মুকসুদপুরে দফায় দফায় সংঘর্ষ, আহত অর্ধশতাধিক
মুকসুদপুর, গোপালগঞ্জ থেকে | প্রকাশিত: ১৮ মে ২০২১, ২২:২৯
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে পবিত্র ঈদুল ফিতরের ফেতরার টাকা মসজিদ ও মাদ্রাসায় দেয়াকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহতের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় বাড়ি ঘর ভাংচুর ও লুটপাট হয়েছে। ঈদের পরদিন থেকে ৩ দিন পর্যন্ত দফায় দফায় সংঘর্ষে উপজেলার মোচনা ইউনিয়নের পাইকদিয়া গ্রামের বটতলা জামে মসজিদ ও পাইকদিয়া মাদ্রাসাতুল হুদায় ফেতরার টাকা দেয়াকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, এই গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে কয়েকটি গ্রুপের সৃষ্টি হয়েছে। মিজান মোল্যা গ্রুপ এবং সাইফুল শেখ গ্রুপের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতদের মুকসুদপুর হাসপাতাল ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে ।
এলাকাবাসী জানায়, কয়েকদিন ধরে পাইকদিয়া গ্রামে মসজিদ আর মাদ্রাসায় ফেতরার টাকা জমা দেয়াকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা চলে আসছিলো। এক পক্ষের দাবি ফেতরার টাকা মসজিদে দিতে হবে অন্য পক্ষের দাবি ফেতরার টাকা মাদ্রাসায় দিতে হবে। এই ঘটনার সূত্রপাত ধরে শনিবার (১৫ মে) সকালে উভয়পক্ষের মধ্যে সংর্ঘষের সৃষ্টি হয়। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছে। বাড়িঘর ভাংচুরসহ লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
মিজান মোল্যা গ্রুপের জামাল মোল্যা জানান, আমাদের লিডার মিজান মোল্যা প্রতিপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি মীমাংসার ব্যবস্থা করে আমাদেরকে সংঘর্ষ থেকে বিরত থাকতে বলেন। কিন্তু বিরোধী সাইফুল শেখ গ্রুপের সংঘবদ্ধ পরিকল্পিত হামলায় আমাদের মধ্যে প্রায় ৩০জন আহত হয়েছে।
তিনি বলেন, আহতদের মধ্যে ইসলাম মোল্যা, কাইয়ুম মোল্যা, রবিজান মোল্যা, গফ্ফার মোল্যা ও শিহাদুল মোল্যাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকীদের মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে, এদের মধ্যে প্রায় ২০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে। এছাড়াও প্রায় ১০ থেকে ১৫ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছ। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে। এই ঘটনায় আমাদের ২টি দালানঘর এবং ৩টি টিনশেডঘর ভাংচুর করেছে। লুটপাটের ঘটনাও ঘটেছে। এ ঘটনায় ১টি মটর সাইকেল ভাংচুর ও আরেকটি মটর সাইকেল লুট করাসহ আমাদের আনুমানিক ৩০ লাখ টাকার ক্ষতি করেছে।
এদিকে সাইফুল শেখ গ্রুপের রফিক শেখ জানান, আমাদের তিনটি ঘর ভাংচুর, ল্যাপটপ লুট, ঘরের আসবাবপত্র লুট, ভাংচুর, সহ আনুমানিক ৪ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি করেছে। আমাদের বাড়ির মহিলাদের উপরও হামলা করে তাদের আহত করেছে। আমাদের গ্রুপের আহতরা হলো আনোয়ার ফকির, আলমগীর ফকির, শরিফ শেখ, হায়াত ফকির, রহিম শেখ, হিরু শেখ, আকবার শেখ, নীল চাঁন, আলমাছ শেখ। এদের প্রত্যেককে মুকসুদপুর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি রাখা হয়েছে। এই ঘটনায় সরবা আলী মোল্যাকে প্রধান আসামী করে মোট ১৭ জনের নামে মুকসুদপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
মুকসুদপুর থানার ওসি আবু বকর মিয়া জানান, পাইকদিয়া গ্রামের বটতলা জামে মসজিদ ও পাইকদিয়া মাদ্রাসাতুল হুদায় পবিত্র ঈদুল ফিতরের ফেতরার টাকা দেয়াকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের সংঘর্ষে কয়েকজন আহতের ঘটনা ঘটেছে। পরে মুকসুদপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। মুকসুদপুর থানায় উভয়পক্ষের দুটি মামলা দায়ের হয়েছে। এলাকা পুরুষ শূন্য থাকায় কোনা আসামী গ্রেফতার হয়নি তবে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এনএফ৭১/এমএম/২০২১
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।