ঋণের কিস্তির অর্থ যোগাড় করতে না পেরে আত্মহত্যা
বাগেরহাট থেকে | প্রকাশিত: ১৫ জুন ২০২২, ০৬:৩৭
বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার টাউন-নওয়াপাড়া গ্রামের গণেশ দে (৬৫) নামে এক দরিদ্র ব্যাক্তি ব্যক্তি ঋণগ্রস্ত হয়ে কিস্তির টাকা যোগার করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে। তিনি পিলজঙ্গ ইউনিয়নের মৃত কালিপদ দে এর পুত্র।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, মঙ্গলবার (১৪ জুন) সকালে মৃতের বাড়ির পাশে একটি কদম গাছের ডালের সাথে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে ফকিরহাট মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মৃতদেহ উদ্ধার করেন।
পুলিশ উপ-পরিদর্শক (এসআই) তোবারেক আলী জানায়, মৃত দেহের প্রাথমিক সুরোতহাল প্রতিবেদন শেষ হয়েছে। মৃত দেহের শরীরে কোন আঘাতের চিহৃ পাওয়া যায়নি। তিনি আত্মহত্যা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মৃত গনেশ দে’র বড় ছেলে উজ্জল দে জানান, তাদের বাবা দীর্ঘদিন ধরে ভ্যানে করে বিভিন্ন বাড়ি থেকে নাককেল সলা, শুকনো পাতা ও মানুষের ফেলে দেওয়া প্লাস্টিকের জিনিস ক্রয় করে তা বিক্রি করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। বিভিন্ন সময় তিনি এনজিও ও মহাজনের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ গ্রহণ করে ধার-দেনায় জর্জরিত হয়ে পড়েন। করোনা মহামারীর সময় থেকে আয় কমে যাওয়ায় পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়ে যায়। খেলাপী ঋণ আদায়ে প্রতিদিন বিভিন্ন এনজিও কর্মীদের তাগাদার কারণে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।
মৃতের ছোট ছেলে ও উৎপল দে বলেন, সকালে একটি এনজিও ১হাজার ৫শত টাকার কিস্তি ছিল। সে টাকা জোগাড় করতে না পারায় বাবা চিন্তিত ছিলেন। রাতে খাবার না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। ভোর রাতের কোন এক সময়ে তিনি ঘর থেকে বাহির হয়ে গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
মৃত গনেশ দে এর প্রতিবেশিরা জানান, গণেশ খুব দরিদ্র মানুষ। আশা, ব্যুরো বাংলাদেশসহ প্রায় ৬টি এনজিও তাঁকে ৫ লক্ষ টাকার মতো ঋণ দিয়েছে। ঋণ দেওয়ার সময়ে তারা সক্ষমতা বিচার না করে সুদের আশায় টাকা দেয়। কিন্তু কিস্তি নেওয়ার সময় অভাবী মানুষের সমস্যাগুলো বিবেচনা করে না। তারা কিস্তির জন্য নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করে।
ফকিরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মু. আলীমুজ্জামান বলেন, ওই ব্যক্তির আত্মহত্যার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে দেনার দায়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। এ ব্যাপারে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
এনএফ৭১/আরআর/২০২২
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।