গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে খালেদা জিয়া: হার্ট ও ফুসফুসে সংক্রমণ!
নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৩৯
বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে গত ২৩ নভেম্বর, রোববার গভীর রাতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে চলছে তাঁর চিকিৎসা। কিন্তু কেন তাঁকে এত দ্রুত হাসপাতালে নিতে হলো? বিএনপি চেয়ারপার্সনের জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকী গভীর রাতে সাংবাদিকদের জানান, বেগম জিয়ার হার্ট এবং চেস্ট (ফুসফুস) ইনফেকশন হয়েছে। তিনি বলেন, গত কয়েক মাস ধরে তিনি ঘন ঘন অসুস্থ হচ্ছিলেন, তবে এবার বেশ কয়েকটি সমস্যা একসাথে দেখা দিয়েছে।
চিকিৎসক জানান, যেহেতু তাঁর হার্টের সমস্যা আগে থেকেই ছিল, পেসমেকার বসানো আছে এবং রিং পরানো হয়েছিল, তারপরেও তাঁর মাইট্রোস্টেনোসিস নামে একটি কন্ডিশন রয়েছে। এই অবস্থায়, বুকে বা ফুসফুসে সংক্রমণ হওয়ায় তাঁর হার্ট এবং ফুসফুস দুটোই একই সময়ে আক্রান্ত হয়েছে। এর ফলে তিনি তীব্র শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা বা রেসপিরেটরি ডিস্ট্রেসে ভুগছিলেন। এই কারণেই তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে এনে জরুরি চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
হাসপাতালে আনার পর দ্রুত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাৎক্ষণিকভাবে অ্যান্টিবায়োটিকসহ জরুরি চিকিৎসা শুরু করা হয়েছে। তিনি বর্তমানে ২৪ ঘণ্টার নিবিড় পর্যবেক্ষণে আছেন এবং চিকিৎসকরা পরবর্তী ১২ ঘণ্টাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন। অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধায়নে গঠিত এই মেডিকেল বোর্ডে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞরা ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন।
প্রায় ৮০ বছর বয়সী এই নেত্রীর জীবন বাংলাদেশের ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ব্যবসায়ী পিতার কন্যা খালেদা জিয়া সেনা কর্মকর্তা জিয়াউর রহমানের সঙ্গে পরিণয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের নানা ঘটনাপ্রবাহের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় তিনি দুই সন্তানসহ বন্দিজীবন কাটান।
১৯৮১ সালে স্বামী প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর, তিনি মূলত গৃহবধূ থেকে রাজনীতিতে আসেন। তেমন কোনো রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা না থাকলেও তিনি বিএনপি'র হাল ধরেন এবং রাজনীতিতে দ্রুত সাফল্য লাভ করেন। আপসহীন নেত্রী হিসেবে পরিচিতি পাওয়া খালেদা জিয়া তিনবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। নির্বাচনের ইতিহাসে তাঁর একটি অনন্য রেকর্ড হলো—পাঁচটি সংসদ নির্বাচনে ২৩ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সবকটিতেই জয়ী হওয়া।
তবে তাঁর রাজনৈতিক জীবন সমালোচনার ঊর্ধ্বে ছিল না। যার জের ধরে তিনি দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাগারেও গেছেন। ওয়ান ইলেভেনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলেও তিনি গ্রেফতার হন এবং দীর্ঘ কারাবাসের পর আইনি লড়াই করে মুক্তি পান। বর্তমানে তিনি শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।
বিষয়:

পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।