গণমাধ্যমকে স্বাধীন, শক্তিশালী ও বস্তুনিষ্ঠ করার আওয়াজ বহুদিনের। সাংবাদিকদের আর্থিক নিরাপত্তা নিয়েও লড়াই কম হচ্ছে না। দীর্ঘদিন রাজপথে সক্রিয় থেকে জুলুমের শিকার হয়েছেন সংবাদকর্মীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার আশা জাগানিয়া নতুন চমক। নবম গ্রেডে বেতন দেওয়ার প্রস্তাব এলো।
শনিবার (২২ মার্চ ) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের কাছে সংস্কার প্রতিবেদন হস্তান্তর করা হয়। পরে যমুনার সামনে সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন কমিশনপ্রধান কামাল আহমেদ।
সুপারিশে বলা হয়, সাংবাদিকতা পেশায় বেতন-ভাতা কমছে বা অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে সাংবাদিকদের জীবন। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের প্রবণতাও বাড়ছে। বাদ পড়ছে তাদের পাওনা বিভিন্ন ভাতা। একইসঙ্গে অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে চাকরির স্থায়িত্ব।
অথচ জীবন-জীবিকার নিশ্চয়তা ছাড়া সাংবাদিকতায় টিকে থাকা যায় না। আপসকামিতা ও দুর্নীতির ঝুঁকি বাড়ে। যা বস্তুনিষ্ঠ ও স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থি। এ ধরনের অনিশ্চয়তা নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। রাজনৈতিক ও স্বার্থবাদী গোষ্ঠীর প্রতি তোষণবাদী হতে উৎসাহিত বা বাধ্য করে।
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান বলেন, ন্যূনতম নবম গ্রেড অনুযায়ী একজন সাংবাদিকের বেতন হতে হবে। পাশাপাশি রাজধানীতে কর্মরত সাংবাদিকদের ঢাকা ভাতা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
কামাল আহমেদ বলেন, বিসিএস ক্যাডারদের এন্ট্রি নবম গ্রেডের যে বেতন, সাংবাদিকতা শুরুর বেতন তার সঙ্গে মিল রেখে যেন করা হয় প্রতিবেদনে সেই সুপারিশ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সাংবাদিকতা করতে হলে ন্যূনতম স্নাতক পাসের যোগ্যতা থাকতে হবে। প্রথমে শিক্ষানবিশ সাংবাদিক হিসেবে কাজ করতে হবে। শিক্ষানবিশ হিসেবে এক বছর কাজ করতে হবে। এরপর প্রমোশন পাবে।
জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুযায়ী নবম গ্রেডের কর্মকর্তাদের মূল বেতন শুরু হয় ২২ হাজার টাকা দিয়ে। এর সঙ্গে বাড়িভাড়াসহ অন্যান্য ভাতা যোগ হয়। সব মিলিয়ে এই বেতন হয় ৩৫ হাজারের বেশি।
একটি প্রতিষ্ঠান একটিমাত্র গণমাধ্যমের মালিক হতে পারবেন এমন প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান। এটাকে বলা হচ্ছে- ওয়ান হাউস ওয়ান মিডিয়ার প্রস্তাবনা। এর বাইরে অনলাইন পোর্টালের জন্য ৭ দফা সুপারিশ করেছে কমিশন।
এর আগে, গেল বৃহস্পতিবার প্রেসক্লাবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, যেসব গণমাধ্যম সাংবাদিকদের সম্মানজনক বেতন, ভাতা দেবে না সেসব গণমাধ্যম আর দরকার নেই। শফিকুল আলম বলেন, একজন রিপোর্টার বা সাব–এডিটরকে ৩০, ৪০ বা ৫০ হাজার টাকা বেতন দিতে না পারলে ওই সব গণমাধ্যম বন্ধ করে দিতে হবে।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।