ফকিরহাটে তীব্র তাপদাহে ঘেরের পানি শুকিয়ে মরছে মাছ, বিপর্যস্ত চাষীরা

বাগেরহাট থেকে | প্রকাশিত: ২৩ মে ২০২১, ২১:৪৯

ফকিরহাটে তীব্র তাপদাহে ঘেরের পানি শুকিয়ে মরছে মাছ, বিপর্যস্ত চাষীরা

বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলা জুড়ে রয়েছে ৮ হাজার ১০৩টি মাছের ঘের। উপজেলার মানুষের প্রধান আয়ের উৎস এ মাছ চাষ। কিন্তু মৌসুমী বৃষ্টি না হওয়া ও কয়েকদিনের টানা তীব্র তাপদাহে অধিকাংশ ঘেরের পানি শুকিয়ে গেছে। যা সামান্য পানি আছে তাও খরতাপে অত্যাধিক গরম হয়ে ও অক্সিজেন সংকটের ফলে মাছ মরে যাচ্ছে। অপরদিকে গলদা পোনা সঙ্কট মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। এ অবস্থায় ফকিরহাটের মৎস্য চাষীরা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছেন। ফলে মাছ উৎপাদনে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

ফকিরহাট উপজেলা মৎস্য অফিসের তথ্য মতে, এ উপজেলায় ৩ হাজার ৬৮৮ হেক্টর জমিতে ছোট বড় মিলিয়ে ৮ হাজার ১০৩টি ঘের রয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে মাছ উৎপাদন হয়েছে ৫ হাজার ৯৬১ মেট্রিক টন। তবে বর্তমানে বৈরী আবহাওয়ার জন্য মাছ উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

উপজেলার বেতাগা, পিলজঙ্গ, মানসা-বাহিরদিয়া, মুলঘর, নলধা-মৌভোগ, শুভদিয়া, লকপুর ও সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন মাছ চাষিদের ঘেরের পানির সংকটে মোটর দিয়ে অনেক দূর থেকে পাইপের সাহায্যে ঘেরে পানি দিতে দেখা গেছে। এতে খরচ যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে তেমনি প্রাকৃতিক বৃষ্টির অভাব পুরণ হচ্ছে না। এ পানিতে বেশি দামে মাছের পোনা কিনে ছাড়লেও তা মরে যাচ্ছে।

এ এলাকার মাছ চাষি রবিউল তালুকদার, হোসেন শেখ, পরিমল বিশ্বাস, রবিন ঘোষসহ অনেকের সাথে কথা বলে জানা যায়, অনাবৃষ্টি ও তীব্র গরমে ঘের ও পুকুরের পানি বাষ্পীভূত হয়ে শুকিয়ে গিয়েছে। ফলে পানিতে লবনাক্ততা বৃদ্ধি ও অক্সিজেন সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে অসংখ্য মাছ ও মাছের পোনা মরে যাচ্ছে। অন্যদিকে, পোনার দাম বৃদ্ধি ও সরবরাহ স্বল্পতার কারণে তৈরী হয়েছে উভয় সংকট। আর্থিক ক্ষতিতে বিপর্যস্ত মাছ চাষিরা। তাদের দাবি, প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল সরকারী প্রনোদনা।

ফকিরহাট উপজেলা মৎস কর্মকর্তা মো. ফেরদৌস আনসারী বলেন, ‘খরতাপ ও বিরূপ আবহাওয়ার কারণের এবার মাছ চাষে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে আমরা ইতোমধ্যে উপজেলার ৪ হাজার ৩২ জন চাষিকে ১২ থেকে ১৮ হাজার টাকা পর্যন্ত প্রায় তিন কোটি প্রনোদনার অর্থ প্রদান করেছি। লকডাউন উঠে গেলে এবং টানা কয়েকদিন বৃষ্টি হলে অবস্থার উন্নতি হবে আশা করি।’

এনএফ৭১/আরএইচ/২০২১




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top