আগুনে বেঁচে যাওয়া ছেলে জানে না তার বাবা-মা আর নেই
রাজশাহী থেকে | প্রকাশিত: ৩১ মার্চ ২০২১, ২০:৪২
রাজশাহীর বাস-মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে মাইক্রোবাসের একমাত্র বেঁচে যাওয়া যাত্রী মো. পাভেলের (১৮) এখনও জ্ঞান ফেরেনি। তিনি বর্তমানে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের আইসিইউ তে চিকিৎসাধীন।
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার দাড়িকাপাড়া গ্রামে পাভেলের বাড়িতে শোকের মাতম চলছে। ওই সড়ক দুর্ঘটনায় তার বাবা মোখলেসুর রহমান (৪০) ও মা পারভীন বেগমকে (৩৫) নিহত হয়েছেন। কিন্তু পাভেল এখনো তার বাবা-মায়ের মৃত্যুর খবর জানেন না। হাসপাতালে অচেতন অবস্থায় রয়েছেন তিনি।
শুক্রবার (২৬ মার্চ) দুপুরে রাজশাহীর কাটাখালির কাপাসিয়া এলাকায় কাটাখালি থানার সামনে যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে সংঘর্ষে মাইক্রোবাসে আগুন ধরে যায়। ওই মাইক্রোবাসে যাত্রী ছিল ১৮ জন। তাদের মধ্যে আগুনে ভস্মীভূত হয়ে মারা যান ১৭ যাত্রী। তারা সবাই রংপুর থেকে রাজশাহীতে বেড়াতে যাচ্ছিলেন। সেখান থেকে একমাত্র বেঁচে গেছেন পাভেল। ওই মাইক্রোবাসে পাভেলের বাবা মোখলেসুর রহমান (৪০) আর মা পারভীন বেগমও (৩৫) ছিলেন। তাদের মরদেহ রংপুরে দাফন করা হয়েছে।
রামেক হাসপাতালের আইসিইউতে বর্তমানে পাভেলের দেখভাল করছেন তার মামি, চাচাতো ভাইসহ পরিবারের ৪ সদস্য। মাঝে মাঝে স্বজনেরা পাভেলের পাশে গিয়ে নাম ধরে ডাকছেন। পাভেল সামান্য হাত ও পা নাড়ানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু চোখ খুলতে পারছেন না।
হাসপাতালে পাভেলের চাচাতো ভাই মো. সাগর বলেন, পাভেলের জীবনে যে কী ঘটে গেছে তা সে এখনও জানে না। মা নাই, বাবা নাই- এসবও জানে না। চিকিৎসক আমাদের তার কাছে বার বার যেতে বলেছেন। পরিচিতদের তার সঙ্গে কথা বলতে বলেছেন। আমরা তার সঙ্গে কথা বলা চেষ্টা করছি। কিন্তু পাভেল কথা বলতে পারছেন না।
হাসপাতালটির আইসিইউ ইনচার্জ ডা. আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, জ্ঞান না ফিরলেও তার শারীরিক অবস্থা ভালো। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই তাকে সাধারণ ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হবে। তবে জ্ঞান ফেরার পর বাবা-মায়ের মৃত্যুর সংবাদ জেনে তিনি মানসিক ট্রমার মধ্যে পড়তে পারেন। তখনও তিনি একটি ধাক্কা খাবেন। ধীরে ধীরে তাকে সব জানাতে হবে।
এদিকে, মর্মান্তিক এ সড়ক দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে গঠিত তদন্ত কমিটির কাজ প্রায় শেষের দিকে বলে জানিয়েছেন কমিটির আহ্বায়ক রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু আসলাম। তিনি বলেন, তদন্ত প্রায় শেষের দিকে। দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে আমরা প্রায় নিশ্চিত হয়েছি। দ্রুতই তদন্ত প্রতিবেদন জেলা প্রশাসককে দেওয়া হবে বলে জানান এই তদন্ত কর্মকর্তা।
এনএফ৭১/এনজেএ/২০২১
বিষয়: রাজশাহী কাটাখালি সড়ক দুর্ঘটনা
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।