বিশ্বে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা চ্যালেঞ্জিং ইস্যু

রোহিঙ্গাদের ফেরত না পাঠালে দেশ অনিরাপদ হয়ে উঠবে: প্রধানমন্ত্রী

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০২:৫১

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং ইস্যু। বাংলাদেশ বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক প্রেক্ষাপটে সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেই কাজ করতে চায়। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয় বাংলাদেশ এই নীতিতে বিশ্বাস করে।

সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকার হোটেল রেডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেনে ৪৬তম ইন্দো প্যাসিফিক আর্মিস ম্যানেজমেন্ট সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন। এসময় স্বাধীনতার পর গত ৫০ বছরে বিভিন্ন খাতে দেশের অর্জন তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দারিদ্র বিমোচন, খাদ্য নিরাপত্তাসহ বেশ কিছু ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের সামনে এক বিস্ময়ের নাম।

আমরা সর্বদা আমাদের বৈদেশিক নীতি থেকে শক্তি নিয়ে বৈশ্বিক এবং আঞ্চলিক অংশীদারদের সাথে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছি উল্লেখ তিনি বলেন, এটি আমাদের একটি জাতি হিসাবে বেড়ে উঠতে দিয়েছে এবং ধীরে ধীরে আমাদের সম্প্রদায়ে আমাদের সঠিক অবস্থান দাবি করার ক্ষমতা দিয়েছে।

বিশ্বে নিরাপত্তা গতিশীলতা প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে এবং দিন দিন জটিল হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে কোনও সংঘাত বা সংকট বিশ্বের প্রতিটি জাতিকে প্রভাবিত করে। এটি রাষ্ট্রগুলোর নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীল উন্নয়নকে উল্লেখযোগ্যভাবে বাধাগ্রস্ত করে।

তিনি বলেন, আমরা শান্তি ও জনগণের ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করি। শান্তিরক্ষা আমাদের সাংবিধানিক অঙ্গীকার। তাই আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। মিয়ানমারকে অনুরোধ করছি রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে।

সরকার প্রধান বলেন, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। তিনি বলেন, মিয়ানমারের নাগরিকদের দীর্ঘদিনের অবস্থানের কারণে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও নিরাপত্তাসহ সব ধরনের ঝুঁকি তৈরি করেছে। তাদের দ্রুত মিয়ানমারে ফেরত না পাঠাতে পারলে দেশ অনিরাপদ হয়ে ওঠবে।

অনুষ্ঠানে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান বাংলাদেশ সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ । তিনি বলেন, যে সংকটই আসুক, একসঙ্গে কাজ করলে তা মোকাবিলা করা যায়।

যুক্তরাষ্ট্রসহ ২৭টি দেশের সঙ্গে যৌথভাবে এই আন্তর্জাতিক সেমিনারের আয়োজন করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। ডিজিটালাইজেশন ইন পুলিশিং— এ প্রতিপাদ্য নিয়ে শুরু হওয়া এই সম্মেলনে ৪৫ দেশের ১২৭ জনপ্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন।

বিভিন্ন দেশের পুলিশের প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক বৃদ্ধি, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই ইন্টারপা সম্মেলন। ৫৯ দেশের ৭৬ পুলিশ প্রশিক্ষণ একাডেমি বা প্রতিষ্ঠান এই ইন্টারপার সদস্য। এর কার্যক্রম তুরস্ক থেকে পরিচালিত হয়। ৪৬তম আইপিএএমএসের তিনটি পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনের মধ্যে রয়েছে শক্তিশালী শান্তিরক্ষা, নারী ক্ষমতায়ন এবং আঞ্চলিক সহযোগিতায় ভূমি শক্তি।

আইপিএএমএস হলো অন্যতম প্রধান সেনা কর্মকাণ্ড, যা ইন্দো-প্যাসিফিক আঞ্চলিক স্থল বাহিনীর সিনিয়র সামরিক নেতৃত্বের জন্য শান্তি ও স্থিতিশীলতার বিষয়ে মতামত ও ধারণা বিনিময়ের জন্য একটি ফোরাম। আইপিএএমএস-এর উদ্দেশ্য পারস্পরিক বোঝাপড়া, সংলাপ এবং বন্ধুত্বের মাধ্যমে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা। বাংলাদেশ তৃতীয়বারের মতো সেমিনারের সহ-আয়োজক। এরআগে ১৯৯৩ এবং ২০১৪ সালে এই ইভেন্টের সহ-আয়োজক ছিল বাংলাদেশ।

কনফারেন্সে অংশ নেয়া বিভিন্ন দেশের পুলিশ একাডেমির প্রধানরা মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিস্থলে যাবেন। সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন তারা।

শেষ দিন ১৪ সেপ্টেম্বর প্রধান অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ পুলিশের প্রধান ড. বেনজীর আহমেদ। সেদিন কয়েকটি পেপার প্রেজেন্টেশন হবে, যেখানে বিভিন্ন দেশের পুলিশের প্রশিক্ষণ একাডেমির নানা বিষয় তুলে ধরা হবে।

 

 

 

 

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top