ভূমিকম্প: সতর্কতা, আতঙ্ক এবং আমাদের করণীয়
নিউজ ডেস্ক | প্রকাশিত: ২২ নভেম্বর ২০২৫, ১৮:২৪
আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেন “তারা কি নিরাপদ মনে করে যে, আল্লাহ্ তাদেরকে ভূমি ধসিয়ে দিবেন না?” (সুরা নাহল: আয়াত ৪৫)
আর রাসূল ﷺ বলেছেন “ভূমিকম্প আল্লাহর পক্ষ থেকে সতর্কবার্তা।” অর্থাৎ মানুষকে ফেরার সুযোগ দিতে আল্লাহ বিপদের আকারে নসিহত পাঠান।
আজকের বাংলাদেশও যেন সেই সতর্কবার্তার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন দেশটি ইন্ডিয়ান, ইউরেশিয়ান ও বার্মা এই তিনটি গতিশীল প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থান করছে। আর এই অবস্থানই যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের ভূমিকম্প আঘাত হানার ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ছোট ছোট ভূমিকম্পের সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। ২০১৭ সালে ২৮টি, ২০২৩ সালে ৪১টি, আর ২০২৪ সালে তা গিয়ে দাঁড়ায় ৫৪-তে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনো অঞ্চলে বড় ভূমিকম্প হওয়ার আগে এভাবে ছোট ছোট কম্পন বারবার দেখা দেয় যা বড় বিপর্যয়ের পূর্বাভাস হতে পারে।
বাংলাদেশে শেষ বড় ভূমিকম্প হয়েছিল ১৯১৮ সালে, মাত্রা ছিল ৮। এর পর শত বছর পার হয়ে গেছে। আর ইতিহাস বলে কোনো অঞ্চলে ১০০ বছরের ব্যবধানে আবার বড় মাপের ভূমিকম্প হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এখন ২০২৫ ঠিক সেই ভয়ঙ্কর সীমারেখায় দাঁড়িয়ে দেশ।
নরসিংদীর ঘোড়াশাল থেকে উৎপত্তি হওয়া সাম্প্রতিক ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্প যেন আরও বড় কিছুর পূর্বঘোষণা। একই সময়ে ভারতের কলকাতায় কম্পন অনুভূত হওয়াও চিন্তার বিষয়। পৃথিবীর কোথাও ৭ এর উপরে ভূমিকম্প হলে ভবন ধসে পড়ে, অবকাঠামো তাসের ঘরের মতো ভেঙে যায় এটা আমরা মিয়ানমারের সাম্প্রতিক ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পেই দেখেছি।
কিন্তু যদি ঢাকায় এমন কিছু ঘটে?
গবেষণা বলছে মাত্র ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ঢাকার ৭২,০০০ ভবন ধসে পড়তে পারে। দুই কোটির বেশি মানুষের শহরটি মৃত্যুকূপে পরিণত হতে সময় লাগবে না। ভোরে কিংবা গভীর রাতে ভূমিকম্প হলে উদ্ধারকাজ শুরু হতেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা পেরিয়ে যাবে। সাভারের একটি ভবন ধসতে উদ্ধার করতে লেগেছিল ৭ দিন; তাহলে ৭২ হাজার ভবন হলে কী হবে?
তবুও মানুষের ভরসা একটাই আল্লাহর রহমত।
আসুন, আমরা আল্লাহর কাছে বেশি বেশি ক্ষমা চাই, তওবা করি।
তিনি বলেন “আমার স্মরণে শান্তি লাভ করবে মুমিনদের অন্তর।” আল্লাহ আমাদের, আমাদের পরিবারকে, এই দেশকে সব বিপদ থেকে হেফাজত করুন। আমিন।
এনএফ৭১/ওতু
বিষয়:

পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।