দৈব আদেশে স্ত্রীকে হাতি কিনে দিলেন দিনমজুর স্বামী
ডেস্ক রিপোর্ট | প্রকাশিত: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৮:৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রায় ১০ বছর স্ত্রী তুলশী রানী দাসী দেব দেবীর পূজা করে আসছেন। সপ্তাহ দুয়েক আগে স্বপ্নের মধ্যে স্বয়ং পরমেশ্বর ভর করেন তুলশী রানী দাসীর উপর। স্বপ্নে পরমেশ্বর তাকে একটি হাতি কিনতে বলে।
স্বপ্নের কথা তুলশী রানী দাসী স্বামী দুলাল চন্দ্রকে জানায়। এতে বিপাকে পড়ে যান দরিদ্র দুলাল চন্দ্র। স্ত্রীর ওপর পরমেশ্বর ভর করে বিভিন্ন আদেশ দিয়ে থাকে। কিন্তু পরমেশ্বরের আদেশ লঙ্ঘনের দু:সাহস হয়না তার।
দুলাল চন্দ্র রায় এর সাথে তুলশী রানীর বিয়ে হয় ২০ বছর আগে। এক পুত্র ও এক কন্যা রয়েছে তাদের। স্ত্রী তুলসীর ওপর পরমেশ্বর ভর করলে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। অনেকে বলে তাকে ভূতে ধরেছে। আর স্ত্রীকে সুস্থ করতে নানান চেষ্টা করে যাচ্ছেন স্বামী।
স্ত্রী তুলসীর ওপর ভূত (পরমেশ্বর) ভর করে নানান দাবি করে। প্রথমে দাবি করে হাসঁ জবাই করলে তুলসীকে ছেড়ে যাবে সেই ভূত। হাস জবাই করেও গেল না ভূত। পরবর্তীতে দাবি করে একটি ঘোড়া কিনতে হবে।
দরিদ্র দিনমজুর দুলাল তার স্ত্রীকে তুলসীকে রক্ষায় ৪ বিঘা জমির মধ্যে ১ বিঘা জমি বিক্রি করে একটি ঘোড়া কিনে আনেন। কিন্তু তাতেও ভূত স্ত্রীকে ছেড়ে না গিয়ে উল্টো দাবি করে হাতি কিনতে হবে। অবশেষে দুলাল তার স্ত্রীকে রক্ষায় বাড়ির বাকি তিন বিঘা আবাদী জমি বিক্রি ও বসতবাড়ী বন্ধক, ধার-দেনা করে ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকায় হাতি কিনে আনেন।
এমন ঘটনা ঘটে লালমনিরহাট সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের দেউতিরহাট রতিধর এলাকায়। ঘটনার কথা জানতে পেরে দুলাল চন্দ্রের বাড়িতে এখন মানুষের ঢল নেমেছে।
সিলেট বিভাগের মৌলভী বাজার জেলা থেকে হাতিটি ক্রয় করে নিয়ে আসে ট্রাকে। শুক্রবার গরিবের বাড়িতে হাতির পা দেখে হাজারো দর্শক ভিড় করে।
এদিকে মৌলিভীবাজার থেকে হাতি নিয়ে আসতে ট্রাক ভাড়া লাগে ২০ হাজার টাকা। গাছ বিক্রি করে দেয়া হয় ট্রাকের ভাড়া। সাথে হাতি পোষ মানার জন্য সিলেট থেকে নিয়ে আসা হয়েছে শরীফুল নামের একজনকে। তার মাসিক বেতন ১৫ হাজার টাকা।
শরিফুল জানান, হাতি প্রতিদিন ১০টি কলা গাছ, ৩ কেজি ভুসি, ২ কেজি গুড়, ২টি কলার ছড়া খায়। প্রতিমাসে হাতি পালতে প্রায় ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা লাগবে।
দুলাল চন্দ্র জানান, সম্পত্তির চেয়ে আমার কাছে আমার স্ত্রীর আবদার বড়।
স্ত্রী তুলসী রানী জানান, ভগবানের দয়ায় যেহেতু হাতি এসেছে এখন কিছুটা সুস্থ।
পঞ্চগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যন মোঃ দেলোয়ার হোসেন জানান, দুলাল চন্দ্র হাতির খরচ কিভাবে সংগ্রহ করবে তা নিয়ে রয়েছে তার দুচিন্তা। কিন্তু তার বউয়ের প্রতি যে এত ভালোবাসা তা দেখে খুশি এলাকাবাসী।
এনএফ৭১/আরআর/২০২০
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।