গাজীপুরে হাসপাতালের লিফটে আটকে প্রাণ গেল রোগীর
সুজন হাসান | প্রকাশিত: ১২ মে ২০২৪, ১৯:২০
গাজীপুরে শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের লিফটে আটকা পড়ে মমতাজ বেগম নামে এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। রোববার (১২ মে) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মমতাজ বেগম গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার রানীগঞ্জ বাড়িগাও গ্রামের শারফুদ্দিনের স্ত্রী।
সকাল ৬টার দিকে হার্টের সমস্যা নিয়ে মমতাজ বেগমকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন তারা। এরপরে ডাক্তার দেখাতে হাসপাতালের ১০ তলা থেকে চতুর্থ তলায় নামার সময় হঠাৎ লিফটটি বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় লিফটে থাকা তিন অপারেটরের মোবাইল নম্বরে কল করা হলে তারা চা খেয়ে আসছি বলে কালক্ষেপণ করেন। প্রায় ৪৫ মিনিট আটকে থাকার পর হাসপাতালের লোকজন নয় তলায় দিয়ে তাদের বের করে আনেন। তবে তার আগেই মারা যান মমতাজ।
লিফটে রোগীর স্বজনসহ অন্যান্য লোকজন ছিল। এসময় লিফটে থাকা ৩ জন লিফটম্যানকে ফোন দেয় কিন্তু তারা গাফিলতি করেন। ফোনে তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। পরে ৯৯৯ কল করলে ৪৫ মিনিট পর ফায়ার সার্ভিস এসে তাদের উদ্ধার করে। কিন্তু এর মধ্যেই মমতাজ বেগম মারা যান।
নিহতের মেয়ে শারমিন বলেন, সকালে মা অসুস্থ হয়ে পড়ে। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে শহিদ তাজউদ্দীন হাসপাতালে নিয়ে আসি। পরে হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করা হয়। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে হার্টের সমস্যার কথা জানিয়ে ওই ভবনের ১১ তলা থেকে চতুর্থ তলায় নিয়ে যেতে বলা হয়। কিন্তু ৯ তলার মাঝামাঝি এলে লিফট বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় লিফটে মা, আমি, মামা ও ভাই ছিলাম। ভেতরে আমাদের দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। দ্রুত লিফটম্যানদের ফোন দিলে তারা গাফিলতি করে। ফোনে আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে।
শারমিন আরো বলেন, ৪৫ মিনিট লিফটের ভেতর আটকে ছিলাম। উপায় না পেয়ে ৯৯৯ নম্বরে ফোন দেই। পরে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা এসে আমাদের উদ্ধার করেন। লিফটম্যানদের গাফিলতির কারণে আমার মায়ের মৃত্যু হয়েছে।
গাজীপুর তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সকালে মমতাজ বেগমকে বুকে ব্যাথা অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে মেডিসিন বিভাগ হতে ৪ তলায় নেওয়ার জন্য লিফটে তোলা হয়। এ সময় লিফটে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। এতে দীর্ঘ সময় লিফট আটকে থাকে। পরে লিফটম্যান ও ফায়ার সার্ভিসের লোক এসে সবাইকে উদ্ধার করে। লিফটে আটকে থাকা সবাই সুস্থ ছিল কিন্তু মমতাজ বেগম মারা গেছেন। আমরা পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।
গত শুক্রবার হাসপাতালের ১২ তলার নামাজের কক্ষের দেয়ালের পাশের ফাঁকা স্থান দিয়ে নিচে ১০ তলায় পড়ে গিয়ে হাসপাতালে চিকিসাধীন জিল্লুর রহমান নামে এক রোগীর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির অভিযোগ করেন স্বজনরা।
বিষয়: শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল লিফটে আটকে প্রাণ গেল রোগীর ৯৯৯ কাপাসিয়া রানীগঞ্জ বাড়িগাও
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।