মিরপুরে ফের সড়কে ক্ষুব্ধ পোশাক শ্রমিকরা, যান চলাচল বন্ধ
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১ নভেম্বর ২০২৩, ১৩:১২
সারাদেশে পোশাক শ্রমিক খাতে অসন্তোষ চলমান। এদিকে, রাজধানীর মিরপুরে আবারও সড়কে অবস্থান নিয়েছে পোশাক শ্রমিকরা। এতে মিরপুর ১০ নম্বর থেকে ১৪ নম্বর পর্যন্ত সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত পোশাক শ্রমিকরা মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বরে অবস্থান নেয়। এ সময় এ এলাকায় যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। পরে সকাল ৯টায় মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বর থেকে ১৪ নম্বরের দিকে চলে যায় তারা।
এ সময় কয়েকটি গার্মেন্টসের ফটক ভাঙচুর করতে দেখা যায় শ্রমিকদের। সকাল ১০টার দিকে শ্রমিকরা মিছিল নিয়ে আবার মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বরের দিকে যায়।
আন্দোলনকারী শ্রমিকরা জানান, নতুন বেতন কাঠামো অনুযায়ী তাদের বেতন ২৩ হাজার টাকা হবে। এজন্য চলতি মাসে তাদের গ্রেড ঠিক করার কথা। কিন্তু মালিকপক্ষ গ্রেড পরিবর্তন ও বেতন বাড়ানোর কোনো উদ্যোগ নেয়নি। তারা (মালিক পক্ষ) আগের বেতন বহাল রেখেই গার্মেন্ট চালাতে চান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ডেকো রেডওর্ডস, ডেকো এপারেলস, ইপিলন, ডেকো নীড, কংকড, ইভেন্টস গ্রুপ, টিউলিপ, আলানা গ্রুপ, আজমত গ্রুপসহ বেশ কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করছেন।
আন্দোলনরত শ্রমিকরা বলছেন, একজন শ্রমিক যদি আট হাজার টাকা বেতন পায়, তার পরিবারে যদি পাঁচজন সদস্য থাকে সেখানে বাসাভাড়াই তো যায় পাঁচ হাজার টাকা। বাকি টাকায় কিভাবে সংসার চলবে। বাজার দরের যে অবস্থা, তাতে তো দুই বেলা ভাত খাওয়ার অবস্থাও নেই। আমরা কিভাবে বাঁচব? কয়েক টাকা বেতন বাড়ানোর দাবিতে রাস্তায় নেমেছি। কিন্তু এখন জীবন নিয়ে টানাটানি।
এদিকে শ্রমিকদের আন্দোলনে মালিক পক্ষ স্থানীয় রাজনৈতিক লোকজনকে দিয়ে শ্রমিকদের ওপর হামলা করিয়েছে বলে দাবি শ্রমিকদের। শ্রমিকরা বলছেন, ‘গার্মেন্টস শ্রমিকরা নিজ নিজ কারখানার সামনে আন্দোলন করছিলেন। পরবর্তী সময়ে কয়েকজন বহিরাগত এসে হামলা চালায়। এতে বেশ কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়েছেন।
এর আগে, মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ১৮টি রেজিস্ট্রার্ড শ্রমিক ফেডারেশনের সমন্বয়ে গঠিত ইন্ডাস্ট্রিয়াল বাংলাদেশ কাউন্সিল (আইবিসি) সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানায়।
দাবিগুলো হলো-শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখাসহ কারখানার উৎপাদন অব্যাহত রাখা; পুলিশের গুলিতে নিহত গার্মেন্ট শ্রমিক রাসেল হাওলাদারের পরিবারকে ২৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া এবং জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ। শ্রমিকদের ওপর প্রশাসনের ধমন-পীড়ন, মামলা-হামলাসহ সব প্রকার নির্যাতনমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ। গ্রেফতার শ্রমিক নেতাদের নিঃশর্ত মুক্তি ও সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।