পরীমনির রিমান্ড বিষয়ে হাইকোর্টের প্রশ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২৩:৫৪
চিত্রনায়িকা পরীমনির রিমান্ড বিষয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন রেখেছেন হাইকোর্ট। এ-সংক্রান্ত শুনানিতে হাইকোর্ট বলেছেন, ‘রিমান্ডের উপাদান ছাড়া তদন্ত কর্মকর্তা প্রার্থনা দিল, আপনি (ম্যাজিস্ট্রেট) মঞ্জুর করে দিলেন। এগুলো কোনো সভ্য সমাজে হতে পারে না। রিমান্ড অতি ব্যতিক্রমী বিষয়।’
বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) এসব কথা বলেন।
শুনানি নিয়ে ২৬ আগস্ট হাইকোর্টের একই বেঞ্চ রুল দেন। রুলে জামিন আবেদন শুনানির জন্য ১৩ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করে মহানগর দায়রা জজ আদালতের দেওয়া আদেশ কেন বাতিল ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। জামিন আবেদনের শুনানি দ্রুত (আর্লি হিয়ারিং) তথা দুই দিনের মধ্যে করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয় রুলে। সেই সঙ্গে ১ সেপ্টেম্বর রুল শুনানির তারিখ রাখা হয়।
এর ধারাবাহিকতায় এদিন বিষয়টি শুনানির জন্য ওঠে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় পরীমনিকে তিন দফায় সাত দিন রিমান্ডে নেওয়ার প্রেক্ষাপটে স্বতঃপ্রণোদিত রুল চেয়ে ২৯ আগস্ট একই বেঞ্চে একটি আবেদন দাখিল করে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। এ শুনানিতে পরীমনির রিমান্ডের বিষয়টি ওঠে।
এ সময় আদালত রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্য শুনতে চান। তখন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবু ইয়াহিয়া দুলাল বলেন, ‘তিনবার রিমান্ডে নেওয়ার যৌক্তিকতা দেখি না।’
সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘আবেদনে জামিন সংক্রান্ত অংশটুকু অকার্যকর হয়ে গেছে। তাঁকে রিমান্ড নেওয়া নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। অভিযুক্ত আবেদনকারীকে (পরীমনি) তিনবার রিমান্ডে নেওয়া হয়। ইতিমধ্যে রিমান্ড শেষ হয়ে গেছে।’
একপর্যায়ে আদালত বলেন, ‘রিমান্ডে নাই, তবে রিমান্ডে নেওয়ার কি উপাদান ছিল, এর জবাব দেখতে চাই। আপনি ক্ষমতার অপব্যবহার করলেন, কেন করলেন?’
ওই মামলায় প্রথম দফায় চার দিন রিমান্ডের পর দ্বিতীয় দফায় রিমান্ডের প্রয়োজন ছিল কি না, তদন্ত কর্মকর্তাকে সিডিসহ উপস্থিত হতে এবং দুজন ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে কি উপাদান ছিল, সে বিষয়ে জানাতে বলা হবে বলে মত প্রকাশ করেন আদালত।
উল্লেখ্য, গত ৪ আগস্ট বনানীতে পরীমনির বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক কর র্যাব। পরে বনানী থানায় পরীমনির নামে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে র্যাব। এই মামলায় গ্রেপ্তার পরীমনিকে তিন দফায় মোট সাত দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েস পরীমনির জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন। গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পরদিন সকালে তিনি জামিনে মুক্তি পান।
এনএফ৭১/২০২১
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।