পার্বতীপুরে নতুন রিসিপ্ট টার্মিনাল নির্মান কাজে ধীরগতি

দিনাজপুর থেকে | প্রকাশিত: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৬:৩২

পার্বতীপুরে নতুন রিসিপ্ট টার্মিনাল নির্মান কাজে ধীরগতি

দেশের উত্তরাঞ্চলে জ্বালানি তেলের সরবরাহ ব্যবস্থা আরও সৃদৃঢ় করতে ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন প্রকল্প কাজের মধ্যে পার্বতীপুরে নতুন রিসিপ্ট টার্মিনাল নির্মান কাজে ধীরগতি বিরাজ করছে।

জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পাইপ লাইন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) এর পক্ষে মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড এবং ভারতের পক্ষে নুমালীগড় রিফাইনারী লিমিটেড যৌথ ভাবে এ প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করছে। ২০২০ সালের ৩ ডিসেম্বর দিনাজপুরের পার্বতীপুরের বেলাইচন্ডী ইউনিয়নের সোনাপুকুর এলাকায় ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন প্রকল্পের পাইপলাইন স্থাপন কাজের শুভ উদ্বোধন বিপিসি’র চেয়ারম্যান (সচিব) মোঃ আবু বকর ছিদ্দীক। এ পাইপ লাইন দিয়ে সরাসরি ভারতের আসামের নুমালীগড় থেকে জ্বালানী তেল আসবে দিনাজপুরের পার্বতীপুর অয়েল ডিপোতে। নুমালীগড় ও পার্বতীপুরে ডিপোর মধ্যবর্তী দুরুত্ব ১৩১ দশমিক ৫ কিঃমিঃ। এ পাইপ লাইনের মধ্যে বাংলাদেশ অংশে ১২৬ দশমিক ৫ এবং ভারতের অংশে ৫ কিমিঃ। বাংলাদেশ অংশে ১২৬ দশমিক ৫ কিঃমিঃ এর মধ্যে পঞ্চগড় সাড়ে ৮২ কিঃমিঃ, দিনাজপুরে সাড়ে ৩৫ কিঃমিঃ এবং নীলফামারীতে ৯ কিঃমিঃ। এ জন্য দিনাজপুর, নীলফামারী ও পঞ্চগড় জেলায় মোট ১৮৭ একর জমি অধিগ্রহন করা হয়েছে। পাইপ লাইনের ব্যাস ১০ ইঞ্চি। এ প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে ৫২০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৩০৩ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে ভারত সরকার এবং বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) দিচ্ছে ২১৭ কোটি টাকা।

পাইপ লাইন প্রকল্পের আওতায় পার্বতীপুরে অয়েল ডিপোর পাশে নতুন রিসিপ্ট টার্মিনাল নির্মান কাজ শুরু হয়েছে। এ জন্য রেলওয়ের ৮ দশমিক ৬০ একর জমি লীজ নিয়ে টার্মিনাল নির্মান কাজ চলছে। এখানে ৫৬৯০ মেঃটন ধারন ক্ষমতা সম্পন্ন ৬টি তেলের ট্যাংক নির্মান করা হবে। তার উত্তর পাশে ৩ হাজার ধারন ক্ষমতা সম্পন্ন আরো দুইটি ওয়াটার ট্যাংক নির্মান করা হবে। চলতি বছরের জুন মাসেই প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা। পাইপ লাইন স্থাপন শেষ পর্যায়ে। কিন্তু রিসিপ্ট টার্মিনাল নির্মান কাজ প্রায় বন্ধ হয়ে আছে। নির্র্মানাধীন ৬টি তেল ট্যাংকারের ভিত্তি দেয়া হয়েছে অনেক আগে। কিন্তু রহস্যজনক কারনে ট্যাংকার নির্মান কাজ থেমে আছে। এর কারন হিসেবে সেখানে কর্মরত সাইড প্রকৌশলী মোঃ রাসেল জানান, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারনে এল,সি’র মাধ্যমে ট্যাংক নির্মানের জন্য প্লেনসীট আনা সম্ভব হচ্ছে না। আশা করি চলতি মাসেই সীট চলে আসবে। সেক্ষেত্রে তিন মাসেই ট্যাংক নির্মান সম্ভব হবে।

এ প্রকল্পের পরিচালক মোঃ টিপু সুলতান জানান, এ যাবত ৬০ ভাগ কাজ হয়েছে। এলসি’র সমস্যার কারনে কাজের মেয়াদ আরো এক বছর বৃদ্ধি করা হয়েছে। বর্তমানে পার্বতীপুর ডিপোতে জ্বালানি তেলের মজুদ ক্ষমতা ১৫ হাজার মেঃটন। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে পার্বতীপুরে জ্বালানি তেলের মজুদ ১৫ হাজার মেঃটন থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৪৯ হাজার মেঃটনে উন্নীত হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে এলাকার মানুষের জীবনমান উন্নত হবে এবং এতদাঞ্চলে জ্বালানী তেলের সংকট থাকবে না। এছাড়া পাইপলাইনের মাধ্যমে প্রতি ব্যারেল তেলের পরিবহন ব্যয় সড়ক বা রেল পথে পরিবহন ব্যয়ের চেয়ে কমপক্ষে ৪ থেকে ৫ ডলার কম হবে।

এনএফ৭১/আরআর/২০২২




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top