তৃতীয় ধাপে উপজেলা পরিষদে নির্বাচিত হলেন যারা
সুজন হাসান | প্রকাশিত: ৩০ মে ২০২৪, ১৩:৩৫
সারাদেশে চলছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। বুধবার (২৯ মে) ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে ৮৭টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করা হয়। ভোট গণনা শেষে রাতে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা।
ঢাকা বিভাগ
নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলা
নরসিংদীর শিবপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ১ম নারী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন ফেরদৌসী ইসলাম। তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর চেয়ে ৬ হাজার ৩৮ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন।
তিনি নরসিংদী-৩ শিবপুর আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মোল্লার স্ত্রী। নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান ফেরদৌসী ইসলাম শিবপুর উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতিরও দায়িত্বে রয়েছেন।
মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলা
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে সাটুরিয়ায় চেয়ারম্যান পদে শাহজাহান আলী বিজয়ী হয়েছেন।
তিনি প্রায় সাড়ে ৭ হাজার ভোটের ব্যবধানে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আমজাদ হোসেন লাল মিয়াকে পরাজিত করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। শাহজাহান আলী জাসদের কেন্দ্রীর কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক।
বুধবার (২৯ মে) রাতে সাটুরিয়া উপজেলার সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে বেসরকারি ফলাফলে জানানো হয়।
জানা গেছে, সাটুরিয়া উপজেলার মোট ৬০টি কেন্দ্রের মধ্যে সবকটি কেন্দ্রের ফলাফলে শাজাহান আলী মোটরসাইকেল প্রতীকে ২২ হাজার ৮৩২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আমজাদ হোসেন লাল মিয়া কাপ-পিরিচ প্রতীকে পেয়েছেন ১৫ হাজার ৩৬১ ভোট।
উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মোট ছয়জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করে। এরমধ্যে ও জাসদের একজন, স্বতন্ত্র একজনসহ আওয়ামী লীগের চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে।
এছাড়ার ভাইস চেয়ারম্যান পদে সোহেল রানা মল্লিক (বিএনপি বহিষ্কৃত), ও মুন্নি আক্তার (বিএনপি বহিষ্কৃত) বিজয়ী হয়েছেন।
টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ার ও নাগরপুর উপজেলা
তৃতীয় ধাপে টাঙ্গাইলের তিনটি উপজেলায় বুধবার (২৯ মে) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উপজেলাগুলো হলো টাঙ্গাইল সদর, দেলদুয়ার ও নাগরপুর। ভোট গণনা শেষে রাতেই ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন মো: তোফাজ্জল হোসেন খান। তিনি ভোট পেয়েছেন ৪২ হাজার ৪৭টি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মুহাম্মদ ফারুক হোসেন পেয়েছেন ৩৫ হাজার ২০৮ ভোট।
দেলদুয়ারে টানা দ্বিতীয়বারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন মাহমুদুল হাসান মারুফ। তিনি পেয়েছেন ২৯ হাজার ২৯৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী এম শিবলী সাদিক পেয়েছেন ১৮ হাজার ৯৫৪ ভোট।
নাগরপুরে ৩৫ হাজার ৭৪৭ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন কে এম সালমান শামস। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুছ ছামাদ পেয়েছেন ১৯ হাজার ৮১৭ ভোট।
ফরিদপুর জেলার সদরপুর ও ভাঙ্গা উপজেলা
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম। আনারস প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৪০ হাজার ৩৩৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী শফিকুর রহমান পেয়েছেন ৩৫ হাজার ৫০৮ ভোট।
অন্যদিকে ভাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান পদে কাওসার ভুইয়া বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। দোয়াত কলম প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৬২ হাজার ৮৭০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের উপসমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক মোখলেছুর রহমান ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ৫০ হাজার ৮৩০ ভোট।
নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জিয়াউল হক খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন, ইটনা, তাড়াইল ও করিমগঞ্জ উপজেলা
মিঠামইন উপজেলায় টানা দ্বিতীয়বারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদের ছোট বোন আলহাজ্ব আছিয়া আলম।
মিঠামইন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি ১০ হাজার ৫ ভোটের ব্যবধানে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীকে পরাজিত করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
কেন্দ্র থেকে পাওয়া ফল অনুযায়ী, মোটর সাইকেল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে আলহাজ্ব আছিয়া আলম পেয়েছেন ২৩ হাজার ৫৬৯ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বোরহান উদ্দিন চৌধুরী বুলবুল (আনারস) পেয়েছেন ১৩ হাজার ৫৬৪ ভোট। এছাড়া ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী মো: শাহজাহান মিয়া পেয়েছেন ৮ হাজার ৭০৫ ভোট।
এদিকে হেভিওয়েট প্রার্থীকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো তাড়াইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী মো: জহিরুল ইসলাম ভূইয়া শাহিন (লাঙ্গল)।
তিনি ৭ হাজার ৯৪ ভোটের ব্যবধানে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীকে পরাজিত করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
কেন্দ্র থেকে পাওয়া ফল অনুযায়ী, লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে মো. জহিরুল ইসলাম ভূইয়া শাহিন পেয়েছেন ৩৯ হাজার ৭২৯ ভোট।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী গিয়াস উদ্দিন লাকী (মোটর সাইকেল) পেয়েছেন ৩২ হাজার ৬৩৫ ভোট।
২০১৯ সালের ২৪ মার্চ অনুষ্ঠিত পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রথমবারের মতো তাড়াইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন মো: জহিরুল ইসলাম ভূইয়া শাহিন। ওই নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মো: আজিজুল হক ভূঞা মোতাহারকে পরাজিত করে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচন হয়েছিলেন।
এবারের নির্বাচনে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী গিয়াস উদ্দিন লাকী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। ফলে দুটি নির্বাচনে তিনি প্রথমে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিকে ও এবার সাধারণ সম্পাদককে পরাজিত করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
মো: জহিরুল ইসলাম ভূইয়া শাহিন তাড়াইল উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টির নেতা মরহুম কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া কাঞ্চনের ছেলে।
এদিকে করিমগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রথমবারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন এডভোকেট মোজাম্মেল হক মাখন (হেলিকপ্টার)। নির্বাচনে তিনি মাত্র ১ হাজার ২৭৬ ভোটের ব্যবধানে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীকে পরাজিত করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
কেন্দ্র থেকে পাওয়া ফল অনুযায়ী, হেলিকপ্টার প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে অ্যাডভোকেট মোজাম্মেল হক মাখন পেয়েছেন ২৭ হাজার ৯২৪ ভোট।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শফিউল আলম জনি (দোয়াত কলম) পেয়েছেন ২৬ হাজার ৬৪৮ ভোট।
এ উপজেলায় জাতীয় পার্টির প্রার্থী আমজাদ হোসেন খান দিদার (লাঙ্গল) পেয়েছেন ১৫ হাজার ৩৭১ ভোট।
এছাড়া কাপ পিরিচ প্রতীকের প্রার্থী ফজলুর রহমান রাজু পেয়েছেন ১১ হাজার ২৫৬ ভোট।
করিমগঞ্জ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মোট ৮জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
এদিকে কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জয়ের হ্যাটট্রিক করেছেন চৌধুরী কামরুল হাসান। কাপ পিরিচ প্রতীয় নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হয়েছেন তিনি। এ নিয়ে তিনি টানা তিনবার ইটনা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন।
কেন্দ্র থেকে পাওয়া ফল অনুযায়ী, নির্বাচনে চৌধুরী কামরুল হাসান ১৮ হাজার ২৭৪ ভোটের ব্যবধানে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীকে পরাজিত করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। কাপ পিরিচ প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৩৫ হাজার ৪৬৪ ভোট।
তার নিকটতম প্রতিদন্দ্বী অ্যাডভোকেট আবুল কাউছার খান মিলকী (মোটর সাইকেল) পেয়েছেন ১৭ হাজার ১৯০ ভোট। এছাড়া এডভোকেট খলিলুর রহমান (আনারস) পেয়েছেন ১২ হাজার ৫২৩ ভোট।
ইটনা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে এই তিনজনসহ মোট পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
চট্টগ্রাম বিভাগ
ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলা
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন এবং ভাইস চেয়ারম্যান পদে শাখাওয়াতুল হক বিটু বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
চেয়ারম্যান পদে দোয়াত কলম মার্কার প্রতীক নিয়ে জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন ৮৬ হাজার ১৭১ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মজিবুর রহমান মানিক লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে ৭২০ ভোট পেয়েছেন।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে টিউবওয়েল প্রতীক নিয়ে শাখাওয়াতুল হক বিটু ৮৩ হাজার ২৫৪ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আইয়ুব আলী হায়দার উড়োজাহাজ প্রতীক নিয়ে তিন হাজার ২০০ ভোট পেয়েছেন। উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা দুই লাখ ৪৪ হাজার ৯০৫ ভোট। ভোট পড়ার হার ৩৬ দশমিক ৪৪ ভাগ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর ও আশুগঞ্জ উপজেলা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে তৃতীয়াবারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম। ঘোড়া প্রতীকে তিনি ৮২ হাজার ৮১৩ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আমিনুল ইসলাম তুষার আনারস প্রতীকে পেয়েছেন দুই হাজার ১৬২।
অন্যদিকে আশুগঞ্জে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য মো. জিয়াউল করিম খাঁন সাজু। মোটরসাইকেল প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৩১ হাজার ২৪৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান চেয়ারম্যান মো. হানিফ মুন্সী ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ২৮ হাজার ৩৪০ ভোট।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জেসমিন সুলতানা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এই ফলাফল বেসরকারিভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। কোনো উপজেলাতেই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
কুমিল্লা জেলার বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া, দেবীদ্বার ও মুরাদনগর উপজেলা
বেসরকারিভাবে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আখলাক হায়দার।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন আবু তৈয়ব অপি। তিনি কুমিল্লা-৫ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য এম এ জাহেরের ভাইয়ের ছেলে।
দেবীদ্বার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যাননির্বাচিত হলেন মামুনুর রশিদ। তিনি কুমিল্লা-৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের ছোট ভাই।
মুরাদনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন ড. আহসানুল আলম সরকার কিশোর। তিনি কুমিল্লা-৩ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর আলম সরকারের ছেলে।
কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলা
উখিয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গির কবির চৌধুরী বিশাল ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেছেন। আনারস প্রতীক নিয়ে জাহাঙ্গির কবির চৌধুরী শেষ পর্যন্ত আবুল মনসুর চৌধুরীকে ১২ হাজার ৬৬৯ ভোটের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করেন।
চেয়ারম্যান পদে আনারস প্রতীকে জাহাঙ্গির কবির চৌধুরীর প্রাপ্ত ভোট ৩৭ হাজার ২০২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আবুল মনসুর চৌধুরী পেয়েছেন ২৪ হাজার ৫৩৩ ভোট।
তাছাড়া পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে সাংবাদিক রাসেল চৌধুরী ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে শাহীনা আক্তার বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
রাঙামাটি জেলার লংগদু ও নানিয়ারচর উপজেলা
রাঙামাটির লংগদু উপজেলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল দাশ বাবু বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল বারেক সরকারকে চার হাজার ১৬০ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে বেসরকারিভাবে জয়লাভ করেছেন।
মোট ২৩টি ভোটকেন্দ্রে আনারস প্রতীকে বাবুল দাশ বাবু পেয়েছেন ১৬ হাজার ৯৮৬ ভোট এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আব্দুল বারেক সরকার ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ১২ হাজার ৮২৬ ভোট।
অন্যদিকে নানিয়ারচর উপজেলার ১৪টি ভোটকেন্দ্রের সবকয়টির ফলাফলে ৬ হাজার ১৫৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আনারস প্রতীকের অমর জীবন চাকমা। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী জ্যোতিলাল চাকমা পেয়েছেন ৪ হাজার ১৬২ ভোট।
খাগড়াছড়ি জেলার লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা
খাগড়াছড়ি জেলার লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের স্থগিত হওয়া দুটি কেন্দ্রের শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণ শেষে ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে।
২৯ মে বুধবার রাত ৮টার দিকে এ ফলাফল ঘোষণা করেন উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারি রির্টানিং অফিসার অনীক চৌধুরী। স্থগিত কেন্দ্রের ফলাফলসহ ঘোষিত ফলাফলে কৈ মাছ প্রতীকের প্রার্থী সুপার জ্যোতি চাকমা ৮ হাজার ২৮৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আনারস প্রতীকের সাথোয়াই অং মারমা পেয়েছেন ৬ হাজার ৮৩ ভোট। মোট প্রদত্ত ভোট ১৫ হাজার ২১৫ ভোট। বাতিল ভোটের সংখ্যা ২৯৭ভোট। ৭১.৪১ ভাগ ভোট পড়েছে।
এদিকে পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে রতন বিকাশ চাকমা টিউবওয়েল প্রতীকে ৮ হাজার ৬১৭ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রাজেন্দ্র চাকমা চশমা প্রতীকে পেয়েছেন ৫ হাজার ৩২১ ভোট। মোট ভোট কাষ্টিং ১৩ হাজার ৯৩৮ ভোট। বাতিল ভোট ৮৩০। ৬৭.৯৯ ভাগ ভোট পড়েছে।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ফুটবল প্রতীকের অয়ক্রইপ্রু মারমা ৮ হাজার ৩০৭ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মিনুচিং মারমা পদ্ধফুল প্রতীক পেয়েছেন ৫ হাজার ৯৮২ ভোট। মোট বৈধ ভোট ১৪ হাজার ২৮৯। বাতিল ভোট ৫৪৯ ভোট। ৬৮.৩১ ভাগ ভোট পড়েছে।
বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুল্যাতলী ইউনিয়নের দেওয়ান পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং লক্ষ্মীছড়ি ইউনিয়নের যতিন্দ্র পাড়া সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের এ ভোট গ্রহণ শুরু হয়। চলে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি উপজেলা
খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলায় বিমল কান্তি চাকমা কাপ পিরিচ প্রতীক ১০ হাজার ১৩৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (এমএন লারমা) প্রার্থী। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কংজরী চৌধুরী আনারস প্রীতিকে পেয়েছেন ৭ হাজার ৮৫২ ভোট।
ভোট গণনা শেষে রাতে বেসরকারিভাবে নির্বাচিতদের ফলাফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা রাজু আহমেদ।
চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ উপজেলা
তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চন্দনাইশ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন আহমেদ।
নির্বাচনে তিনি ভোট পেয়েছেন (মোটরসাইকেল) ৩৮ হাজার ৩৯ ভোট, তার বিপরীতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ঘোড়া প্রতীকের আবু আহমেদ চৌধুরীর জুনু পেয়েছেন ২২ হাজার ৭৪ ভোট।
এ উপজেলায় মোট ৬৮টি ভোটকেন্দ্রে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ভোট অনুষ্ঠিত হয়। তবে এ উপজেলা ভোটারের উপস্থিতি ছিল খুবই কম। প্রাপ্য ভোটের ফলাফল অনুযায়ী জানা যায় এ উপজেলায় ৩২ শতাংশ ভোট পড়েছে।
চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালী উপজেলা
চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন মোহাম্মদ জাহেদুল হক (হেলিকপ্টার)।
তিনি সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছেন ৩০ হাজার ৫৭৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আনারস প্রতীকের মোহাম্মাদ শফিক ভোট পেয়েছেন ১৯ হাজার ১১০ ভোট।
সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এ উপজেলার ৮৬টি ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। তবে এ উপজেলাতেও ভোটারের খরা দেখা দিয়েছে।
এ উপজেলা নারী পুরুষ মিলে ভোটার সংখ্যা হল ২ লাখ ১০ হাজার ৩৬০ ভোট। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলাকালে প্রতিটি ভোট সেন্টারে ভোটারের উপস্থিতি কম থাকলেও দু-একটি ভোটকেন্দ্রের বাইরে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া অন্য কোনো ধরনের বড় ঘটনা ঘটেনি।
রাজশাহী বিভাগ
বগুড়া জেলার শাজাহানপুর ও শিবগঞ্জ উপজেলা
বগুড়া সদরে জেলা যুবলীগ সভাপতি শুভাশীষ পোদ্দার লিটন বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া সদর উপজেলার মোট ১৪৬টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে সবক’টির ফলাফলে শুভাশীষ পোদ্দার লিটন পেয়েছেন ৩৫ হাজার ৭৭১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান চেয়ারম্যান সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু সুফিয়ান সফিক পেয়েছেন ২৪ হাজার ১৮৫ ভোট। অপর প্রার্থী সুলতান মাহমুদ খান রনি পেয়েছেন ২১ হাজার ৫৩৬ ভোট। প্রদত্ত ভোটের হার ১৯ দশমিক ৭৪ ভাগ।
শাজাহানপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মোট ৭২টি কেন্দ্রের মধ্যে ৪২টির ফলাফলে বর্তমান চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন ছান্নু পেয়েছেন ২৪ হাজার ৫৮৭ ভোট বেশি পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। নিকটতম ভিপি সাজেদুর রহমান শাহীন পেয়েছেন ১৯ হাজার ৬৩২ ভোট।
শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মোট ১১৪টি কেন্দ্রের মধ্যে ১১০টির ফলাফলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তা ৭৭ হাজার ১২১ ভোট পেয়ে বিজয়ের পথে। তার নিকটতম বর্তমান চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ রিজু পেয়েছেন ৫৫ হাজার ৪২৮ ভোট। তবে সরকারিভাবে পূর্ণাঙ্গ ফলাফল রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ঘোষণা করা হয়নি
সিলেট বিভাগ
মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলা
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভানু লাল রায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
তার প্রাপ্ত ভোট ৪২ হাজার ৬৬৯। তিনি বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ। তার মার্কা ছিল কাপ-প্লেইট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আছকির মিয়া মোটর সাইকেল প্রতিক নিয়ে ভোট পান ৩৬ হাজার ৮৭৬ ভোট।
এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজু দেব রিটন। তিনি তালা প্রতিক নিয়ে মোট ভোট পান ৫৮ হাজার ৭৬০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোহাম্মদ লিটন আহমেদ টিউবওয়েল প্রতিক নিয়ে ভোট পান ২০ হাজার ৯৯২ ভোট।
এদিকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন হাজেরা খাতুন। তিনি হাস মার্কা নিয়ে নির্বাচন করেন। তার প্রাপ্ত ভোট ৫০ হাজার ৭৩৩। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মিতালী দত্ত ৩৪ হাজার ৫০১ ভোট পান। বেসরকারিভাবে নির্বাচিত তারা তিন জনই আওয়ামীলীগ ঘরণার।
উল্লেখ্য, শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মোট তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন আর মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলা
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পুনরায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছে দেওয়ান তানভীর আশরাফী চৌধুরী।
বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী আওয়ামী লীগ নেতা বর্তমান চেয়ারম্যান দেওয়ান আল তানভীর আশরাফী চৌধুরী (আনারস) প্রতীকে দ্বিতীয় বারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
তার প্রাপ্ত ভোট ২৫ হাজার ৬৬১। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সদ্য বহিষ্কৃত সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ-স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক, দোয়ারাবাজার উপজেলা বিএনপির সদস্য ও বোগলাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম জুয়েল পেয়েছেন ২১ হাজার ২২৯ ভোট (দোয়াত-কলম)।
এতে চার হাজার ৬৩৬ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন।
এদিকে বিএনপি নেতা আরিফুল ইসলাম জুয়েলের কাছে নিজ কেন্দ্রে পরাজিত হওয়াসহ দুই হাজার ৬৯০টি ভোট পেয়ে চতুর্থ হয়েছেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ইদ্রীস আলী বীরপ্রতীক। চেয়ারম্যান পদে অপরপ্রার্থী দেওয়ান আশিদ রাজা চৌধুরী (কাপ পিরিচ) পেয়েছেন ৯৬০ ভোট।
অন্যদিকে ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১১ হাজার ৬৭৩টি ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছে যুবলীগ নেতা প্রভাষক মো: আবু বকর সিদ্দিক (বৈদ্যুতিক বাল্ব)। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদের সভাপতি মো: বশির আহমদ (চশমা) পেয়েছেন ১০ হাজার ৯৪৫টি ভোট ।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে শিরিনা বেগম হাঁস (হাঁস) ১৫ হাজার ৮৯৭টি ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী লাইলী আক্তার লাকী (সেলাই মেশিন) পেয়েছেন ১৩ হাজার ১৮১টি ভোট।
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলা
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে কৃষিমন্ত্রীর সহোদর ও উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মো: ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুল (মোটর সাইকেল) ১৫ হাজার ৯২৮ ভোটের ব্যবধানে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাফেজ মো: আব্দুল ওহাব (বৈদ্যুতিক বাল্ব) ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিলকিস বেগম (পদ্মফুল) নির্বাচিত হয়েছেন। ভোট প্রদানের শতকরা হার ছিল ৪১ ভাগ।
বুধবার (২৯ মে) রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে এই তিন পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করেন সহকারী রিটার্ণিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন।
ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী চেয়ারম্যান পদে মো: ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুল মোটর সাইকেল প্রতীকে ৪৬ হাজার ৬৪০ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য অধ্যাপক মো: রফিকুর রহমান আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৩০ হাজার ৭১২ ভোট। অপর প্রতিদ্বন্দ্বী চা শ্রমিক নেত্রী গীতা রানী কানু ঘোড়া প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২ হাজার ৭৩২ ভোট।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাফেজ মো: আব্দুল ওহাব বৈদ্যুতিক বাল্ব প্রতীকে ৩৯ হাজার ৯৭ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নিরঞ্জন দেব মাইক প্রতীকে পেয়েছেন ১৪ হাজার ৯৬১ ভোট। এছাড়া অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে মোহাম্মদ আলমগীর চৌধুরী চশমা প্রতীকে পেয়েছেন ১০ হাজার ৯৩৬ ভোট, মো: সিদ্দেক আলী তালা প্রতীকে পেয়েছেন ৮ হাজার ৩২৯ ভোট ও সুনীল কুমার মৃধা টিউবওয়েল প্রতীকে পেয়েছেন ৬ হাজার ৯৫ ভোট।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিলকিস বেগম পদ্মফুল প্রতীকে ৪১ হাজার ৬৪৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হযেছেন। তার নিকটতম ও একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী মুন্না দেব রায় ফুটবল প্রতীকে পেয়েছেন ৩৫ হাজার ৯৮১ ভোট।
এদিকে বুধবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই উপজেলার ৭৩টি কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিতত হয়।
রংপুর বিভাগ
নীলফামারী সদর
নীলফামারী সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নীলফামারী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুজার রহমান বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলা
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুন্নবী চৌধুরী পুনরায় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
তিনি ঘোড়া প্রতীকে ৪৭ হাজার ৭৩১ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক এ কে এম ফরিদুল হক শাহিন শিকদার মোটরসাইকেল প্রতীকে ৩৫ হাজার ৫৬২ ভোট পেয়েছেন।
ভাইস চেয়ারম্যান পুরুষ পদে শাহজাহান আলী সোহাগ উড়োজাহাজ প্রতীকে ৪৪ হাজার ৫৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মাহমুদুল হাসান। তিনি টিউবওয়েল প্রতীকে ২৭ হাজার ৯০০ ভোট পেয়েছেন।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ফরিদা পারভীন ফুটবল প্রতীকে ৪৮ হাজার ১৯২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মনোয়ারা বেগম সেলাইমেশিন প্রতীকে ২৭ হাজার ৩১১ ভোট পেয়েছেন।
ভূরুঙ্গামারী উপজেলার ইউএনও ও রিটার্নিং অফিসার গোলাম ফেরদৌস বলেন, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আবুজার রহমান ৪৮ হাজার ৫৩৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা দীপক চক্রবর্তী পান ২৭ হাজার ৯৪৬ ভোট।
ভোট গণনা শেষে রাত সাড়ে ৮টার দিকে বেসরকারি ভাবে এই ফলাফল ঘোষণা করেন সহকারি রিটানিং অফিসার মেহেদী হাসান।
এদিকে ভাইস চেয়ারম্যান পদে জ্যোতিময় রায় খোকন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সান্তনা চক্রবর্তী বেসরকারি ভাবে বিজয়ী হয়েছেন।
দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দর উপজেলা
দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সুনীল কুমার সাহা (দোয়াত-কলম)।
ভোট গণণা শেষে চেয়ারম্যান পদে সুনীল কুমার সাহা (দোয়াত কলম) ৩৭ হাজার ৯৭৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোস্তাফিজার রহমান ফিজার (ঘোড়া) পেয়েছেন ১৯ হাজার ১৪৯ ভোট, এছাড়াও অধ্যক্ষ মো: আহসানুল হক মুকুল পেয়েছেন ১৭ হাজার ৬২৯ ভোট, জ্যোতিশ চন্দ্র রায় (মোটরসাইকেল) ১২ হাজার ৪৭৬ ভোট, মোকাররম হোসেন (আনারস) পেয়েছেন ৯ হাজার ৫৬৯ ভোট।
উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা এ এস এম সাইফুর রহমান বলেন, চিরিরবন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন ও সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। উপজেলায় ১২টি ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৫৮ হাজার ৩৮৯। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৩০ হাজার ১২৬ জন ও মহিলা ১ লাখ ২৮ হাজার ২৬২ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ১ জন। ৯৫টি কেন্দ্রে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোট শান্তিপুন্নভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
ময়মনসিংহ বিভাগ
জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ ও মেলান্দহ উপজেলা
জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন রায়হান রহমতুল্লাহ। তিনি মাদারগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। অপরদিকে মেলান্দহ উপজেলায় বিজয়ী হয়েছেন মো: দিদারুল পাশা। তিনি জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বলে জানা গেছে।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটানিং অফিসারের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, মাদারগঞ্জ উপজেলায় রায়হান রহমতুল্লাহ (রিমু) কাপ পিরিচ প্রতীকে ৪৮ হাজার ৬১৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান উপজেলার চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর রহমান (বেলাল) দোয়াত-কলম প্রতীকে পেয়েছেন ২৮ হাজার ২৩৪ ভোট।
অপরদিকে মেলান্দহ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মো: দিদারুল পাশা (দিদার পাশা) মোটরসাইকেল প্রতীকে ৭৮ হাজার ৬৬৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী এমদাদুল ইসলাম (এমদাদ) আনারস প্রতীকে ১২ হাজার ৩১১ ভোট পেয়েছেন। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
মেলান্দহ উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভার ১১০টি ভোটকেন্দ্রে এবং মাদারগঞ্জ উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ৬৩টি ভোটকেন্দ্রে ইলেকট্রনিক্স ভোটিং মেশিন (ইভিএমএ) মাধ্যমে সকাল ৮টা বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন তৃতীয় ধাপে বুধবার (২৯ মে) জামালপুরের দু’টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।