সৈয়দপুরে পুলিশের বুদ্ধিমত্তায় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেলো ট্রেন

নীলফামারী থেকে | প্রকাশিত: ২৯ মে ২০২১, ০৭:৩৬

সৈয়দপুরে পুলিশের বুদ্ধিমত্তায় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেলো ট্রেন

ঘড়ির কাঁটায় রাত ১টা। সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে চিলাহাটির উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে ‘রকেট মেইল’ ট্রেন। শহরের বাইপাস সড়কের রেলগেইট (ই-১২৬-এ) তখনও খোলা। ওই সড়কে চলাচল করছে দূরপাল্লার বাস, ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন।

ট্রেনের আলো দেখে বিষয়টি নজরে আসে সড়কে দায়িত্বরত গোলাহাট পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ সদস্য নূর আল আমিন, শাহজাহান আলী ও বিনয় ভূষণ বর্ম্মনের। তাঁরা কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই রেলক্রসিংয়ের দু’পাশে দাঁড়িয়ে টর্চ লাইটের আলো দিয়ে মহাসড়কে চলাচলকারী যানবাহন থামিয়ে দেয়। দ্রুতগতিতে পার হয়ে যায় ট্রেনটি। এ ঘটনা ২৬ মে রাতের।

পুলিশ সদস্যের এমন উপস্থিত বুদ্ধিতে বড় ধরনের একটি ট্রেন দুর্ঘটনা রক্ষা পায়। পরে পুলিশ সদস্যরা বিষয়টি ফাঁড়ি ইনচার্জ এস আই নরুজ্জামান বেগকে জানানো হলে তিনিও ছুটে যান ঘটনাস্থলে।

তিনি জানান, ওই সময় দায়িত্বরত রেলগেটের গেইটম্যান আনিছুর রহমান রুমের মধ্যে ছিলেন। তাকে পুলিশ সদস্যরা ডাকাডাকি করে কোন জবাব না পেয়ে দ্রুত সড়কের যানবাহন আটকে দেয়। পরে ওই গেইটম্যান ব্যারিয়ার গুলো অকেজো রয়েছে বলে জানায়। তিনি এ ঘটনায় ২৭ মে নীলফামারী পুলিশ সুপার বরাবরে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।

গেইটম্যান আনিছুর রহমান বলেন, এ রেলগেইটে কোন টেলিফোনের ব্যবস্থা নেই। দিনে ট্রেন ও রাতে ট্রেনের আলো দেখে ব্যারিয়ার উঠানামা করতে হয়। ঘটনার রাতে আমি দায়িত্বে ছিলাম এবং ট্রেন আসার মুহূর্তে একপাশের ব্যারিয়ার ফেলতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়ি। ওই অকেজো ব্যারিয়ার ফেলার পর একটি লাঠি বা রড দিয়ে আটকিয়ে অপর পাশে যেতে হয় কিন্তু সেসময় তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে আমি ওই লাঠি বা রড সাথে নিতে ভুলে গিয়েছিলাম। এ সময় ট্রেনটি রেলগেইট ক্রসিং করে চলে যায়।

এ বিষয়ে কথা হয় বাংলাদেশ রেলওয়ের সৈয়দপুর শাখার ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পিডাব্লিউআই) সুলতান মৃধার সাথে। তিনি জানান, শহরের বাইপাস মহাসড়কের রেলগেইটের ব্যারিয়ারগুলো অকেজো। এই রেলপথে যেসব ব্যারিয়ার এমন অবস্থায় রয়েছে তা মেরামতের জন্য কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। ঘটনাটি ওই গেইটম্যানের কাছ থেকে শুনেছি এবং বিকেলে রেলগেইট পরিদর্শনে করেছি। দায়িত্বে অবহেলা থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সৈয়দপুর সার্কেল) সারোয়ার আলম বলেন, পুলিশ সদস্যরা তাৎক্ষনিক যে বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছে তা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। তাদের এমন দায়িত্ববোধের কারণে শুধু পুলিশ সদস্যরাই নয়, অন্যান্য পেশাজীবি ও সাধারণ মানুষ এমন মানবিক কাজে উৎসাহিত পাবে।

এনএফ৭১/এনজেএ/২০২১




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top