দোয়ারাবাজারে সন্ত্রাসী কায়দায় ৪ পরিবারের বাড়ীঘর ভাঙচুর

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার থেকে | প্রকাশিত: ২৯ জুলাই ২০২১, ০৫:২৪

দোয়ারাবাজারে সন্ত্রাসী কায়দায় ৪ পরিবারের বাড়ীঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের তাণ্ডব নারী ও শিশুসহ আহত ১৫

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে সন্ত্রাসী কায়দায় নিরীহ ৪ পারিবারে বাড়িঘরের হামলা, মারধর ভাঙচুর ও লুটপাটের তাণ্ডব চালানো হয়েছে। বুধবার ভোর রাতে উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের রসরাই ও নোয়াপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

বুধবার ভোর রাতে ঘুমন্ত নিরীহ পরিবারের উপর উপর্যপরী হামলা চালিয়ে দেশী অস্ত্র ও দা দিয়ে কুপিয়ে নারী ও শিশুসহ অন্তত ১৫ জনকে আহত করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। ঘটনার পর থেকে গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের রসরাই গ্রামের ব্যবসয়াী মৃত বরকত আলীর পুত্র আবুল কাশেমের সাথে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে একই গ্রামের মৃত আমীর চানের পুত্র গোলাপমিয়া ও মৃত হাছেন আলীর পুত্র ইয়াকুব আলীর সাথে।

এরই জেরে ভোর রাতে গোলাপমিয়ার নেতৃত্বে একদল অস্ত্র ধারী লাঠিয়াল বাহিনী আবুল কাশেম ও তার তিন আত্মীয়র বাড়িঘরে হামলা চালায়। এসময় এলোপাতাড়ি কুপাতে থাকে এবং হামলার পূর্বে আবুল কাশেমের বসত ঘরের সিসিটিভির তার কেটে বাড়িঘর তছনছ করে এবং বেধড়ক মারপিট করে।

অন্যদিক একই ভবে নোয়াপাড়া গ্রামে আবুল কাশেমের আত্মীয়দের টিনছাউনীর আরও তিনটি ঘরে ভেঙে তছনছ করে দেয়। এসময় ১টি মোটরসাইকেলসহ নগদ অর্থ, আসবাবপত্র নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার। এই ঘটনায় প্রতিপক্ষের দায়ের কুপে গুরুত আহত জহুর আলী (৩৫) কে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

আবুল কাশেমের মা শতবর্ষী ফুল মেহের বলেন, গোলাপ তার বাহিনী নিয়ে আমারদের বাড়িতে হামলা চালায়। আমি তখন ফজরের নামাজ পড়তে বসছি এসময় লাঠি সুলফি এবং ইট পাথর নিক্ষেপ করতে থাকে। ঘরের দরজা ও কাচের জানালা ভেঙে ইট ও অস্ত্র আসতে থাকে। আমি চৌকাঠের ভেতর লুকিয়ে প্রাণ বাঁচাই।

ক্ষতিগ্রস্ত জরিনা বেগম বলেন, ঘুম থেকে উঠার পরই গোলাপের নেতৃত্বে ৪০/৫০ জন লোক ঘর ভাঙচুর করতে থাকে এবং এলোপাতাড়ি কুপাতে থাকে। বীরমুক্তিযোদ্ধা আবদুছ সালাম বলেন, ভোরে গোলাপ তার লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে এসে আমাদের উপর হামলা করে। পুলিশ আসার পূর্ব পর্যন্ত আমরা ঘরবন্দী হয়ে থাকি।

আবুল কাশেম জানান, জমি নিয়ে বিরোধের পর তাদের সাথে নিষ্পত্তি হয়। এ নিয়ে মামলা মোকদ্দমা নিষ্পত্তি হয়ে উচ্চ আদালতে রায়ে জমি ভোগ দখল করে আসছি। গত কয়েকদিন ধরে প্রতিপক্ষ জমির দখল ছেড়ে দিতে আমাকে উৎপীড়ন শুরু করে। আমি স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সহায়তা চাইলে দুই পক্ষকে ডেকে কোন প্রকার সংঘর্ষে না জড়াতে নির্দেশ দেন। এর একদিন পর তারা ভোর রাতে আমাদের উপর হামলা চালায়।

লক্ষ্মীপুর ইউপি চেয়ারম্যান আমীরুল হক বলেন, জমিসংক্রান্ত বিরোধের নিষ্পত্তি করার জন্য আজ সকালে বিচার সালিশ বসার কথা ছিল। কিন্তু একটা পক্ষ অন্যায়ভাবে নিরীহ পরিবারের উপর হামলা চালিয়ে মারধর, ভাঙচুর ও বাড়িঘর তছনছ করে। আমি দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাই।

জানতে চাইলে দোয়ারাবাজার থানার ওসি দেবদুলাল ধর বলেন, নিরীহ পরিবারের উপর হামলা চালিয়ে মারধর ও বাড়িঘরের ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়েছে। ঘটনার পর থেকে গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগের পর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এনএফ৭১/এনজেএ/২০২১




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top