লোড-আনলোড অচলাবস্থা সৈয়দপুরে খাদ্য গুদাম শ্রমিকদের কর্মবিরতি

নীলফামারী থেকে | প্রকাশিত: ৩১ জুলাই ২০২২, ১১:১৬

লোড-আনলোড অচলাবস্থা সৈয়দপুরে খাদ্য গুদাম শ্রমিকদের কর্মবিরতি

নীলফামারীর সৈয়দপুরে সরকারি খাদ্য গুদামে (এলএসডি) মালামাল লোড-আনলোড কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছে। শনিবার (৩০ জুলাই) দুপুরে গুদাম এলকায় তাঁরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।

শ্রমিকদের এ কর্মসূচির ফলে সরকারি চাল লোড-আনলোডে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। সমস্যা সমাধানে কর্মকর্তারা কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো সব ধরনের কার্যক্রম স্থগিত করে দেয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়েছে। এতে কয়েকটি ট্রাক মালসহ ৩ দিন ধরে এলএসডি চত্বরে আটকে থাকায় চালকসহ ঠিকাদাররাও দুর্ভোগে পড়েছেন। আর শ্রমকি-মিলারদের ব্যক্তিগত ও বেসরকারি মাল আনলোড করতে না পেরে উপার্জনহীন হয়ে তাঁরও বিপাকে।

সরেজমিনে খাদ্য গুদামে গেলে দেখা যায়, মূল ফটকে আড়াআড়িভাবে রাখা হয়েছে ৪ টি চালভর্তি ট্রাক। ফলে আর কোন পরিবহন খাদ্য গুদামে ঢুকতে বা বের হতে পারছেনা। লেবাররা জানায় ট্রাক চালকরা ঠিকাদার নুরুল ইসলামের নির্দেশে এই কাজ করেছে।

চালকরা বলেন, আমরা বাধ্য হয়ে এমন করেছি। গত বৃহস্পতিবার নীলফামারী সরকারি খাদ্য গুদাম থেকে চাল এনেছি। আজ শনিবারও মাল খালাস হয়নি। লেবাররা মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করছে। তাঁরা সরকারি মাল লোড আনলোড না করে মিলারদের কাজ করছে। খাদ্য গুদাম ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা, জেলা খাদ্য কর্মকর্তা কেউই কিছু করছেন না। ৩ দিন থেকে আমরা এখানে পড়ে আছি। ঠিকাদার বা কর্তৃপক্ষ কেউ দায় নিচ্ছে না। আমাদের ক্ষতিপূরণ কে দিবে?

খাদ্য গুদামে কর্মরত শ্রমিকরা জানান, আমরা দীর্ঘদিন থেকে মজুরি বৈষম্যের শিকার। সরকারি পন্য লোড আনলোডে বাজার মূল্য অনুযায়ী আমাদের মজুরি অমানবিক। বস্তা প্রতি মাত্র ১ টাকা করে মজুরি পাই। যা একেবারে নগন্য এবং বৈষম্যপূর্ণ। একটা ট্রাক লোড আনলোড করে ১ হাজার ৪শ' টাকা পেলে ৪১ জন লেবার ভাগ করে নেই। এতে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করেও মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। বার বার এনিয়ে আবেদন জানালেও গরীবের প্রতি কেউ তাকাচ্ছে না।

শ্রমিক সর্দার (সভাপতি) জিকরুল হক বলেন, মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আমরা ইতিপূর্বেও অনেক আন্দোলন করেছি। প্রতিবারই খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা ও উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা অনুরোধ করে করে আমাদের কাজে নিয়োজিত করেছেন। আমরা এর প্রতিকার চাই।

সৈয়দপুর উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান বলেন, শ্রমিকরা আমাদের কথা মানেননা। জরুরি সময়ে অহেতুক দাবি তুলে কাজে ব্যাঘাত ঘটায়। আমরা যেন তাদের কাছে জিম্মি। মজুরি বৃদ্ধির কোন কর্তৃত্ব আমাদের নেই। এটা মন্ত্রণালয়ের বিষয়। সামনে টেন্ডার হবে। এতে স্বাভাবিকভাবেই মজুরি বাড়বে। সারাদেশে যে রেটে কাজ করছে শ্রমিকরা সেই রেটই এখানে। তারপরও তারা কথায় কথায় এই ব্যাপারে অরাজকতা সৃষ্টি করে।

তিনি আরো বলেন, জেলা খাদ্য কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশ দিয়েছেন সরকারি পন্য লোড আনলোড না করলে অন্য মালামাল লোড আনলোডও বন্ধ রাখতে। সে অনুযায়ী সব কাজ বন্ধ করা হয়েছে।

এনএফ৭১/আরআর/২০২২




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top