ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পাশাপাশি স্বাবলম্বী শ্রীমঙ্গলের শিউলি

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১০ ডিসেম্বর ২০২১, ০৩:৪১

ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পাশাপাশি স্বাবলম্বী শ্রীমঙ্গলের শিউলি

চায়ের রাজধানী খ্যাত দেশের উত্তর-পূর্বের জেলা মৌলভীবাজার। জেলার বিখ্যাত উপজেলা শ্রীমঙ্গলে থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশের পথ চলাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন নারী উদ্যোক্তা শিউলি আক্তার। ২০১৩ সালে আলিম পাসের পরই যোগ দেন শ্রীমঙ্গল পৌরসভার ডিজিটাল সেন্টারে।

ডিজিটাল সেন্টারে যোগ দিয়ে পৌর এলাকার মানুষকে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন শিউলি আক্তার। জমি-জমার কাগজপত্র, নামজারির আবেদন, জাতীয় পরিচয় পত্রের আবেদন, বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের টিকিট, মোবাইল ব্যাংকিং, এজেন্ট ব্যাংকিং এর মাধ্যমে বয়স্ক-বিধবা-প্রতিবন্ধি ভাতা, ই-চালানের লেনদেন-সহ সব ধরণের ডিজিটাল সেবা নিশ্চিত করছেন এই সেন্টারের মাধ্যমে। ফলে কম সময়ে এবং কম খরচে কাংখিত বিভিন্ন সেবা পেয়ে সন্তুষ্ট শ্রীমঙ্গলের বাসিন্দারা।

শ্রীমঙ্গল পৌর বাসিন্দা ক্যান্সার আক্রান্ত সায়েরা বেগম জানান, বয়স্ক ভাতার টাকা ঘরে বসেই পাচ্ছেন শিউলি আক্তারের মাধ্যমে। সেন্টারে গিয়ে কষ্ট করে কিছুই করা লাগছেনা তার। অনেকটা আপনজনের মতই তাকে সহযোগিতা করছেন শিউলি। ডিজিটাল সেন্টারের আরেক সুবিধাভোগী বিধবা রিনা বেগম বলেন, ‘‘একদিন জমির পড়চার জন্য আমি শিউলির কাছে যাই। সে আমাকে খুবই অল্প সময়ে এবং কম খরচে পড়চার কাগজ-পত্র হাতে তুলে দেয়। ডিজিটাল সেন্টার থেকে তার মাধ্যমে এমন ভাল সেবা ও ব্যবহার পেয়ে আমি সত্যিই মুগ্ধ‘‘।

ডিজিটাল সেন্টার সম্পর্কে শ্রীমঙ্গল পৌরসভার সচিব মাহবুব আলম পাটোয়ারী জানান, অনেক দিন ধরেই পৌরবাসীকে বিভিন্ন সেবা পেতে সহযোগিতা কেরে যাচ্ছেন সেন্টারের উদ্যোক্তা শিউলী আক্তার। ইতোমধ্যে সরকারী-বেসরকারী অনেক পুরস্কারও জিতেছে শিউলী আক্তার। এসব কাজে অনেক সুনামের পাশাপাশি পুরস্কারও পেয়েছে সে। শিউলী আক্তার এলাকার গর্ব বলেও জানান শ্রীমঙ্গল পৌরসভার সচিব।

নিজের সফলতা সম্পর্কে শিউলি আক্তার জানান, সরকারের এটুআই কর্মসূচী থেকে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নেয়ায় ডিজিটাল সেন্টার চালানো এবং সেবা দেয়া তার জন্য সহজ হয়েছে। ৩ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে শিউলী আক্তার পরিবারের জেষ্ঠ্য সন্তান। বাবা সুবল মিয়া অনেক দিন ধরে অসুস্থ থাকায় সংসারের হাল ধরতে হয়েছে শিউলিকেই।

শ্রীমঙ্গলের ডিজিটাল সেন্টার সম্পর্কে শিউলি বলেন, ‘‘ডিজিটাল সেন্টারের পাশাপাশি আমি একটি সাব-সেন্টার নিয়েছি যেখানে ডিজিটাল সেবার পাশাপাশি ফ্রিজ, এসি, ওয়াশিং মেশিন, প্রিন্টার-সহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি মেরামতের কাজ করা হয়’’। সাব সেন্টারে ফ্রিজ-এসি সার্ভিসিং এর মাধ্যমে বেকার যুবকদের ট্রেনিং চালিয়ে যাওয়ার কথা জানান তিনি। এর পাশাপাশি চা-পাতা, মনিপুরী পোষাক এবং শ্রীমঙ্গলের অন্যান্য ঐহিত্যবাহী সামগ্রী অনলাইনে সরাদেশে পৌছে দেয়ার কথাও জানান শিউলি।

কাজের স্বীকৃতি হিসেবে, ২০১৫ সালে জেলার শ্রেষ্ঠ নারী উদ্যোক্তা, ২০১৭ সালে বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ ডিজিটাল সেন্টারের পুরষ্কার, ২০১৮ সালে জেলা শ্রেষ্ঠ উদ্যোক্তা, এটু.আই. থেকে দেশসেরা উদ্যোক্তা সম্মাননা এবং ২০১৮ সালে এক শপের তিনবারের শ্রেষ্ঠ উদ্যোক্তা সম্মাননা পুরষ্কার পান শিউলি আক্তার।

এনএফ৭১/এনজেএ/২০২১

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top