বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, ২৮ কার্তিক ১৪৩২

অক্টোবরে সড়কে ঝরেছে ৪৬৯ প্রাণ

নিউজ ডেস্ক | প্রকাশিত: ১২ নভেম্বর ২০২৫, ১৮:০০

সংগৃহীত

গত অক্টোবর মাসে সারা দেশে মোট ৫৩২টি সড়ক, রেল ও নৌ দুর্ঘটনায় ৫২৮ জন নিহত এবং ১৩১০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

বুধবার (১২ নভেম্বর) সংগঠনটির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন গণমাধ্যমে প্রকাশিত দুর্ঘটনার সংবাদ পর্যালোচনা করে যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধু সড়ক দুর্ঘটনাই ঘটেছে ৪৬৯টি, যেখানে নিহত হয়েছেন ৪৬৯ জন এবং আহত ১,২৮০ জন। নৌপথে ১১টি দুর্ঘটনায় ১২ জন নিহত এবং ১ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

বিভাগভিত্তিক দুর্ঘটনা চিত্র

প্রতিবেদন অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে— এখানে ১২৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৩০ জন নিহত ও ৩৪৩ জন আহত হয়েছেন।

সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহ বিভাগে, যেখানে ২০টি দুর্ঘটনায় ২৭ জন নিহত ও ৩৭ জন আহত হন।

মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার উদ্বেগজনক চিত্র

অক্টোবর মাসে ১৭০টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৭৬ জন নিহত ও ১৩৭ জন আহত হয়েছেন। এটি মোট দুর্ঘটনার ৩৬.২৪ শতাংশ, নিহতের ৩৭.৫২ শতাংশ এবং আহতের ১০.৭০ শতাংশ।

নিহত ও আহতদের পেশাভিত্তিক বিশ্লেষণ

প্রতিবেদনে দেখা যায়, দুর্ঘটনায় আক্রান্তদের মধ্যে—

৫০ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য,

১৩৯ জন চালক,

১১৯ জন পথচারী,

২৭ জন পরিবহন শ্রমিক,

৩৮ জন শিক্ষার্থী,

১৪ জন শিক্ষক,

৯৭ জন নারী,

৪০ জন শিশু,

১ জন আইনজীবী,

২ জন সাংবাদিক,

৩ জন প্রকৌশলী এবং

১৮ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী রয়েছেন।

এর মধ্যে নিহত হয়েছেন ৪ জন পুলিশ সদস্য, ১ জন র‌্যাব সদস্য, ১ জন বিজিবি সদস্য, ১ জন আইনজীবী, ৩ জন প্রকৌশলী, ১৩৩ জন চালক, ৯৯ জন পথচারী, ৫৮ জন নারী, ৩৫ জন শিশু, ৩৫ জন শিক্ষার্থী, ১৪ জন শ্রমিক, ১৩ জন শিক্ষক ও ১৪ জন রাজনৈতিক নেতাকর্মী।

দুর্ঘটনাগ্রস্ত যানবাহনের ধরন

এই সময় মোট ৭৭২টি যানবাহনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এর মধ্যে—

২৫.৯০% মোটরসাইকেল,

২১.২৪% ট্রাক, পিকআপ ও কাভার্ডভ্যান,

১৬.০৬% বাস,

১২.৮০% ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক,

৮.৪১% নছিমন, করিমন, মাহিন্দ্রা, ট্রাক্টর ও লেগুনা,

৪.৭৯% কার, জিপ ও মাইক্রোবাস এবং

৪.২৭% সিএনজিচালিত অটোরিকশা দুর্ঘটনায় জড়িত ছিল।

দুর্ঘটনার ধরন ও স্থান

দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে—

৪৯.৮৯% গাড়ি চাপা,

২৫.১৫% মুখোমুখি সংঘর্ষ,

১৯.৬১% নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়া,

৪.৬৯% বিবিধ কারণে এবং

০.৬৩% ট্রেন–যানবাহনের সংঘর্ষে ঘটে।

অন্যদিকে, দুর্ঘটনার স্থান বিশ্লেষণে দেখা যায়—

৪২.৪৩% জাতীয় মহাসড়কে,

২৩.৬৬% আঞ্চলিক মহাসড়কে,

২৭.২৯% ফিডার রোডে,

৪.৬৯% ঢাকা মহানগরে,

১.২৭% চট্টগ্রাম মহানগরে এবং

০.৬৩% রেলক্রসিং এলাকায় সংঘটিত হয়েছে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতি বলেছে, প্রতিবেদনটি সড়ক নিরাপত্তা ও দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সরকারি-বেসরকারি পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

 

এনএফ৭১/ওতু



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top