ভোলায় মোমবাতি ব্যাবসা হতে পারে
বেকার যুবক-যুবতীদের বিকল্প কর্ম-সংস্থান
ভোলা থেকে | প্রকাশিত: ১৬ মার্চ ২০২১, ২২:১০
বাংলাদেশের চাকরী না পাওয়া শিক্ষিত বেকার সহ বিপুল সংখ্যক কর্মহীন বেকার যুবক-যুবতিদের জন্য মোমবাতি হতে পারে বিকল্প কর্মসংস্থান। মোমবাতির কদর দেশে ক্রমাগত বেড়ে চলছে।
আলো জ্বালানো আজকাল মোমবাতি শোপিচ হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। নানা আকৃতির ও নানা ডিজাইনের মোমবাতির এখন ছড়াছড়ি। বর্তমানে বিজলিবাতি বা বিদ্যুতের সুবিধা শহুরে এলাকায় পৌছলেও গ্রামাঞ্চলের বহু জায়গার জনগণ এখনও এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তাছাড়া শহুরে আধুনিক এলাকা গুলোতে বিদ্যুতের নামে যা পাওয়া যায় তাও লোডশেডিং এর জ্বালায় জর্জরিত।
স্কুল-কলেজের ছেলে-মেয়েরা এবং অফিস-আদালত ও ব্যবসায়ীরা এ সমস্যায় বেশ ভুক্তভোগী। তাই লোডশেডিং এ বিদ্যুত বিহীন থাকা অবস্থায় ও গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মোমবাতির ব্যবহার এখনো চলছে। তাছাড়া বিভিন্ন জন্মদিনের অনুস্ঠান বাহারী মোমবাতির ব্যবহার ছাড়া ভাবা যায়না। তাবিজ-কবজ ও স্বর্নের অলংকারেও মোমের ব্যবহার হয়।
জনগনের এই প্রয়োজনীয়তাকে কাজে লাগিয়ে বেকার যুবক-যুবতিরা মাত্র ৯/১০ হাজার টাকা মূলধন দিয়ে শুরু করতে পারেন মোমবাতি ব্যবসা। গ্রাম কিংবা শহরে সর্বত্রই মোমবাতির চাহিদা রয়েছে। তাই নির্ভয়ে পরিকল্পনা করে নেমে পড়তে পারেন এই ব্যবসায়। মোমবাতি ব্যবসায়ী সজল জানান, সাধারনত বাজারের চাহিদা অনুযায়ী চার ধরনের মোমবাতি তৈরি করা হয়। মোমবাতি তৈরিতে উপকরন হিসাবে লাগবে কড়াই, মগ, কাঁচি, ছুড়ি, বালতি, সুতা ইত্যাদি।
আড়াইশ মোমবাতি তৈরি করতে ১০ কেজি প্যারাফিন, ১ কেজি স্টিয়ারিক এসিড, আড়াইশ গ্রাম সুতা, আধা কেজি রং, পঞ্চাশ গ্রাম সয়াবিন তৈল, পচিশটি প্যাকেট, আড়াইশ গ্রাম আঠা, বিভিন্ন আকৃতি ও ডিজাইনের মোমের জন্য সে আকৃতির ছাঁচ তৈরি করতে হয়। মোমবাতি তৈরি করতে প্রথমে ডাইস বা ছাঁচের ছিটকিনি খুলে ছাঁচের দুটি অংশ আলাদা করতে হয়। একটি কাপড়ে তেল নিয়ে ডাইসের ভেতরে থাকা ময়লা পরিষ্কার করে ছাঁচের ভেতর যে পরিমাণ সলতে পড়ানোর জায়গা আছে সেগুলো উপর থেকে নীচ পর্যন্ত টান টান করে বেঁধে দিতে হয়। এরপর ছাঁচের দুটি অংশ একসঙ্গে আটকে দিয়ে ছাঁচের সাথে লাগানো পানির ট্যাঙ্কে পানি ভরতে হয়। পরে কড়াই গরম করে তার মধ্যে প্যারাফিন দিয়ে তা পুরোপুরি গলে যাওয়ার আগে কড়াইতে স্টিয়ারিং এসিড মেশাতে হয়। গলে যাওয়া প্যারাফিন মগে কিংবা চামচে করে আস্তে আস্তে ডাইসের খাঁজ গুলোতে পুরোপুরি ঢালতে হয়। বিশ-পঁচিশ মিনিট পর মোমগুলো ঠান্ডা হলে বের করে এনে সাইজ মতো কাটতে হয়।
আড়াইশ মোমবাতি তৈরি করে ঠিক মতো বাজারজাত করতে পারলে ১৪/১৫শ টাকা আয় করা যায়। তবে মোমবাতি তৈরির উদ্যেক্তাদের দাবী এই ব্যবসার কাঁচামালের দাম যদি আরো সহনীয় হতো তাহলে তারা ব্যবসায়িক ভাবে আরো লাভবান হতো ও বেকার যুবক-যুবতিরা আরো বেশী এই ব্যবসায় আগ্রহী হতো। এই উদ্যেক্তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষন ও সরকারী-বেসরকারী ভাবে সহজ শর্তে ঋন প্রদান করা হতো তাহলে দেশের বিপুল সংখ্যক বেকার যুবক-যুবতিদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হতো বলে সুশীল সমাজ মনে করেন।
এনএফ৭১/জেএস/২০২১
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।