বিবিসি সাংবাদিকের স্ত্রী ও দুই মেয়েকে হত্যা, সন্দেহভাজন গ্রেপ্তার
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১১ জুলাই ২০২৪, ১৯:১৩
বিবিসির এক সাংবাদিকের স্ত্রী ও তার দুই মেয়েকে দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনায় কাইল ক্লিফোর্ড নামে সন্দেহভাজন এক যুবকরকে গ্রেপ্তার করেছে স্থানীয় পুলিশ। গতকাল বুধবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটের দিকে উত্তর লন্ডনের এক কবরস্থানের কাছে তাকে আহত অবস্থায় পাওয়া যায়।
এর আগে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিবিসি ফাইভ লাইভের রেসিং বিভাগের ধারাভাষ্যকার জন হান্টের স্ত্রী ও দুই কন্যাকে তাদের পূর্ব ইংল্যান্ডের হার্ডফোর্ডশায়ারের বুশি শহরের বাড়িতে ক্রসবো দিয়ে হামলা চালিয়ে হত্যা করা হয়।
লন্ডন থেকে ২০ মাইল উত্তরপশ্চিমে বুশি শহরের অ্যাশলি ক্লোজ এলাকার এক বাড়িতে ক্যারল হান্ট (৬১), হান্নাহ হান্ট (২৮) এবং লুইস হান্টকে (২৫) গুরুতর আহত অবস্থায় পুলিশ উদ্ধার করেন। এর কিছুক্ষণ পরেই ঘটনাস্থলেই তিনজনের মৃত্যু হয়।
ব্রিটিশ পুলিশ জানায়, ক্লিফোর্ডকে গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে বড় ধরনের তল্লাশি অভিযান শুরু করা হয়। ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে কিছু দিন কাজ করার পর দুই বছর আগে চাকরি ছেড়ে দেন ক্লিফোর্ড। পুলিশের ধারণা, নিহতদের সঙ্গে ক্লিফোর্ডের পূর্ব পরিচয় ছিল। ঘটনার সময় ক্রসবোর পাশাপাশি অন্য অস্ত্রও ব্যবহৃত হয়েছিল। পুরো এই ঘটনার তদন্ত চলছে বলে খবরে বলা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত তিন শিশুর মধ্যে দুই ও ছয় বছরের দুই ছেলে এবং পাঁচ মাস বয়সী একটি কন্যাশিশু রয়েছে। অন্য চার ছোট শিশু হাসপাতালে স্থিতিশীল অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে এবং তাদের মাকে চিকিৎসার পর হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
২৮ বছর বয়সী অভিযুক্ত বাবার বিরুদ্ধে সিডনির একটি আদালতে তিনটি হত্যা এবং পাঁচটি হত্যার চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করে পুলিশ। আদালত তার জামিন আবেদন খারিজ করে পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে।
নিউ সাউথ ওয়েলসের গোয়েন্দা সুপারিনটেনডেন্ট ড্যানিয়েল ডোহার্টি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দরজাগুলো আটকে দিয়েছিল, যেন ভেতরে থাকা পরিবার পালাতে না পারে এবং বাড়ির বাইরে দাড়িয়েছিল।
এসময় একজন প্রতিবেশী সাহসিকতার সাথে জোর করে ভেতরে প্রবেশ করেন, চার ও সাত বছর বয়সী দুই ছেলে এবং নয় বছর বয়সী একটি মেয়েকে উদ্ধার করেন। কিন্তু বাবা তার ১১ বছরের ছেলেকে বাঁচাতে বাধা দেন বলে অভিযোগ করেন প্রতিবেশী।
তিনি আরও জানান, কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানে পুলিশ এসে পৌঁছায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। তবে অভিযুক্ত ব্যক্তি পুলিশের সঙ্গেও ধস্তাধস্তি করে। এক পর্যায়ে লোকটিকে দমাতে সফল হয় পুলিশ। একটি দাম্পত্য কলহের জেরেই এই ‘ভয়াবহ খুনের ঘটনা’ ঘটতে পারে।
পুলিশের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে হ্যালো ম্যাগাজিনের ইউটিউব চ্যানেলের একটি নিউজে বলা হয়েছে , এ খুনের পেছনে রয়েছে প্রেম । তবে এটি প্রাথমিক ধারণা। হান্টের কোনো মেয়ের সাথে খুনীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। যা মেনে নেননি হান্ট পরিবার। কিন্তু ওই প্রতিবেদনেই বলা হয়ে একজন ফ্যাক্ট চেকারের বরাতে, এ তথ্য সত্য নাও হতে পারে। কারণ হান্টের কন্যা ও খুনী প্রাপ্তবয়স্ক। এখানে বাধা দেওয়ার কিছু নেই যদি কোনো প্রেম এদের মধ্যে থেকেও থাকে।
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।