নীলফামারীতে দেবরদের অত্যাচারে বিধবা ভাবী সন্তানসহ বাড়ি ছাড়া
নীলফামারী থেকে | প্রকাশিত: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১১:১৬
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দেবরদের অত্যাচারের শিকার হয়ে বাড়ি ছাড়া হয়েছেন বিধবা ভাবী ও তাঁর সন্তানেরা। রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) বেলা ৩টার দিকে চাঁদখানা ইউনিয়নের উত্তর চাঁদখানা ডোঙ্গা গ্রামের মৃত রশিদুল ইসলামে স্ত্রী ঝরনা বেগম সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তার অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরেন। তিনি পলাতক অবস্থায় তার বাড়ি থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে উত্তর চাঁদখানা নগরবান্ধ গ্রামে ননদের বাড়িতে অবস্থান করছেন।
লিখিত বক্তব্যে ঝরনা বেগম বলেন, জমি নিয়ে বিরোধে প্রায় ১০ বছর আগে আমার স্বামীকে দেবর জাম্বু মিয়া ও আশরাফুল মিয়া নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে। এঘটনায় তারা হাত পা ধরে মিমাংসা করতে বাধ্য করে। সেই সময়েই পৈত্রিক জমিজমা ভাগ বাটোয়ারা করা হয়। সেইমতে আমরা আমাদের বসত ভিটাসহ নিজেদের জমি চাষ করে আসছি। চলতি বছরের প্রথম দিকে বসতভিটা সংলগ্ন ৪ শতক ডাঙা জমিতে বাড়ি সম্প্রসারণ ও সংষ্কারের উদ্যোগ নিলে তারা বাধা দেয়।
তিনি আরও বলেন, এই ঘটনায় স্থানীয় ইউপি মেম্বার ও চেয়ারম্যানকে অভিযোগ করলে প্রতিপক্ষরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং আমাদেরকে অত্যাচার করে বাড়ি থেকে বিতারিত করেছে। ফলে প্রাণভয়ে আমরা পালিয়ে বেড়াচ্ছি।
ঝরনা বেগমের বড় ছেলে কিশোরগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র জসিম উদ্দিন বলেন, আমার চাচারাসহ তাদের পরিবারের লোকজন প্রায়ই ঝগড়া বাধিয়ে আমাদেরকে নির্যাতন করে। ৬ মাস আগে বাড়ি মেরামতের জন্য ইট আনার পর তারা আরও বেপরোয়া আচরণ করছেন। অহেতুক ঝামেলা পাকিয়ে আমার মা ভাই বোনদের বেধড়ক মারপিট করেছে।
সাম্প্রতি আমার মাকে চাচা জাম্বু (৪৫), আশরাফুল (৫২), চাচী মাসুদা বেগম (৪০), মমতা বেগম (৪২), মিনু বেগম (৪৬) চাচাত বোন লাবমী আক্তার (২০) দলবদ্ধভাবে আটকিয়ে অসহনীয় নির্যাতন করে। এর প্রেক্ষিতে ওইদিনই থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেই। পুলিশ এসে তদন্ত করে গেলেও আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত কোন ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে চরম বিপর্যস্ত অবস্থায় জীবন কাটাচ্ছি। আমরা এর সুবিচার দাবী করছি।
অভিযুক্ত আশরাফুল মিয়ার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া কৃষিজমি নিয়ে কোন বিরোধ নেই। কিন্তু বসতভিটায় সবারই অধিকার আছে। বাঁশ টিনের ঘর করে ভোগদখল করে আসলেওতো স্থায়ী পাকা দালাল তুলতে পারেনা। কারন তারা একাই সামনের অংশ সবটুকু নিতে পারেনা। এতে দুইজনের অংশিদারত্ব আছে। তাদেরকে মারপিট, ও হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ মিথ্যে।
কিশোরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজিব কুমার রায় বলেন, আমি নতুন এসেছি। এসংক্রান্ত কোন অভিযোগ বিষয়ে জানা নেই। তবে অভিযোগ করে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এনএফ৭১/আরআর/২০২২
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।