রবিবার, ৬ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১

আজ ইতিহাসের বিভীষিকাময় ৯/১১

ডেস্ক রিপোর্ট | প্রকাশিত: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৫:২৯

টুইন টাওয়ারে হামলাছবি: ইন্টারনেট

ডেস্ক রিপোর্ট:

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর। আজ থেকে ১৯ বছর আগে এ দিন আত্মঘাতী বিমান হামলা চালিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রের গর্ব নিউইয়র্কের টুইন টাওয়ার ধ্বংস করা হয়। হামলায় নিহত হন প্রায় ৩ হাজার মানুষ।

অন্যদিনগুলোর মতোই সেদিন জেগে উঠেছিল নিউইয়র্ক নগরী। স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৪৬ মিনিটে ‘টুইন টাওয়ার’ হিসেবে পরিচিত বিশ্বের অন্যতম উঁচু ভবন দুটিতে আঘাত হানে সন্ত্রাসীদের দখল করা দুটি যাত্রীবাহী বিমান। মুহুর্তেই নিউইয়র্কের আকাশ ঢেকে যায় কালো ধোঁয়ায়। সবার চোখের সামনে মুখ থুবড়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি ও গৌরবের প্রতীক ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার।

এর কিছুক্ষণ পরই আরেকটি বিমান থেকে হামলা চালানো হয় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক গৌরবের প্রতীক ওয়াশিংটনের পেন্টাগনেও। এছাড়া পেনসিলভানিয়ায় অপর একটি বিমান দিয়ে হামলার চেষ্টা ব্যর্থ হয়। চারটি বিমান ছিনতাই করে ১৯ সন্ত্রাসী এ হামলায় অংশ নিয়েছিলো। আত্মঘাতি হামলায় তাদের সবাই নিহত হয়েছিলো। এই ঘটনায় প্রাণ হারান টুইন টাওয়ার ও এর আশপাশে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনে ৩৪৩ জন দমকল কর্মী ও ৬০ পুলিশ কর্মকর্তাসহ ২ হাজার ৭৪৯ জন।

নিহতদের বেশির ভাগই বেসামরিক নাগরিক। যাদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশু ছিলো। অপরদিকে, পেন্টাগনে আত্মঘাতী বিমান হামলায় নিহত হন ১৮৪ জন। পাশাপাশি উদ্ধারকাজ চালাতে গিয়ে যারা আহত, অসুস্থ এবং বিষক্রিয়ার শিকার হয়েছিলেন তাদের মধ্যে ৮৩৬ জন পরে মৃত্যুবরণ করেন।

হামলার আল-কায়দাকে দায়ি করে বিশ্বব্যাপি আমেরিকার নেতৃত্বে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হয়। দীর্ঘ অভিযানে আফগানিস্তানে  আল-কায়েদার নেটওয়ার্ক ধ্বংস করে দেয়া হয়। মার্কিন বাহিনীর হাতে নিহত হন সংগঠনটির প্রধান ওসামা বিন লাদেন।

যুক্তরাষ্ট্রের চাপিয়ে দেওয়া সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধে ইরাক, আফগানিস্তানকে দিতে হয়েছে চড়া মূল্য। মাশুল গুনতে হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশকে। রোড আইল্যান্ডের ব্রাউন ইউনিভার্সিটির ওয়াটসন ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের ‘কস্ট অব ওয়ার’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, ১/১১ এর হামলার পর থেকে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে কমপক্ষে ২ লাখ ৩৬ হাজার ৫০০ মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশ বেসামরিক নাগরিক।

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর চালানো হামলায় নিহত হন ২ হাজার ৯৯৫ জন। এর ফলে অর্থনৈতি ক্ষতি হয় ৫ থেকে ১০ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি। শুধু যুক্তরাষ্ট্রই নয়, নাইন-ইলেভেনের প্রভাব পড়েছিল গোটা বিশ্বে। এই একটি ঘটনা পাল্টে দেয় গোটা যুক্তরাষ্ট্রের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা। দীর্ঘদিন ধরে এ হামলার জের টানতে হয় যুক্তরাষ্ট্রকে। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে দেশটির ঋণের খাতায় যোগ হয়েছে প্রায় ৪০০ কোটি ডলার। যার বেশিরভাগই ব্যয় হয়েছে যুদ্ধ ও জাতীয় নিরাপত্তা খাতে।

ওয়ান-ইলেভেনের বিপর্যয় থেকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে আমেরিকা। ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞের ওপর আবার গৌরবের সঙ্গে দাঁড়িয়েছে ফ্রিডম টাওয়ার। বিশাল বাজেট হাতে নিয়ে এর নির্মাণ শুরু হয় ২০০৬ সালের ২৭ এপ্রিল। প্রায় ৩.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ হয় এই ভবনটি নির্মাণে। এবার নিরাপত্তার জন্য রয়েছে আরও অনেক আধুনিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। যে কোনো বিমান এর দিকে ছুটে এলেই শক্তিশালী রাডারের নিখুঁত গণনায় সেটিকে ভূপাতিত করার অত্যাধুনিক ব্যবস্থা এতে রাখা হয়েছে।

এনএফ৭১/এমকে/২০২০



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top