প্রতিশোধ নেওয়ার পাশাপাশি এবারের চ্যাম্পিয়ন জীবন বলী
নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ২৬ এপ্রিল ২০২২, ০৭:০৫
ঔপনিবেশিক শাসনামলে ইংরেজ শাসকদের বিরুদ্ধে যুবসমাজকে ঐক্যবদ্ধ করতে চট্টগ্রামের ধনাঢ্য ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার ১৯০৯ সালে (১৩১৬ বঙ্গাব্দের ১২ বৈশাখ) এ বলীখেলার সূচনা করেন। তার মৃত্যুর পর এ প্রতিযোগিতা জব্বারের বলীখেলা নামে পরিচিতি পায়।
এবার বলীখেলার ১১১তম আসর বসেছে। বলীখেলা ঘিরে প্রতি বছর লালদিঘী মাঠের আশপাশে দু-তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বৈশাখী মেলার আয়োজন হয়। এটি চট্টগ্রাম অঞ্চলের সবচেয়ে বড় বৈশাখী মেলা হিসেবে পরিচিত।
চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে ঐতিহ্যবাহী আবদুল জব্বারের বলীখেলা প্রতিযোগিতার সবশেষ আসরে ফাইনালে শাহজাহান বলীর কাছে হেরে স্বপ্ন ভেঙেছিল জীবন বলীর। এবার শাহজানকে হারিয়ে প্রতিশোধ নেওয়ার পাশাপাশি এবারের আসরে চ্যাম্পিয়ন হওয়ারও গৌরব অর্জন করলেন জীবন বলী।
সোমবার (২৫ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে চারটায় লালদীঘির মূল সড়কে স্থাপিত অস্থায়ী মঞ্চে কুমিল্লার শাহজাহান বলীকে হারিয়ে পূর্ণ ৩ পয়েন্ট নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হন জীবন বলী।
এর আগে বিকেল সোয়া ৩টার দিকে শুরু হয় শতবর্ষী এ বলীখেলা। প্রতিযোগিতার চার পর্বে (প্রথম রাউন্ড, কোয়ার্টার ফাইনাল (চ্যালেঞ্জিং বাউট), সেমিফাইনাল ও ফাইনাল) মোট ৭২ জন বলী অংশ নেন।
চূড়ান্ত পর্বে শাহজাহান বলী ও জীবন বলীর মধ্যে সমানে সমান প্রতিযোগিতা হয়। দর্শকরা দুই ভাগে ভাগ হয়ে জীবন বলী ও শাহজাহান বলীর পক্ষে স্লোগান দিতে থাকেন। কেউ কারও কাছে হার মানতে নারাজ, ফাইনালের এমন টানটান উত্তেজনাপূর্ণ মুহূর্তে খেলায় দুই দফায় ২ মিনিট করে এবং তৃতীয় দফায় ৩ মিনিট সময় বাড়িয়ে দেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এস এম রেজাউল করিম।
শেষ তিন মিনিটের দুই মিনিট পার হতেই জীবন বলীর কাছে পরাস্ত হন শাহজাহান বলী। এ সময় শাহজাহান বলী মঞ্চে ধরাশায়ী হলে রেফারি জীবন বলীকে হাত উঁচিয়ে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করেন। ১১০তম আসরে শাহজাহান বলীর কাছেই হেরে রানারআপ হয়েছিলেন জীবন বলী।
চ্যাম্পিয়ন জীবন বলী মঞ্চেই নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, গতবার হেরে গিয়েছিলাম। এবার জয়ী হতে পেরে খুশি লাগছে। আমার ডাক নাম জীবন হলেও মূল নাম তারিকুল ইসলাম তারেক। আমার বাবা আমাকে আদর করে জীবন ডাকতেন। সেই থেকে লোকমুখে আমার নাম জীবন।
তিনি বলেন, জব্বারের বলী খেলায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন ছিল। গতবার স্বপ্নের কাছাকাছি গিয়েও জিততে পারিনি। এবার পেরেছি। চ্যাম্পিয়ন হতে পেরে গর্ববোধ করছি।
এনএফ৭১/আরআর/২০২২
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।