেথি খান, তাদের বুড়িয়ে যাওয়ার গতিটা অত্যন্ত ধীর হয়। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে মেথি চিবিয়ে খেলে বা এক গ্লাস পানিতে মেথি ভিজিয়ে রেখে সেই পানি পান করলে রক্তের চিনির মাত্রা কমে। রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বা চর্বির মাত্রা কমে যায়। ডায়াবেটিসের রোগী থেকে শুরু করে হৃদরোগের রোগী পর্যন্ত সবাইকে তাদের খাবারে মেথি রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়।
সামুদ্রিক মাছ: সামুদ্রিক মাছ যেমন- স্যামন, টুনা ইত্যাদি মাছে স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও ওমেগা- ৩ ফ্যাটি এসিড আছে যা রক্তে এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। তাছাড়া আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট ও ট্রাই গ্লিসারাইডের মাত্রা কমায়।
সবজি: সবজি দেহের কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমায় এবং শক্তি জোগাতে সাহায্য করে। এ জাতীয় খাবার যেমন: শুষ্ক সোয়া প্রোডাক্ট, মটরশুটি, টফু ইত্যাদি।
আমলকি: টক আর তেতো স্বাদে ভরা আমলকি গুণে-মানে অতুলনীয়। ফলটি শুধু ভিটামিন আর খনিজ উপাদানেই ভরপুর নয়, বিভিন্ন রোগব্যাধি দূর করায়ও রয়েছে অসাধারণ গুণ। আমলকিতে থাকা ভিটামিন সি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, সর্দি-কাশি ঠেকাতে পারে। আয়ুর্বেদশাস্ত্রেও আমলকির জুসের গুণ বর্ণনা করে বলা হয়েছে, শরীরের সব ধরনের ক্রিয়ার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে তা। নিয়মিত আমলকীর জুস খেলে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে। অ্যামিনো এসিড ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় হৃদযন্ত্র ভালো থাকে।
জলপাইয়ের তেল এবং জলপাইয়ের তৈরি খাদ্য: অলিভ অয়েল বা জলপাইয়ের তেলে রয়েছে মনো-আনসেচুরেটেড ফ্যাটি এসিড ও ভিটামিন ই। গবেষণায় দেখা গেছে, মনো-আনসেচুরেটেড ফ্যাটি এসিড দেহের খারাপ কলেস্টেরল এলডিএলকে কমায় এবং ভালো কোলেস্টেরল এইচডিএলকে বাড়াতে সাহায্য করে। তাই যদি কেউ দেহের ভালো কোলেস্টেরলকে বাড়িয়ে খারাপ কোলেস্টেরলকে কমাতে চায়, তার জলপাইয়ের তেল বা জলপাইয়ের তৈরি খাবার অবশ্যই খেতে হবে।
প্রতিদিন খাবারে এক অথবা দুই চামচ জলপাইয়ের তেল সালাদ বা রান্নায় ব্যবহার করলে শরীরে মনো-আনসেচুরেটেড ফ্যাটি এসিডের চাহিদা পূরণ হবে।
গ্রিন টি: গ্রিন টি বা সবুজ চায়ে আছে পলিফেনল। এটি মানুষের শরীরে দারুণ উপকার দেয়। এটি শরীরের বাজে কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। গ্রিন টি আমাদের শরীরকে সতেজ ও উৎফুল্ল রাখতে সাহায্য করে। এটি হৃদ্রোগ ও ক্যানসারের ঝুঁকিও কমায়। নিয়মিত গ্রিন টি পান করলে শরীরের মেদ কোষে বেশি শর্করা ঢুকতে পারে না। ফলে এই চা আমাদের শরীরের ওজন ও রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
বিষয়: কোলেস্টেরল রক্তচাপ হার্ট অ্যাটাক স্ট্রোক খাদ্যতালিকা ডায়েট newsflash71 Latest News News Flash News
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।