লকডাউনে কর্মহীন পলাশবাড়ীর শ্রমজীবী দিনমজুররা
গাইবান্ধা থেকে | প্রকাশিত: ১০ এপ্রিল ২০২১, ২১:০২
মহামারি করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের এই সময় গাইবান্ধার প্রবেশদ্বার ব্যস্ততম পলাশবাড়ী পৌর শহরের আলো ঝলমল চির চেনা গুরুত্বপূর্ণ জিরো পয়েন্ট চৌমাথা মোড়টি যেন প্রাণ হারিয়ে ফেলেছে। দোকানপাট বন্ধ। পথচারিদের কোলাহল তেমন নেই। এ যেন অন্যরকম একটি চৌমাথা মোড়। যেন আলো-আঁধারির শহর। নীরব নিস্তব্ধ সুনসান পরিবেশ।
গণ পরিবহন চলাচল বন্ধ থাকলেও পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল রয়েছে অহরহ। দৈনন্দিনের তুলনায় কাজকর্ম অনেকটা কম। তাই অলস সময় কাটছে মালামাল লোড আনলোড কাজে নিয়োজিত স্থানীয় ডে-লেবারসহ শ্রমজীবী দিনমজুর মানুষরা। ২৫/৩০ জনের লেবার টীমটি দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে রাত-দিন এই মোড়টিতেই কাজ করেন। এখানেই তাদের জীবন-জীবিকা। কাজের শেষে যা পান তা দিয়েই চলে তাদের পরিবারের ভরন-পোষণ। এক সপ্তাহের করোনা লকডাউনের চলমান সময়ের পঞ্চম দিন অতিবাহিত হতে চলেছে। দিন-আনা দিন-খাওয়া এসব শ্রমজীবী মানুষেরা তাদের আয়-ব্যয়ের হিসাব মেলাতে পারছেনা।
লেবার সর্দার আমিনুল তার গ্রুপের সকল সদস্যদের এই দুঃখ-কষ্টে অনেকটাই চিন্তিত। বৃহস্পতিবার রাত প্রায় দু’টার সময় পর্যন্ত তাদের প্রত্যেকের ভাগে পঞ্চাশ টাকাও মেলেনি। আর মাত্র কয়েকঘন্টা পর রাত পোহালে সকাল ৮টার দিকে তারা নিজ নিজ বাড়ী ফিরবেন। লেবার সর্দার বলেন অন্যান্য দিন তারা একই সময় একেকজন অন্তত দেড়শ’ দু'শো টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরতেন। সকাল পর্যন্ত খুব বেশি হলে আরও পঞ্চাশ-ষাট টাকা ভাগে পেতে পারেন। সর্বসাকুল্যে ১শ’ টাকা আয় করে কিভাবে তাদের পরিবারের ব্যয় মেটাবেন, তা ভেবেই চোঁখে-মুখে হতাশার ছাপ।
রাত পোহালে চাল-ডাল ও কাঁচাবাজার ছাড়াও পারিবারিক প্রয়োজনসহ বিভিন্ন এনজিও থেকে নেয়া সাপ্তাহিক ঋণের কিস্তিই বা পরিশোধ করবেন কোন পন্থায়। আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের কোন মিল নেই। দিনের পর দিন ধারদেনায় যেন আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে পড়ছেন। চোখে যেন ওরা সরষে ফুল দেখছেন। প্রতিক্রিয়ায় এমনটিই জানালেন শ্রমজীবী খাজা মিয়া, শাহ আলম, রেজাউল, আব্দুর রউফ, আয়ুব আলী ও চেংটুসহ অন্যান্যরা। ওদের শেষকথা একটাই কি হবে চাল-ডালের, কি ই বা হবে রাত পোহালে তাদের কিস্তির!
এনএফ৭১/এনজেএ/২০২১
বিষয়: করোনা ভাইরাস
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।