সৈয়দপুরে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষ, আহত ৩
নীলফামারী থেকে | প্রকাশিত: ২৯ আগষ্ট ২০২২, ০৯:২৭
জমি নিয়ে বিরোধের মামলায় জেল খেটে জামিনে বের হয়ে প্রতিপক্ষের বাড়িতে গভীর রাতে সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা চালিয়ে ভাঙ্চুর ও লুটেপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটার এলোপাথাড়ি মার ডাঙের আঘাতে আহত হয়েছে ৩ জন। রোববার (২৮ আগস্ট) দুপুরে এই বিষয়ে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে গণমাধ্যমকে জানান ভুক্তভোগী পরিবার।
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের খোর্দ্দ বোতলাগাড়ী মৎস্যপাড়ার মৃত কৃষ্ণ চন্দ্র রায়ের ছেলে বাবুল চন্দ্র রায় (৩৫) বলেন, আমার বাবারা ৫ ভাই। তাদের পৈত্রিক মূলে প্রাপ্ত সম্পত্তি সমানভাবে ভাগ বাটোয়ারার পর নিজ নিজ অংশ ভোগদখল করে আসছে।
আমাদের প্রতিবেশী ও জ্ঞাতী মৃত জিগেন চন্দ্র রায়ের ছেলে সিরিজ চন্দ্র রায় (৬০) এবং তার ছেলেরা সেই পৈত্রিক সম্পত্তির তাদের অংশ অন্যত্র বিক্রি করেছে। সম্প্রতি আমার বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে তারা আমাদের জমিতে চাষাবাদ করার ক্ষেত্রে বাধা দিচ্ছে। তাদের দাবী ওই জমিতে তারা অংশ পাবে।
এমন মিথ্যেচারের প্রতিবাদ করায় ইতিপূর্বে তারা ঝগড়া বিবাদে জড়িয়ে পড়ায় বিষয়টা সুরাহার জন্য সৈয়দপুর থানায় আমরা একটা মামলা করেছি। মামলা নং ৯৪। বর্তমানে বিচারাধীন এই মামলায় বিবাদীরা আটক হয়। জামিনে বেরিয়ে এসেই তারা নানা হুমকি দিয়ে মামলা তুলে নেয়ার চাপ দেয়। না হলে প্রাণে মেরে ফেলার ভয় দেখায়।
এ অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) দুপুর ২ টার দিকে আমাদের ভোগদখলীয় জমিতে আলু আবাদের জন্য হালচাষ করতে গেলে উক্ত বিবাদীরা আবারও বাধা দিয়ে অকথ্য গালিগালাজ করে। প্রতিবাদ করলে ধাক্কাধাক্কিসহ মারডাং করে। লোকজন এসে তাদের থামালে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা বলে প্রয়োজনে তারা আবারও হাজত খাটবে তবুও ওই জমিতে আমাদের যেতে দিবেনা।
তাদের এমন মারমুখী আচরণের প্রেক্ষিতে জীবনের নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কায় ওইদিন বিকালে আমরা সৈয়দপুর থানায় একটা সাধারণ ডায়েরী করি। সেই রাতেই আনুমানিক সাড়ে ১১ টার দিকে আমরা ঘুমন্ত অবস্থায় থাকাকালে সিরিজ চন্দ্র রায়, তার স্ত্রী শেফালী রানী রায় (৫০), ছেলেরা হুজ্জুর (৩০), ভুট্টু (২৮) ও গোম্ভীর (৩২) সহ অপরিচিত লোকজন আমাদের বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালায়।
তারা বাড়ির সীমানা প্রাচীরের সাথের মূল গেট (এঙ্গেলের) ভেঙে ফেলে ভিতরে ঢুকে হাতের দেশীয় অস্ত্র ও লোহার রড, লাঠিসোটা দিয়ে ঘরের দরজায় আঘাত করতে থাকে। আমরা দরজা খুলে বের হতেই সকলে মিলে এলোপাথাড়ি মারডাং শুরু করে। মারতে মারতে ঘরে ঢুকে আসবাবপত্র ভাঙ্চুর ও লুটপাট করে। এসময় তারা আলমিরা কাচ ভেঙে আমার মাছ ব্যবসার ৭০ হাজার নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়।
তাদের বাধা দিতে গিয়ে বেধড়ক আঘাতে আমি মাটিতে পড়ে গেলে আমার বোন অন্যঘর থেকে এগিয়ে আসলে সিরিজ চন্দ্রের ছেলেরা তার চুলের মুঠি ধরে টেনে হিচড়ে বাইরে ভেঙে ফেলা মূল গেটের কাছে নিয়ে যায়। সেখানে কাপড় চোপড় ছিড়ে ফেলে গায়ে হাত দেয়ার চেষ্টা করে। ব্যার্থ হয়ে গলার আধাভরি ওজনের সোনার হার কেড়ে নেয় এবং পায়ে রড দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যায়।
রাতেই অসুস্থ বোনকে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করি। সেখানে তাকে নিয়ে বাড়ির সবাই ব্যস্ত থাকাবস্থায় পরের দিন সকালে সিরিজ চন্দ্র গং আবারও বাড়িতে হামলা করে। আমার ছোট ভাই স্বপনকে একা পেয়ে তারা সংঘবদ্ধভাবে তার উপর অমানবিক নির্যাতন চালায়।
এব্যাপারে সিরিজ চন্দ্রের পরিবারের লোকজনের দাবী অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে এবং উল্টা বাবলুর পরিবারই টাকার দাপটে তাদের ন্যায্য প্রাপ্য বুঝিয়ে না দিয়ে মামলা করে হয়রানী করছে।
এনএফ৭১/আরআর/২০২২
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।