আয়শার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক নেই
এরিকের আকুতি— বিদিশার হাত থেকে আমাকে বাাঁচান
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১০ নভেম্বর ২০২২, ০৮:৫৮
নিজের মা বিদিশা এরশাদের বিরুদ্ধে মানসিক অত্যাচারের অভিযোগ তুলে নিজেকে অবরুদ্ধ দশা থেকে উদ্ধার করতে সহায়তা চেয়েছেন এরশাদপুত্র এরিক এরশাদ। এছাড়া মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যার মধ্যে পুলিশের সহযোগিতায় প্রেসিডেন্ট পার্কের বাসা থেকে বিদিশাকে বের করে দেওয়ারও অনুরোধ জানিয়েছেন এরশাদপুত্র।
এরিক এরশাদের কথোপকথনের একটি অডিওটি ছড়িয়ে পড়েছে। এরশাদ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান কাজী মামুনুর রশিদকে ফোন করে মা বিদিশার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন এরিক এরশাদ। অডিও বার্তায় এরিক বলেছে— আয়শা নামে একটি মেয়ে আছে। তার সঙ্গে আমার শারীরিক সম্পর্ক আছে এই অভিযোগ তুলে আয়েশাকে বের করে দিয়েছে। কিন্তু তার সঙ্গে তো আমার শারীরিক সম্পর্ক নেই।
মা বিদিশাকে ‘মীরজাফর’, খুনি এরশাদ শিকদারের সঙ্গে তুলনাও করেন এরিক এরশাদ। এরিক এরশাদ বলেন, আমার বাঁচাটা জরুরি। আজকে তিনি (বিদিশা) যদি এই বাসায় থাকেন তাহলে আমি এই বাসায় থাকব না। এছাড়া এরিক এরশাদের মুখে শোনা গেছে— তার মা বিদিশা ওই বাসায় থাকলে সে আত্মহত্যা করবে।
এরশাদ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান কাজী মামুনুর রশিদের কাছে সহায়তার আকুতি জানালেও এদিকে কাজী মামুনুর রশিদের বিরুদ্ধে থানায় একটি জিডিও হয়েছে। ওই জিডির বাদী হিসেবে এরিক এরশাদের নাম রয়েছে। তবে জিডির বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন কাজী মামুনুর রশিদ।
এরশাদ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান কাজী মামুনুর রশিদ গংরা যে কোনো সময় প্রেসিডেন্ট পার্কে গিয়ে হামলা চালাতে পারে এই আশঙ্কা করে এরিকের নামে সোমবার গুলশান থানায় জিডি হয়েছে। জিডি নম্বর ৫৪০।
জিডির অভিযোগে এরিক উল্লেখ করেছেন- ৬ নভেম্বর কাজী মামুনুর রশিদ ও কাজী রুবায়েত গংরা আমার প্রেসিডেন্ট পার্কের বাসায় অতির্কিতভাবে চলে আসেন। আমাদের বাসায় তারা এক ঘণ্টা অবস্থান করেন। তারা বাসাটি দখলে নিতে চান।
অভিযোগে এরিক উল্লেখ করেছেন— তারা আমাদের বাসায় কোনো নাশকতামূলক দ্রব্য রেখে যেতে পারে বলে সন্দেহ হচ্ছে। জিডিতে উল্লেখ করা হয়— এরশাদ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান কাজী মামুনুর রশিদ নন। বর্তমানে ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার (অব.) তানভীর ইকবাল।
গুলশান থানার ওসি ফরমান আলী সারাবাংলাকে বলেন, ওনারা মাঝে মধ্যে এভাবে জিডি করে থাকেন। আমরা সবগুলো তদন্ত করে দেখি। পুলিশের গুলশান জোনের এক কর্মকর্তা জানান, গুলশান থানায় এরশাদ ট্রাস্টের একাধিক জিডি রয়েছে। এটি তাদের রুটিন ওয়ার্ক। জিডি হচ্ছে। কিন্তু কেউ সরাসরি মামলা দায়ের করছেন না।
এরশাদ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান কাজী মামনুর রশিদ বলেন, এরিক এরশাদ এখন তার মায়ের কাছে বন্দি। আমাদের (ট্রাস্টের) সব সদস্যসহ গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে এরিককে খোলামেলা কথা বলতে দিলে সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।
মামুনুর বলেন, এরিক আমার কাছে সহায়তা চেয়েছেন। তার মা তাকে মানসিক অত্যাচার করছেন। তার অডিও বার্তাটি তো আমার কাছে রয়েছে।’
নিজের বিরুদ্ধে জিডির বিষয়ে তিনি বলেন, এই জিডিতে এরিক না অন্য কেউ স্বাক্ষর করেছে তা খতিয়ে দেখা উচিত।
এরশাদ ট্রাস্টের সদস্য আ্যাডভোকেট রুবায়েত বলেন, এরিকের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে আজ ট্রাস্টের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, এরিক অবরুদ্ধ। এরিকের মা এক মাস আগে এরিকের কাছ থেকে মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে।
অপরদিকে একটি সূত্র বলেছে, এরশাদ ট্রাস্টের টাকা ও সম্পত্তি নিয়ে মূলত কাড়াকাড়ি। কারণ এই ট্রাস্টের নামে সাড়ে ১৫ কোটি টাকা এফডিআর করা আছে। এ থেকে প্রতিমাসে ৬ লাখ টাকা আয় হয়। এ ছাড়া ট্রাস্টের অধীনে গুলশানে ২ হাজার স্কয়ার বর্গফুটের ফ্ল্যাট রয়েছে। এ থেকে মাসিক আয় ৪৫ হাজার টাকা।
ট্রাস্টের নামে বনানীতে একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। এখান থেকে ২৫ হাজার টাকা আয় হয়। গুলশানে একটি দোকান রয়েছে এখান থেকে মাসে ২ লাখ টাকা আয় হয়। রংপুরেও একটি কোল্ডস্টোরেজ রয়েছে। এই কোল্ডস্টোরেজ থেকে সব খরচ বাদ দিয়ে বছরে ৩০ লাখ টাকা আয় হয়ে থাকে। এ সব টাকা ট্রাস্টের মাধ্যমে এরিক সুবিধাভোগী।
এরিক এরশাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য তার মা বিদিশার কাছে ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে এই প্রতিবেদক তাকে খুদে বার্তা পাঠালেও বিদিশার কাছ থেকে জবাব মেলেনি। সূত্র: চ্যানেল টুয়েন্টি ফোর, সারা বাংলা
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।