বৃদ্ধভাতা পেতে শতবর্ষী হামিদাকে আর কত বড় হতে হবে

বাগেরহাট থেকে | প্রকাশিত: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১০:২৪

বৃদ্ধভাতা পেতে শতবর্ষী হামিদাকে আর কত বড় হতে হবে

ব্রিটিশ শাসিত ভারতবর্ষে জন্ম নেওয়া হামিদা বেগমের জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী বয়স ৯৩ বছর ১০ মাস। প্রায় শতবর্ষ ছুয়ে যাওয়া বিধবা দরিদ্র এই বৃদ্ধার বসবাসের জন্য নিজস্ব কোন জমি নেই। ভূমিহীন দরিদ্র এই বৃদ্ধা শত চেষ্টা করেও একটি বৃদ্ধভাতা বা বিধবা ভাতার কার্ড পাননি বলে হাহাকার করেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাগেরহাটের ফকিরহাট ইউনিয়নের পাগলা উত্তর পাড়া গ্রামে সরকারি খাস জমির ডিসিয়ার ফি-বছর নবায়ন করে দিনমজুর সন্তানদের নিয়ে হামিদা বেগম কোন মতে জীবন যাপন করছেন। স্বামী মোসলেম শেখ দুই যুগ আগে মারা গেছেন। সতচল্লিশে দেশ ভাগের দাঙ্গায় কলকাতা শহরে কোটি টাকার মসলার ব্যবসা ফেলে নিঃস্ব হামিদা বেগমের পরিবার কোন মতে প্রাণ নিয়ে পূর্বপাকিস্তানের ফকিরহাটে ৫ শতক খাস জমিতে সংসার পাতেন। একাত্তরে দেশ স্বাধীনের পর এদেশের নাগরিকত্ব পেলেও তাদের পরিবারের সাথে রিফিউজি শব্দটি স্থায়ীভাবে জড়িয়ে যায়। সে কারণেই সম্মান ও সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর মতো সেবাগুলো থেকে বার বার তাঁকে বঞ্চিত করা হয়েছে বলে দাবী করেন এই বৃদ্ধা।

পেশায় দিনমজুর হামিদা বেগমের পঁচাত্তর বছর বয়স্ক বৃদ্ধ ছেলে ইউসুফ আলী জানান, স্থানীয় ইউপি মেম্বারের কাছে বারবার ধর্ণা দিলেও কোন কাজ হয়নি। অনেক বার কাগজ ও দরখস্ত দিয়েছেন। কিন্তু সরকারের কোন সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় ঢুকতে না পেরে হতদরিদ্র অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন। অন্যের জমিতে কৃষিকাজ করে কোন মতে পেট চলে তাদের। একটি বৃদ্ধ অথবা বিধবা ভাতার কার্ডের জন্য আকুতি পরিবারটির।

সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুর রহমান মেম্বার জানান, হামিদা বেগম অতিশয় বৃদ্ধা ও দরিদ্র নারী। কিন্তু তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর নতুন কোন তালিকা না হওয়ায় হামিদাকে বৃদ্ধ অথবা বিধবা ভাতার আওতায় আনা সম্ভব হয়নি।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. সবুর আলি বলেন, ‘২০২০-২০২১ অর্থবছর থেকে সমাজ সেবা অধিদপ্তরাধীন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচী প্রকল্পে নতুন তালিকা বন্ধ আছে। এটি চালু হলে নতুন চাহিদাপত্রে তাঁর নাম অন্তর্র্ভূক্ত করা হবে।’

এনএফ৭১/আরআর/২০২২




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top