বৃহঃস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সুপারফুড চিয়া চাষে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন লালমনিরহাটের কৃষক জাহিদুল

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, ০৯:০৩

সংগৃহীত

পুষ্টি ও ঔষধি গুন সম্পন্ন সুপারফুড চিয়া বীজ চাষ করে জেলায় আলোড়ন তৈরি করেছে হাতীবান্ধা উপজেলার কৃষক জাহিদুল ইসলাম। এলাকার মানুষের কাছে জাহিদুল আদর্শ কৃষক হিসেবেই পরিচিত। জাহিদুলের মতো অনেকেই এখন চিয়া চাষের স্বপ্ন বুনছেন।

কৃষক জাহিদুলের চিয়া চাষে উদ্বুদ্ধ হয়ে হাতীবান্ধা উপজেলার অনেক কৃষক ক্ষতিকর তামাক চাষ বাদ দিয়ে পুষ্টি ও ঔষধি গুনসম্পন্ন সুপারফুড চিয়া চাষে ঝুকছে। চিয়া চাষে কৃষকদের আর্থিক ও সামাজিক অবস্থার উন্নিতিসহ মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণ ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ব্রত নিয়েছে এ এলাকার কৃষকরা।

আরও পড়ুন: কোটালীপাড়ায় ইংলিশ টিচার্স এসোসিয়েশনের ১১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন

গত বছর কৃষক জাহিদুলের ৩৫ শতাংশ জমিতে চিয়া চাষ করে ভালো ফলন ও লাভ হয়। তাই তিনি এলাকার সব কৃষকদের চিয়া চাষে উদ্বুদ্ধ করেন। ভালো ফলন ও লাভের আশায় জাহিদুল এবার প্রায় ১ একর ৫০ শতক জমিতে দানাদার খাদ্য চিয়া চাষ করছেন।

হাতীবান্ধা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, সুপারফুড চিয়া বীজ সালভিয়া হিসপানিকা নামক মিন্ট প্রজাতির উদ্ভিদের ভোজ্য বীজ। এটি মধ্য আমেরিকা ও মেক্সিকোর মরুভূমি এলাকার উদ্ভিদ। চিয়া বীজ দেখতে অনেকটা তোকমা দানার মতো। আকারে তিলের মতো সাদা ও কালো রঙের হয়ে থাকে। এক বিঘা জমিতে চিয়া চাষে সার, বীজ, সেচ ও পরিচর্যা বাবদ খরচ হয় ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। আর প্রতি বিঘায় ১০০ থেকে ১২০ কেজি চিয়া ফলন পাওয়া যায়। প্রতি কেজি চিয়া বীজের বাজার মূল্য ৮ থেকে ৯শত টাকা।

জানা গেছে, চিয়া বীজে প্রচুর পরিমাণে আ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। যার ফলে শরীরের শক্তি ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। চিয়া বীজে ওমেগা-৩ ফ্যাটি আ্যাসিড থাকায় দেহের পাচনতন্ত্র ও মেটাবলিজমের জন্য অনেক উপকারী এই বীজ। এছাড়াও পাচন প্রক্রিয়া ঠিক রাখায় কমতে পারে ওজন। এই বীজ ত্বক,নাক ও চুল সুন্দর রাখে ও ক্যানসার রোধ করে। ব্লাড সুগার স্বাভাবিক রাখে এবং ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমায়।

কৃষক জাহিদুল ইসলাম বলেন, চিয়া বীজ সম্পর্কে টিভিতে একটা প্রতিবেদন দেখি। তারপর হাতীবান্ধা উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে গত বছর ৩৫ শতক জমিতে চিয়া লাগাই। তাতে অন্যান্য ফসলের তুলনায় চিয়ায় বেশি লাভ হয়। সেই থেকে এলাকার কৃষকদের ক্ষতিকর তামাক চাষ বর্জন করে চিয়া চাষে উদ্বুদ্ধ করছি। তামাক চাষে জমির উর্বরতা নষ্ট হয়। এ বছর ১ একর ৫০ শতক জমিতে চিয়া চাষ করেছি। এর পাশাপাশি আদা, পেঁয়াজ ও ভুট্টা চাষ করছি। চিয়া বীজে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন আছে। আর্থিক ও সামাজিক অবস্থার উন্নয়নসহ মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে চিয়া বীজের বিকল্প নাই।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হামিদুর রহমান বলেন,পুরো জেলায় ৮ একর জমিতে চিয়া চাষ হচ্ছে। এটা লাভজনক ভেষজ ফসল। জেলায় গত বছর ৬ একর জমিতে চিয়া চাষ হয়েছিলো। লাভজনক ফসল হওয়ায় অনেকেই চিয়া চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। এ ফসল মানব স্বাস্থ্যের জন্য অত্যান্ত উপকারী। প্রযুক্তিগত দিক থেকে চিয়া চাষীদের সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। এ ফসল ফলানো থেকে শুরু করে না ওঠা পর্যন্ত কৃষকের দ্বারপ্রান্তে গিয়ে আমাদের প্রতিনিধিরা পরামর্শ দিচ্ছেন।

সূত্র : বাসস




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top