ফকিরহাটে প্রথমবারের মতো চাষ হচ্ছে কোরিয়ান ফসল পেরিলা!

বাগেরহাট থেকে | প্রকাশিত: ১০ জুলাই ২০২১, ০৫:১১

ফকিরহাটে প্রথমবারের মতো চাষ হচ্ছে কোরিয়ান ফসল পেরিলা!

কোরিয়ান তেলবীজ ফসল পেরিলা প্রথমবারের মতো চাষ হচ্ছে বাগেরহাটের ফকিরহাটে। শতকরা ৬৫ ভাগ ‘ওমেগা-৩’ সমৃদ্ধ হওয়ায় বিশ্ববাজারে এ তেলের চাহিদা প্রচুর, তবে বাংলাদেশের কৃষকদের কাছে এ ফসল তেমন পরিচিত নয় এখনও। সূর্যমুখী ও সরিষার মতো পেরিলার বীজ থেকে উন্নত মানের ভোজ্যতেল উৎপন্ন হয়। পাতা পুষ্টিকর সবজি হিসেবে খাওয়া যায়।

পেরিলার আদি নিবাস চীন হলেও দক্ষিণ কোরিয়ায় এর ব্যাপক বিস্তৃতির কারণে বিশ্বে এটি কোরিয়ান পেরিলা নামে পরিচিত। বাংলাদেশে এখন এ ফসলের উৎপাদন নিয়ে চলছে নানা গবেষণা। তারই ধারাবাহিকতায় বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলায় কৃষি অফিসের সহযোগিতায় প্রথমবারের মতো পেরিলার চাষের জন্য বীজ ও কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে। উপজেলার ৬ জন কৃষক দুই ২ একর জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে পেরিলা চাষের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তন্ময় দত্ত বলেন, এই ফসল মাত্র ৭০- ৭৫ দিনের মধ্যে ঘরে তোলা সম্ভব। সেই দিক থেকে জমিতে একাধিক ফসল করাও যায়। তিনি আরো জানান, পেরিলার পাতা সবজি হিসেবে এবং বীজকে তেল উৎপাদনে কাজে লাগিয়ে প্রধানত দুইভাবে এর ব্যবহার করা যায়।

ফুল এলে পেরিলার ক্ষেতে মৌমাছির ব্যাপক আনাগোনায় বাণিজ্যিকভাবে মধু চাষের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে পেরিলার চাষ ব্যাপকতা বাড়াতে পারলে দেশের অর্থনৈতিক সেক্টর আরো সমৃদ্ধ হবে। তাই জমির সর্বোচ্চ ব্যবহারের দিককে গুরুত্ব দিয়ে এই ফসল চাষ শুরু করা হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. নাছরুল মিল্লাত বলেন, এই এলাকায় জুলাই থেকে অক্টোবর মাসে অনেক জায়গা পতিত পড়ে থাকে। আউশ আবাদ হওয়ার পর দুই আড়াই মাস কৃষকেরা জমি ফাঁকা রেখে সরিষা আবাদ করে। যেহেতু এই ফসল আড়াই মাসে উঠে যায় তাই কৃষকদের জমি ফাঁকা রাখার কোন যুক্তি নেই। তারা পেরিলা চাষ করলে ভালো একটি ফসল উঠে আসবে। বাংলাদেশে আবহাওয়ায় অভিযোজন সম্পন্ন হয়েছে নতুন এই তেলজাত ফসল পেরিলা। তাই এ ফসলটি দেশের আবহাওয়াতে হেক্টর প্রতি দেড় টনের বেশি উৎপাদন হবে।

বাংলাদেশ কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশে মোট ভোজ্যতেলের চাহিদা ৫১.২৭ লাখ মেট্রিক টন, যার মধ্যে ৪৬.২১ লাখ মেট্রিক টন আমদানি করতে হয়। এর মূল্য ৩.২০ বিলিয়ন ডলার যা বাংলাদেশী টাকায় ২৭ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা। বর্তমানে দেশে আবাদি জমির মাত্র ৪ ভাগ তেল ফসলের আবাদ হয়। তাই সরিষা, তিল এবং সূর্যমুখীর পাশাপাশি পেরিলা চাষ হলে তেলে স্বনির্ভরতা বাড়বে, সাশ্রয় হবে বৈদেশিক মুদ্রা।


এনএফ৭১/এনজেএ/২০২১




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top