কেন সংঘর্ষে উত্তাল ইসরায়েল-ফিলিস্তিন, নিহত কত?
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ৮ অক্টোবর ২০২৩, ১১:৩১
আবারও উত্তাল ফিলিস্তিন-ইসরায়েল। এখনো হামাস ও ইসরায়েলি বাহিনীর মধ্যে তুমুল লড়াই চলছে। কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ এটি। গাজা থেকে হামাসের রকেট হামলায় ইসরায়লে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২০০ জনে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে ইসরায়েলি বাহিনীর পাল্টা হামলায় গাজায় নিহত ২৩২ জন ছাড়িয়েছে। উভয় দেশে আহতের সংখ্যা হাজারের বেশি। খবর বিবিসি ও সিএনএনের।
দেশটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে বড় ভুল করেছে হামাস। এর পরিণতি ভোগ করতে হবে। অন্যদিকে হামাস দাবি করেছে, তারা কয়েক ডজন ইসরায়েলি সেনাকে বন্দী করেছে। তবে এই সংখ্যার পরিমাণ জানানো হয়নি।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েক বছরের মধ্যে ইসরায়েলের ওপর এটিই হামাসের সবচেয়ে বড় ধরনের হামলা। ফিলিস্তিন স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইসরায়েল বাহিনীর হামলায় একজন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও অনেকে। ইসরায়েল বলছে, গাজায় হামাসের স্থাপনা লক্ষ্য করে যুদ্ধ বিমান দিয়ে হামলা চালানো হচ্ছে।
সিএনএন জানিয়েছে, ইসরায়েল নতুন করে সেনা সমাবেশের ডাক দিয়েছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, গাজা সীমান্ত সংলগ্ন ২২টি এলাকায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে ইসরায়েলি সেনাদের লড়াই চলছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইসরায়েল সরকার দেশজুড়ে ৪৮ ঘণ্টার জরুরি অবস্থা জারি করেছে।
এদিকে ইসরায়েলি জনগণের উদ্দেশে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরায়েল যুদ্ধের মধ্যে আছে। গাজার শাসক হামাসের উদ্দেশে তিনি বলেন, তাদের এমন মূল্য দিতে হবে, যা সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণা নেই।
এক ভিডিও বার্তায় নেতানিয়াহু বলেন, শনিবার সকালে হামাস ইসরায়েল ও এর নাগরিকদের বিরুদ্ধে অকস্মাৎ প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজার সন্ত্রাসীদের নিশ্চিহ্ন করা হবে বলে ঘোষণা করে বলেছে, বিমান হামলার পর সেখানে সেনা অভিযান চালানো হবে।
অপরদিকে, হামাসের হামলার নিন্দা জানিয়েছে ইসরায়েলের অন্যতম প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউস বলেছে—আমরা ইসরায়েল সরকার ও জনগণের সঙ্গে আছি।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, ওয়াশিংটন বেসামরিক সম্প্রদায়সহ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামাস সন্ত্রাসীদের ভয়ঙ্কর হামলার তীব্র নিন্দা জানায়। সন্ত্রাসবাদের কোনো যুক্তি নেই। আমরা ইসরায়েলের সরকার ও জনগণের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছি এবং এই হামলায় নিহত ইসরায়েলীদের জন্য সমবেদনা জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে ব্লিঙ্কেন বলে, আমরা আমাদের ইসরায়েলি অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখব। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারকে সমর্থন করে।
মার্কিন সামরিক প্রধান লয়েড অস্টিন বলেছেন, সহিংসতা ও সন্ত্রাসবাদ থেকে নাগরিকদের রক্ষার জন্য ইসরায়েলকে প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিত করতে কাজ করবে প্রতিরক্ষা বিভাগ।
ইসরায়েলের মিত্র ন্যাটো জোট ও ইউরোপীয় কমিশন এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। ন্যাটো বলেছে, ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। এ ছাড়া যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইউক্রেন, চেক প্রজাতন্ত্র, বেলজিয়াম, ইতালি, জাপান, পোল্যান্ড ও স্পেন হামাসের হামলার নিন্দা জানিয়েছে।
ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পথে থাকা সৌদি আরব ও মিসর অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধের আহবান জানিয়েছে। এ ছাড়া রাশিয়াও সহিংসতা বন্ধের আহবান জানিয়েছে।
অন্যদিকে ইসরায়েলের প্রধান শত্রু ইরান হামাসের হামলায় সমর্থন দিয়েছে। দেশটির সর্বোচ্চ নেতার উপদেষ্টা রহিম সাফাভি বলেছেন, আমরা ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের অভিনন্দন জানাচ্ছি। ফিলিস্তিন ও জেরুজালেম স্বাধীন না হওয়া পর্যন্ত আমরা তাদের সঙ্গে আছি। সূত্র : এএফপি, আলজাজিরা
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।