সৈয়দপুরে শাহজাদার সুন্দর ভাবনা
নীলফামারী থেকে | প্রকাশিত: ৬ এপ্রিল ২০২১, ০৫:৩৭
নীলফামারীর সৈয়দপুরের এক নরসুন্দর গড়েছেন অনন্য এক কৃর্তি। সেলুনের ভিতরে কষ্টার্জিত টাকা জমিয়ে থরে থরে সাজিয়েছেন বিখ্যাত মনীষীদের বই। যা এলাকাবাসীর মন কেড়েছে।
শহরের তুলসীরাম সড়কের পাশে অবস্থিত বিসমিল্লাহ সেলুন। বাইরে থেকে দেখে এ সেলুনকে অন্যসব সেলুনের মতোই মনে হবে। কিন্তু ভিতরে গেলেই বদলে যাবে দৃশ্যপট। মনে হবে যেনো সেলুনের মাঝেই একটুকরো পাঠাগার। ব্যতিক্রমী এ সেলুনটি গড়ে তুলে সাড়া ফেলেছেন শাহজাদা ইসলাম (৩০) নামে একজন নরসুন্দর। আর তাকে এই কাজে সহযোগিতা করেছে সৈয়দপুরের সেতুবন্ধন পাঠাগার। শাহজাদার সেলুনের দোকানে দেখা মিলবে একটি রেক। এ রেকে তাক করে সাজানো রয়েছে বেশকিছু বই। এখানে আছে ইতিহাস, সাহিত্য গবেষণা, ধর্মীয় ও মনীষীদের জীবনীর উপরে বিভিন্ন বই।
দেখা যায়, দোকানে একজন গ্রাহক চুল কাটাচ্ছেন। বাকিরা নির্বিগ্নে বই পড়ছেন। জ্ঞান আহরণের মধ্য দিয়ে অপেক্ষমাণ সময়টা কাটাচ্ছেন। ২০২০ সালে এ সেলুনে মাত্র ২০ টি বই দিয়ে যাত্রা শুরু করে সেলুন পাঠাগার। ধীরেধীরে এই পাঠাগারের পরিধি বৃদ্ধি পেয়েছে। কিছু নিয়মিত পাঠকও তৈরি হয়েছে। তাইতো সৈয়দপুরের শিক্ষানুরাগীদের কাছে শাহজাদার এ সেলুন পাঠাগার যেমন প্রশংসা কুড়িয়েছে। তেমনি তার দোকানে গ্রাহকও বৃদ্ধি পাওয়ায় আয়ের পথও সুগম হয়েছে।
শুরু থেকেই ভিন্নধর্মী এ সেলুন পাঠাগারটি গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর কতৃক নিবন্ধিত সেতুবন্ধন পাঠাগারের তত্বাবধানে রয়েছে। সৈয়দপুরের খাতামধুপুর ইউনিয়নের খালিসা বেলপুকুরের সেতুবন্ধন পাঠাগারের সদস্যরাই মূলত এখানে বই প্রদান করেছে। পাশাপাশি সৈয়দপুরে আরো কিছু সেলুন পাঠাগার গড়ে তোলার প্রয়াস চালাচ্ছে। সেলুনে চুল কাটতে আসা আলমগীর সরকার জানান, 'সবসময় এখানেই চুল কাটি। এখানকার পরিবেশ অনেক ভালো। বই পড়ার জন্য সুন্দর একটি আবহ তৈরি করা হয়েছে। অন্য সেলুনগুলোতে যেখানে সিনেমা ও গান বাজিয়ে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করা হয়। সেখানে ভিন্নধর্মী এই উদ্দ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয় ও অনুকরণীয়।
সেলুনের স্বত্বাধিকারী শাহজাদা জানান, আমি এসএসসি পাশ করেছি। এরপর আর পড়াশোনা হয়নি। বই পড়তে আমার খুব ভালো লাগে। সময় পেলেই বিভিন্ন উপন্যাসের বই পড়ি। সেতুবন্ধন পাঠাগারকে অনেক ধন্যবাদ। আমার দোকানে এরকম একটি সেলুন পাঠাগার গড়ে তোলার উদ্দ্যোগ নেওয়ার জন্য। আমার দোকান যতদিন থাকবে এ পাঠাগারও ততদিন থাকবে।
এনএফ৭১/এনজেএ/২০২১
বিষয়: নীলফামারী
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।