আধুনিক যুগেও টিকে আছে মান্দার ত্রীমহনী কুমাররপাড়ার মৃৎশিল্প
নওগাঁ থেকে | প্রকাশিত: ৩০ মে ২০২১, ২৩:৫৩
প্রাচীনকাল থেকে দেশের প্রত্যন্ত শহুরে মানুষের নিত্য দিনের সাংসারিক কাজে ব্যবহার হতো মাটির তৈরি পণ্য। আধুনিকতার ছোঁয়ায় ধীরে ধীরে হারাতে বসেছে মাটির তৈরি পণ্যের ব্যবহার। মাটির তৈরি জিনিসপত্র ব্যাবহারের চাইতে আধুনিক জিনিসপত্রের ব্যাবহার সহজলভ্য হওয়ায় মাটির তৈরি পণ্যের ব্যবহার ভুলে মানুষ প্লাস্টিক ও মেলামাইনসহ বিভিন্ন ধাতব দ্বারা তৈরি পণ্য ব্যাবহারে ঝুঁকে পরেছেন।
তবে আধুনিক যুগে থেকেও কিছু সংখ্যক মানুষ এখনো মাটির তৈরি জিনিসপত্রের ব্যবহার ভুলে যাননি। এখনো গ্রামাঞ্চলের বৃদ্ধ মানুষরা মাটির তৈরি জিনিস ব্যবহার করতে পছন্দ করেন। মাটির তৈরি জিনিসের তেমন কদর না থাকলেও মৃৎশিল্পের ঐতিহ্য ও বংশ পরম্পরা ধরে রেখেছেন মান্দা উপজেলার শতাধিক পরিবার।
এর মধ্যে উপজেলার নুরুল্যাবাদ ইউনিয়নের ত্রীমহনী গ্রামের ৫০ থেকে ৬০ টি পরিবার উল্লেখযোগ্য। এ দুই গ্রামের মৃৎ শিল্পীদের স্থানীয় ভাষায় বল হয় কুমার। আর এ কুমাররা হিন্দু ধর্মাবলম্বি পাল বংশের লোক। তাদের পূর্ব পুরুষদের পেশা মাটি দিয়ে কলস, টালি, মটকা, হাঁড়ি, পাতিল, বদনাসহ নানা তৈজসপত্র তৈরি করা। কুমার বা পালরা বংশ পরম্পরায় এ কাজ করে আসছেন।
এ দুই গ্রামের মৃৎশিল্পীরা তাদের পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া মাটির কাজ করে এখনো টিকে থাকার চেষ্টা করছেন। কিন্তু মাটির তৈরি পণ্যের ক্রেতা এবং ন্যায্য মূল্যায়ন না থাকায় ধীরে ধীরে মৃৎশিল্পীরা এ পেশা থেকে অন্য পেশায় ঝুঁকতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে অনেকে ছেড়েও দিয়েছেন এ পেশা। এতে করে হারাতে শুরু করেছে প্রাচীন সভ্যতা।
মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে কুমারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মৃত শিল্পীরা ৩-৪ বছর পূর্বে মাটি দিয়ে ১০-১৫ ধরনের পণ্য তৈরি করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করতেন। এছাড়া সেসব পণ্য পাইকারী হিসেবেও অনেক পাইকাররা বাড়ীতে এসে কিনে নিয়ে বাজারে খুচরা দামে বিক্রি করতেন।
তবে বর্তমানে শুধু দইয়ের পাতিল বানাচ্ছেন তারা। করোনার লকডাউন চলাকালীন সময় চাহিদা অনুযায়ী যেসব পাতিল বানানো হয়েছে সেগুলোর বেশীর ভাগই বিক্রি করতে না পেরে লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের।
এনএফ৭১/এনজেএ/২০২১
বিষয়: নওগাঁ মৃৎশিল্পী মাটির তৈরি পণ্য
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।